Jadavpur University: রুম নম্বর ১০৪! যাবতীয় রহস্য লুকিয়ে এই একটা মাত্র ঘরে, সপ্তককে নিয়ে গোটাটাই ঘুরে দেখল পুলিশ
- Published by:Satabdi Adhikary
- news18 bangla
Last Updated:
পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযুক্ত ছাত্রদের বয়ানে পারস্পরিক একাধিক অসঙ্গতি মিলেছে৷ সেই কারণেই প্রতিটি ছাত্রকে দিয়ে আলাদা করে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করাতে চাইছে পুলিশ৷ বয়ান ও ঘটনার দিন হস্টেলে তাদের কার্যকলাপ কী ছিল? মূলত এই বিষয়টি সুনিশ্চিত হতে চাইছে লালবাজার। তাই বাকি অভিযুক্তদের ক্ষেত্রেও বয়ান ও কার্যকলাপ খতিয়ে দেখছে চাইছে তারা৷
কলকাতা: ঘটনার কেন্দ্রে রুম নম্বর ১০৪৷ গত ৯ অগাস্ট রাত ১১টা থে ১১টা ৪৫ মিনিটের মধ্যে এমন কিছু ঘটেছিল এই ১০৪ নম্বর ঘরে, যার পরবর্তীতেই ভয়ঙ্কর পরিণতি হয় যাদবপুরের বাংলাবিভাগে প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রের৷ ঘটনার সঙ্গে জড়িয়েছে আরও একটি ঘরও৷ যাদবপুর মেন হস্টেলের রুম নম্বর ৬৮৷ সূত্রের খবর, এই দুই ঘর থেকেই এমন কিছু তথ্য পুলিশের হাতে এসেছে, যাতে ঘটনাক্রম বুঝতে এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তির ধরতে অনেকটাই সুবিধা হয়েছে তদন্তকারীদের৷
পুলিশ সূত্রে খবর, যাদবপুর মেন হস্টেলের এ২ ব্লকের ১০৪ নম্বর ঘরেই হয়েছিল ঘটনার সূত্রপাত। অভিযুক্তদের জেরা করে তদন্তকারীরা আন্দাজ করছেন, ঘটনার দিন রাত ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে ওই ছাত্রকে ৬৮ নম্বর রুম থেকে চারতলার ১০৪ নম্বর রুমে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ‘ইন্ট্রো’ দেওয়ার জন্য৷ ধৃত প্রাক্তনী সৌরভ চৌধুরীই ওই ছাত্রকে চা খাওয়ানোর পরে ওই ঘরে নিয়ে যায় বলে জানা গিয়েছে৷
advertisement
আরও পড়ুন: শুভেন্দু যাওয়ার পরের দিনই যাদবপুরে মোর্চার মঞ্চ খোলার নির্দেশ, পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ
চার তলার এই ১০৪ নম্বর রুম ছিল আরেক ধৃত ছাত্র মনোতোষ ঘোষের৷ তবে সেখানে মনোতোষের সঙ্গেই উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তনী এবং বর্তমান ছাত্র মিলে অন্তত আরও ২০ জন৷ তাদের মধ্যে ধৃত সপ্তক কামিল্যা, সুমন নস্কর, অসিত সর্দার, দীপশেখর দত্ত, মহম্মদ আসিফ আনসারি, অঙ্কন সর্দার এবং মহম্মদ আরিফও ছিলেন৷ তবে ধৃত ৯ ন’জন ছাড়াও সেখানে থাকা আরও ৭-৮ জনের নাম সামনে এসেছে বলে জানা গিয়েছে৷ কিন্তু, তাঁদের এখনও গ্রেফতার না করায় সেই সমস্ত নাম সামনে আনা হচ্ছে না৷ ইতিমধ্যেই এঁদের অনেকে বাইরে গা ঢাকা দিয়েছে বলেও মনে করছে পুলিশ৷
advertisement
advertisement
কিছুদিন আগেই ডায়েরির একটি পাতায় ডিন অফ স্টুডেন্টসকে লেখা একটি চিঠি ঘিরে রহস্য তৈরি হয়৷ সেই চিঠিটিও এই ১০৪ নম্বর রুমে তল্লাশি করেই পেয়েছিল পুলিশ৷ ওই ঘরে উদ্ধার হওয়া একটি ডায়েরির ১৫১ নম্বর পাতায় চিঠিটি লেখা হয়েছিল৷ প্রথমে মনে করা হচ্ছিল, চিঠিটি জোর করে ওই ছাত্রকে দিয়ে লেখানো হয়েছিল৷ পরে জানা যায়,ওই চিঠিটি লিখেছিল আরেক ধৃত ছাত্র দীপশেখর দত্ত৷ চিঠিটি লেখার পরিকল্পনা ছিল ধৃত সৌরব চৌধুরী এবং সপ্তক কামিল্যার৷ তবে, দীপশেখর জেরায় জানিয়েছেন, চিঠিটি তিনি লিখলেও, তার নীচে স্বাক্ষর করেছিলেন নিহত ছাত্রই৷
advertisement
নিজেদের মধ্যে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে জোর করে নিহত ছাত্রকে দিয়ে বিপক্ষের এক ছাত্রের বিরুদ্ধে চিঠি লেখানো হয়েছিল কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে৷ এক্ষেত্রে, ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব আরও জোরালো হচ্ছে কারণ, ঠিক এই সময়েই একটি রহস্যজনক ফোন গিয়েছিল ডিন অফ স্টুডেন্টসের কাছে৷ সেই ফোনের বয়ান এবং এই চিঠির বয়ানের মধ্যে মিল রয়েছে বলে জানা গিয়েছে৷ তাহলে কি, জুনিয়র ছাত্রকে দিয়ে চিঠি লেখানো এবং ডিন-কে ফোন সবই হয়েছিল পরিকল্পনামাফিক? উঠছে প্রশ্ন৷
advertisement
আরও পড়ুন: উত্তরে সন্তুষ্ট নয়! র্যাগিং ঠেকাতে কী কী ব্যবস্থা ছিল? এবার ১২ পয়েন্টে যাদবপুরের কাছে জবাব চাইল ইউনিভার্সিটি গ্রান্ট কমিশন
তবে চিঠি লেখানোতেই শেষ হয়নি৷ এর পরে নাকি শুরু হয়েছিল আসল ‘ইন্ট্রো’ পর্ব৷ ১১টা নাগাদ চিঠি পর্ব শেষ হওয়ার পরেই শুরু হয় ‘ইন্ট্রো’৷ রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ বিবস্ত্র করা হয় ওই ছাত্রটিকে৷ সেখানেই নাকি এমন কিছু করা হয়, যাতে ওই ছাত্র ছুটে চারতলার ১০৪ নম্বর রুম থেকে বেরিয়ে তিনতলায় নেমে আসে এবং কোনও ভাবে বারান্দা দিয়ে নীচে পড়ে যায়৷ ঘটনার সময় তাঁকে ধরার চেষ্টা করেছিলেন বলে জানিয়েছেন অভিযুক্ত ছাত্র মহম্মদ আরিফ৷ কিন্তু, ওই ছাত্র প্রচণ্ড ঘর্মাক্ত থাকায় হাত পিছলে যায়৷
advertisement
যদিও ধৃতদের একাংশের দাবি, ওই ছাত্র গামছা পরেই বারান্দায় ছুটোছুটি করছিল৷ কিন্তু, বিশ্ববিদ্যীলয়ের অন্তর্বর্তী তদন্ত রিপোর্টেও উল্লেখ রয়েছে, গত ৯ অগাস্ট মেন হস্টেলের নীচে বিবস্ত্র অবস্থাতেই পাওয়া গিয়েছিল তাকে৷ উঠে এসেছে ragging তত্ত্বও৷
শুক্রবার ধৃত সপ্তককে নিয়ে যাদবপুর মেন হস্টেলে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করতে যায় তদন্তকারীদের একটি দল৷ তাকে তিন তলার ৬৮ নম্বর রুম, চারতলার ১০৪ নম্বর রুম যেখানে চিঠি লেখা হয়েছিল সেখানেও নিয়ে যাওয়া হয়৷ কোন কোন রুমে ‘ইন্ট্রো’ পর্ব চলেছিল সেই ঘরগুলো সপ্তককে দিয়ে চিহ্নিত করানো হয়েছে৷ ঘটনার দিন কী কী করতে বলা হয়েছিল, কী কী জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, ঘটনার আগের মূহুর্তে তিন তলার বারান্দার কোন অংশে ছোটাছুটি করছিলেন প্রথম বর্ষের ওই পড়ুয়া, সে জায়গাগুলো সপ্তককে নিয়ে ঘুরে দেখা হয়েছে।
advertisement
পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযুক্ত ছাত্রদের বয়ানে পারস্পরিক একাধিক অসঙ্গতি মিলেছে৷ সেই কারণেই প্রতিটি ছাত্রকে দিয়ে আলাদা করে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করাতে চাইছে পুলিশ৷ বয়ান ও ঘটনার দিন হস্টেলে তাদের কার্যকলাপ কী ছিল? মূলত এই বিষয়টি সুনিশ্চিত হতে চাইছে লালবাজার। তাই বাকি অভিযুক্তদের ক্ষেত্রেও বয়ান ও কার্যকলাপ খতিয়ে দেখছে চাইছে তারা৷
অর্থাৎ বয়ানে যে অসঙ্গতি পাওয়া যাচ্ছে তাতে আলাদা আলাদা ভাবে অভিযুক্তদের ঘটনাস্থল নিয়ে এসে পুনর্নির্মাণের পরিকল্পনা পুলিশের৷
এছাড়াও, এদিন নিহত ছাত্রের মামারবাড়িতেও যায় তদন্তকারীদের তিন সদস্যের দল৷ সেখানে তার মা ও মামার সঙঅগে কথা বলেন তাঁরা৷ মূলত ঘটনার দিন সন্ধেবেলা নিহত ছাত্রের মায়ের কাছে যে ফোন এসেছিল, তাতে ঠিক কী কী বলা হয়েছিল, আর অন্য কোনও গুরুত্বপূর্ণ কথা তাঁদের মনে পড়েছে কি না, সেটাই পুলিশ জানতে চায় বলে সূত্রের খবর৷
কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের সব লেটেস্ট ব্রেকিং নিউজ পাবেন নিউজ 18 বাংলায় ৷ থাকছে দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের খবরও ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং সব গুরুত্বপূর্ণ খবর নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি সব খবরের আপডেট পেতে ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
West Bengal
First Published :
August 18, 2023 5:24 PM IST