#কলকাতা: অপরাধের ধরণ ক্রমশ বদলাচ্ছে। ইন্টারনেট নির্ভর ই-জীবনযাপনে ক্রমশ জাল বিস্তার করছে সাইবার অপরাধ। ফলে অপরাধীদের যত দ্রুত আইনের জালে আনা যায়, তা নিয়েও তৎপর কলকাতা পুলিশ।
জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে শহরের এক ব্যবসায়ীর অ্যাকাউন্ট থেকে উধাও হয়ে যায় ৭ লক্ষ টাকা। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তা ফেরাতে সক্ষম হয় কলকাতা পুলিশের সেন্ট্রাল ডিভিশনের সাইবার সেল। ঠাকুরপুকুরের এক শিক্ষকের ৯৪ হাজার টাকাও ফেরাতে সক্ষম হয়েছে কলকাতা পুলিশের সাউথ ওয়েস্ট ডিভিশনের সাইবার সেল। এমনই তৎপরতা চাইছেন লালবাজারের কর্তারা। তাই শুধু ডিভিশন সাইবার সেল নয়, প্রতিটি থানাতে কয়েকজন অফিসারকে নিয়ে সাইবার সেল তৈরি করে সাইবার অপরাধ দমনে আরও তৎপর হতে চাইছে পুলিশ।
প্রথম পর্যায়ে প্রতিটি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ও অতিরিক্ত অফিসার ইনচার্জদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে, জানিয়েছেন ডিসি সাইবার বিদিশা কলিতা। কলকাতা পুলিশের হেড কোয়ার্টারের অন্দরেই চলছে ক্লাস। যেখানে সাইবার অপরাধ ও ব্যাঙ্ক জালিয়াতি সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে ওসি-অ্যাডিশনাল ওসিদের।
আরও পড়ুন: কনকনে ঠান্ডার মধ্যেই ফের দুর্যোগ! সরস্বতী পুজোয় রাজ্যের 'এই' জেলায়গুলিতে তুমুল বৃষ্টি
প্রসঙ্গত, বিগত কয়েক বছর ধরেই এটিএম জালিয়াতির অভিযোগ বেড়েছে শহর কলকাতায়। আকছাড় ঘটছে এটিএমে ক্লোন চিপ বসিয়ে হ্যাক করে টাকা তুলে নেওয়ার ঘটনা। আবার কখনও গ্রাহকদের ফোন করে তথ্য হাতিয়ে নিয়ে টাকা তুলে নেওয়া বা অনলাইনে কেনাকাটার মতও অভিযোগ জমা পড়েছে শহরের কোনও না কোনও থানায়। এই সব অভিযোগের তদন্তভার পড়ে গোয়েন্দা বিভাগের ওপরে। তদন্তে জামতাড়া গ্যাঙের যেমন তথ্য সামনে এসেছে, একই সঙ্গে বিভিন্ন নাইজেরিয়ান গ্রুপের কথাও এখন সকলের জানা। ফলে এই ধরনের অপরাধ রুখতে প্রথমেই কী পদক্ষেপ করতে হবে, তা নিয়ে দেওয়া হচ্ছে প্রশিক্ষণ। মূলত শেখানো হচ্ছে, গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে কোনও চক্রীর ওয়ালেটে টাকা গেলে প্রথম পর্বেই অপরাধ আটকে দেওয়া। যাতে চক্রী ওয়ালেটের টাকা ব্যবহার করতে না পারে।
আরও পড়ুন: দেশের প্রথম ওমিক্রন আক্রান্ত সন্দেহে ব্যক্তির ময়না তদন্ত আরজি কর হাসপাতালে, গড়বে ইতিহাস...
বিশেষজ্ঞদের মতে, ওয়ালেটে টাকা ট্রান্সফারের পর কয়েক ঘণ্টা সেই টাকা ওয়ালেটে থাকে, তাই অভিযোগ পাওয়া মাত্রই সেই ওয়ালেট চিহ্নিত করে ব্লক করে দেওয়ার কৌশল শেখানো হচ্ছে প্রশিক্ষণে। শুধু এই ধরনের অপরাধ নয়। সাইবার অপরাধে সম্প্রতি হানিট্র্যাপের মতো ঘটনাও ঘটছে। যেখানে রাজস্থানের ভরতপুর গ্যাঙের তথ্য হাতে এসেছে। এই ধরনের অভিযোগ এলে, কী করণীয় তা নিয়েও থানার ইনস্পেক্টরদের নেওয়া হচ্ছে ক্লাস।
কলকাতা পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের নির্দেশ মেনেই এ হেন অপরাধ রুখতে সক্রিয় হয়েছেন লালবাজারের কর্তারা। ডিসি সাইবার জানিয়েছেন, যে হারে সাইবার অপরাধ বা ব্যাঙ্ক জালিয়াতির ঘটনা বাড়ছে, তাতে আগামী দিনে এই অপরাধ দমন করতে তৎপরতা শুরু হয়েছে। এই পর্বে ওসি-অ্যাডিশনাল ওসিদের ক্লাস হলেও পরবর্তী পর্বে থানা থেকে বাছাই করে পুলিশ কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণ পর্ব মিটলে থানাগুলিতেও তৈরি হবে ছোট ছোট সাইবার সেল।
Amit Sarkar
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Cyber Crime, Kolkata Police