কলকাতা : সুন্দরবন সফরে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার টাকি থেকে তিনি লঞ্চে করে যান একাধিক গ্রামে। বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দাদের সাথে কথা বলেন। এরকমই একটা গ্রামে গিয়ে তিনি ভাত খেয়েছিলেন৷ সঙ্গে ছিল আরও কিছু পদ। মুখ্যমন্ত্রীর জনসংযোগের সেই ছবি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি স্টিকার বানিয়ে পোস্ট করা হয়েছে। নীল রঙের প্রেক্ষাপটে সেই পোস্টের উপরে লেখা, " ভাঙা চেয়ারে বসে মমতার-মধ্যাহ্নভোজ। রেশনের চালের ভাত, ওল আর ট্যাংরা মাছ-দেহাতিদের সঙ্গে জমিয়ে খেলেন মমতা।"
এরই সঙ্গে ডানদিকে জোড়াফুলের প্রতীক দেওয়া রয়েছে। তার নীচে লেখা " তৃণমূল, আমার, আপনার, বাংলার।" আর এই স্টিকার সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট হতেই তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ জানিয়েছেন, " এই স্টিকার তৈরি ও প্রকাশ কোনওটাই তৃণমূল কংগ্রেস করেনি। যে ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে তা দল অনুমোদন দেয় না। যে ছবি ও ক্যাপশন দেওয়া হয়েছে তাও দল অনুমোদন করে না। আমরা মনে করি এটা আসলে পরিকল্পনা করে নঞর্থক প্রচারের উদ্দেশ্য পরিকল্পনা করে করা হয়েছে।" যদিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গ্রামের বাড়িতে বসে এই খাওয়ার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরছে। আর এই পোস্টার বা স্টিকারও প্রকাশিত হয়েছে। দলের তরফে গোটা বিষয়ে ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন : এবার মিলেনিয়াম পার্কেও গঙ্গা আরতি? ফিরহাদের পরিদর্শনে বাড়ল জল্পনা
কিন্তু কে বা কারা দলের অনুমোদন ছাড়া এমন স্টিকার বানাল, তা নিয়ে খোঁজ শুরু হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য নিজেই তাঁর ফেসবুক পেজে গোটা ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন," "মোর নাম এই বলে খ্যাত হোক,আমি তোমাদেরই লোক। গ্রাম বাংলার সাথে আমার নাড়ির বন্ধন অচ্ছেদ্য গ্রন্থিতে আবদ্ধ। আজ উত্তর ২৪ পরগনা সফরে সেই বন্ধন আরও সুদৃঢ় হল। বাংলার মানুষ পরিচিত অতিথি-বৎসল হিসাবে, আজ এই জেলার খাঁপুকুরে আবারও সেই অভিজ্ঞতা হল। এক স্থানীয় বাসিন্দাকে আমি জিজ্ঞাসা করি, "আপনারা কী খাচ্ছেন?" তাঁরা জবাব দেন, "ভাত, ট্যাংরা মাছের ঝাল আর আলু ওলের তরকারি।" আমিও মহানন্দে তাঁদের সাথে বসে পড়ি মধ্যাহ্নভোজে। তাঁরা আমাকে চামচ এগিয়ে দেন ভাত খেতে, আমি বলি, "আমি তো চামচে খাই না, আপনাদের মতোন হাত দিয়েই খাই।" সেইসময় সবার আন্তরিকতা ও ভালোবাসা দেখে আমার মনে হয় আমি তাঁদের পরিবারেরই একজন। গ্রামের বাড়ির দাওয়ায় বসে প্রাণের আলাপচারিতার সাথে এই খাবারের স্বাদ যেন অমৃতসম। পাশাপাশি তাঁদের সাথে হাত লাগলাম ঝাঁটা বোনায়। তাঁদের শিল্পসত্তা দেখে আমি মুগ্ধ।"
আরও পড়ুন : দলে সকলের প্রিয়, দায়িত্ব পালনে চির সফল, মানব মুখোপাধ্যায়ের শেষযাত্রা শেষ হল মেডিক্যাল কলেজে
তিনি আরও সংযোজন করেন " আজ এখানকার স্কুল ও কলেজ পড়ুয়াদের সঙ্গেও অন্তরঙ্গ বার্তালাপ হয়, সবার মধ্যে বিতরণ করা হয় শীতবস্ত্র। টাকি গভর্নমেন্ট কলেজের নতুন বিল্ডিং-এর জন্য এক কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। নতুন প্রজন্ম-ই বাংলার আলোর দিশারী - আমি দৃঢ়প্রত্যয়ী তাঁদের অধ্যবসায়, প্রতিভা ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টা বাংলা'কে নিয়ে যাবে এক অনন্য উচ্চতায়। বাংলা আমাদের গর্ব, রাজ্যবাসী আমার প্রাণের দোসর। প্রশাসনিক ব্যস্ততার ফাঁকে এইসব দিনযাপন-ই আমার চরৈবেতি মন্ত্র। মানুষের ভালোবাসাই রাজ্যের উন্নয়নে আমৃত্যু অক্লান্ত পরিশ্রম করে যেতে আমায় প্রেরণা জোগাবে।"
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Mamata Banerjee, Sundarban