কলকাতা: রাজ্যের শিক্ষা ক্ষেত্রে নিয়োগ দুর্নীতির ব্যাপ্তি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে আদালতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকেও টেনে আনল ইডি৷ শনিবার নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে ধৃত অয়ন শীলকে আদালতে পেশ করে সওয়াল করতে গিয়ে কবিগুরুর কথা উল্লেখ করেন ইডি-র আইনজীবী৷ দাবি করলেন, রাজ্যের শিক্ষা ক্ষেত্রে দুর্নীতির পরিস্থিতি দেখে কবিগুরুও নীরবে কাঁদেন৷ বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থার দুর্নীতি দেখে তাঁর হৃদয় রক্তাক্ত হয়৷
অয়ন শীলের দুর্নীতির ঝাঁপি তুলে ধরতে গিয়ে আদালতে ইডি আইনজীবী দাবি করেন, গত ১৩ দিনে জানা গিয়েছে অভিযুক্তের ৪০টির বেশি অ্যাকাউন্ট ৮ কোটি টাকা জমা পড়েছিল। অয়ন শীলের একারই আটটি ফ্ল্যাট, পাঁচটি গাড়ি, একটা পেট্রল পাম্প রয়েছে। অয়ন শীল চাকরি দেওয়ার নাম করে অন্তত ১০০০ জনের থেকে ৪৫ কোটি টাকা তুলেছেন বলেও আদালতে চাঞ্চল্যকর দাবি করেছে ইডি৷ এই টাকার থেকে ২৬ কোটি একজন এজেন্টের মাধ্যমে ১৫ জন প্রভাবশালীর কাছে পাঠানো হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছে ইডি৷
আরও পড়ুন: নিয়োগ দুর্নীতিতে বাড়ছে জটিলতা! এবার অয়ন শীলের বিদেশ ভ্রমণের উপর নজর ইডির
এই দুর্নীতির পরিধি ব্যাখ্যা করতে গিয়েই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কথা টেনে আনেন ইডি-র আইনজীবী৷ তিনি বলেন, গীতাঞ্জলির জন্য রবীন্দ্রনাথ ১৯১৩ সালে প্রথমে এশিয়ান হিসাবে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন। সেই নোবেল পুরস্কারের অর্থ দিয়ে তিনি বিশ্বভারতী গড়েছিলেন। কিন্তু আজ রবীন্দ্রনাথ কাঁদেন কারণ বোলপুর এখন জোড়া c-এর জন্য “বিখ্যাত”। একটা হলো corruption (দুর্নীতি) এবং অন্যটি cow smuggling (গরু পাচার)।
আরও পড়ুন: ১-২ জন নন, ১৫ জন প্রভাবশালী ED নজরে! অয়নকে জেরায় উঠে আসছে মারাত্মক তথ্য
অয়ন শীলের জামিনের বিরোধিতা করে ইডি আইনজীবী বলেন, অয়নের দুর্নীতর দুটো ভাগ। একটি হল এসএসসি দুর্নীতি, অন্যটি পুরসভায় নিয়োগের। ইডি-র দাবি, যাঁরা ভাল পরীক্ষা দিতে, ওএমআর শিটে কারচুপি করে তাঁদের নম্বর কমিয়ে দেওয়া হত। ওএমআর শিটে বিভিন্ন কারসাজি করে তাঁদের অযোগ্য প্রমাণ করা হত। ইডি-র আরও দাবি, এসএসসি দুর্নীতিতে বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় ১ কোটি টাকা নিয়েছিলেন। পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অয়ন শীলের মধ্যে যোগসূত্রপ হিসেবে কাজ করেছেন কুন্তল ঘোষ।
ইডি-র আইনজীবীকে বিচারক প্রশ্ন করেন, ওএমআর শিটে একটা করে কার্বন কপি অ্যাটাচ থাকে। যা চাকরি প্রার্থী পেয়ে থাকে, সেরকম কোনও কপি আপনারা পেয়েছেন? আপনারা চাকরি প্রার্থীর সঙ্গে কথা বলেছেন? এর পরেই ইডি-র তদন্তকারী অফিসার বিচারককে কারচুপির প্রক্রিয়া বলেন৷ কী ভাবে যোগ্য প্রার্থীর ওএমআর শিট বাতিল করা হত? ইডি-র দাবি, ধরা যাক কোনও যোগ্য প্রার্থী ওএমআর শিটে সঠিক উত্তরে ডট দিয়েছিলেন। যাঁরা মূল্যায়ন করেছেন তাঁরা যোগ্য প্রার্থীর ওএমআর শিটে সঠিক ডটের সঙ্গে উত্তরের বাকি অপশন গুলিতে ডট মার্ক করে দিতেন। যার ফলে ওই ওএমআর শিট বাতিল বা ডিসকোয়ালিফাই হয়ে যেত। এই ভাবেও নম্বর কমানো হয়েছে যোগ্য প্রার্থীর৷
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Ayan Sil, Enforcement Directorate, Job Scam, Rabindranath Tagore