#কলকাতা: শেষপর্যন্ত নিজের মুখেই কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অরুণ সিং-এর লেখা নাড্ডার 'ফরমান' হাতে পাওয়ার কথা স্বীকার করলেন দিলীপ ঘোষ। রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে মুখ খোলায় দিলীপকে ' সেন্সর " করে নাড্ডার ফরমান সংবাদমাধ্যমের হাতে চলে আসায় অভিমানী দিলীপ বললেন, '' আমি কোনও চিঠি দেব না। কেউ তো আমার কাছে জানাতে চায়নি। জানাতেও বলেনি। তাহলে আবার চিঠি লিখব কেন? "
নাড্ডার শোকজ চিঠি পাবার পর দলের রাজ্য দফতরে একান্ত আলাপচারিতায় দিলীপ স্বীকার করলেন, তিনি মেইল পেয়েছেন। তবে, তা বুধবার সকালে প্রাতঃভ্রমণ করে ফোরার পর। দিলীপ বলেন, '' আজ সকালে মর্ণিং ওয়াক করে ফিরে আসার পর রোজকার অভ্যাস মত মেইল চেক করতে গিয়ে দেখি নাড্ডাজির মেইল। " তবে, অভিমানী দিলীপ এই মেইল এর জবাবে কোন পাল্টা চিঠি দেবেন না বলে আপাতত স্থির করেছেন।
দিলীপকে সতর্ক করে নাড্ডার নির্দেশ জানিয়ে অরুণ সিং-এর মেইল সংবাদমাধ্যমের হাতে আসে। তারপরেই ঝড় বয়ে যায় রাজ্য রাজনীতিতে৷ দিলীপকে কার্যত শোকজ করা নিয়ে দলের অন্দরে ও বাইরে শুরু হয় কথার ফুলঝুড়ি। নানা জল্পনা৷ কিন্তু, দিলীপ সাফ জানান, তিনি এ ধরনের কোনও মেইল তিনি পাননি। রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার থেকে শুরু করে রাজ্যের নেতারাও জানান, এ বিষয়ে তাদের কিছু জানা নেই। কিন্তু, সময় যত গড়াতে থাকে, চিঠির সত্যতা দিনের আলোর মত স্পষ্ট হতে থাকে।
আরও পড়ুন: জল্পনা শেষ, হার্দিক প্যাটেল এবার মোদির সৈনিক! বৃহস্পতিবারই প্রকাশ্যে সবকিছু
এরপরেও, স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই দিলীপ সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন বুধবার। কেন্দ্রের পাঠানো চিঠির বিষয়ে আগের অবস্থানই বহাল রাখেন তিনি। কিন্তু, শেষমেশ, বুধবার বিকালে মেনে নেন সেই চিঠির কথা। বিকেল ৪ টা নাগাদ রাজ্য দফতরে এসে দিলীপ সোজা চলে যান তার দোতলার ঘরে। সেখানে হাতে গোনা কয়েকজনের সঙ্গে ''ক্লোজড ডোর" কথা বলেন। পরে, সংবাদমাধ্যম কথা বলার সুযোগ দিলেও, সেখানে ক্যামেরার প্রবেশ নিষেধ ছিল।
আর, সেই আলাপচারিতার মধ্যেই দিলীপ চিঠি প্রাপ্তির কথা স্বীকার করে বলেন, '' এ বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই। আমার বিরুদ্ধে দিল্লিতে অভিযোগ তো নতুন কিছু নয়। অনেকবারই নাড্ডাজির সঙ্গে এ নিয়ে কথা হয়েছে। তারপরেও, গত, ২৫ মার্চ দিল্লিতে এরকমই কিছু বিষয়ে নাড্ডাজি ডেকে পাঠিয়ে জানতে চেয়েছিলেন। তখন তাকে নিজের মোবাইল থেকে আমার বক্তব্যের অডিও ভিডিও শুনিয়েছিলাম।"
আরও পড়ুন: চেকআপ না করানোই কি ভুল ছিল কেকে-র? ময়নাতদন্তে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য
পর্যবেক্ষকদের মতে, দিলীপের সেই ভিডিও ক্লিপ দেখার পরেও, তার বিরুদ্ধে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের একাংশের অভিযোগকেই গুরুত্ব দিয়েছেন নাড্ডা। দিলীপ বুঝতে পেরেছেন, যে কোনও কারণেই হোক তার বক্তব্যের প্রতি আস্থা রাখতে পারেননি নাড্ডা। গতকাল, চিঠি পাঠাবার পর, কেন্দ্রের তরফে দিলীপ ঘোষের সঙ্গে কেউ যোগাযোগও করেনি। দিলীপের অভিমানের কারণ সেটাও। এ বিষয়ে দিলীপ বলেন, ''কেন্দ্রের দিক থেকে কেউ জানতে চাননি। আর, রাজ্য কেনই বা চাইবে? "
দিলীপ ঘনিষ্ঠদের মতে, রাজ্যের বিষয়ে দিলীপের এই মন্তব্য যথেষ্ট ইঙ্গিতপূর্ণ। কারন, দিলীপের বিরুদ্ধে কেন্দ্রের এই কড়া দাওয়াইয়ের পেছনে দলের বর্তমান রাজ্য নেতৃত্বের একাংশের হাত আছে বলেই মনে করেন দিলীপ। তবে, পরিস্থিতির কারণে, আপাতত সতর্ক দিলীপ। রাজনৈতিক মহলের মতে, পরিস্থিতির দিকে নজর রেখে পা ফেলতে চাইছেন তিনি। সে কারণে একদিকে যেমন নাড্ডা দাওয়াই মেনে সংবাদমাধ্যমে বিবৃতি দেওয়ার ক্ষেত্রে সাময়িক লাগাম পরাতে চান তিনি, তেমনই রাজ্য সভাপতির সঙ্গে সংঘাতে না গিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে বার্তা দিতে চান দিলীপ। সেই লক্ষ্যে আজ নদীয়ার তেহট্টে একটি দলীয় কর্মসূচিতে রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গেই উপস্থিত থাকবেন দিলীপ ঘোষ।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Bengal BJP, Dilip Ghosh