কলকাতা: ৭১ তম দিনে পড়ল বকেয়া DA দেওয়ার দাবিতে শহিদ মিনারের নীচে আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীদের অবস্থান বিক্ষোভ। অন্যান্য রাজ্যের মহার্ঘ ভাতার অঙ্ক তুলনায় বেশি হলেও এর রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের ক্ষেত্রে তা কেন্দ্রীয় হারের তুলনায় অনেকটাই কম। এই অভিযোগে শহিদ মিনারের নীচে কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দেওয়ার দাবি সহ একগুচ্ছ দাবি নিয়ে এক ছাতার তলায় আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি দফতরের কর্মচারীরা।
এই পরিস্থিতিতে ইতিমধ্যেই ডিএ ইস্যু নিয়ে রাজ্যকে বিশেষ নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট৷ জানানো হয়েছে, আগামী ১৭ এপ্রিলের মধ্যে যৌথ মঞ্চের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে রাজ্য সরকারকে৷ গত বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, "ডিএ আবেদন নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত। সরকারের সঙ্গে ডিএ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা শুরু হওয়া উচিত। আন্দোলনকারীদের তরফে ৩ জন থাকতে পারেন। সরকারের তরফে মুখ্যসচিব বা এই স্তরের আধিকারিক আলোচনায় থাকুন।"
ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি টি এস শিবাঙ্গনমের নির্দেশে অনুযায়ী, কর্মচারী সংগঠনের তরফে কোনও তিন জন আলোচনায় যোগ দেবেন, তাঁদের নাম আগে থেকে দিয়ে দিতে হবে। রাজ্য সরকারের তরফে থাকবেন মুখ্যসচিব, অর্থসচিব সহ দ্বায়িত্বশীল পদে থাকা ব্যক্তিরা। এই আলোচনা থেকে ডিএ সমস্যার ইতিবাচক সমাধান বেরিয়ে আসবে বলে আশা আদালতের৷
এর আগে বারংবার আলোচনা প্রসঙ্গ এড়িয়ে গেলেও আদালতের নির্দেশে এবার আলোচনায় বসার সম্ভাবনা অনেকটাই বেড়েছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। দীর্ঘদিন থেকে দাবি জানালেও আদালতের নির্দেশে যদি রাজ্য সরকার আলোচনায় বসতে চায়, তাহলে তাদের স্বাগত জানাবেন বলেই জানিয়েছেন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আন্দোলনকারীরা। যদিও আলোচনায় রাজি থাকলেও তিনটি শর্ত আরোপ করেছে যৌথ মঞ্চ...
1) ডিএ নিয়ে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে যে মামলা করেছে, তা প্রত্যাহার করতে হবে। আন্দোলনকারীদের দাবি, রাজ্যের সাধারণ মানুষের টাকায় সুপ্রিম কোর্টে বারবার মামলা করে অহেতুক বিলম্ব করছে রাজ্য।
2) ১০ মার্চ প্রশাসনিক ধর্মঘটে অংশ নেওয়া সরকারি কর্মীদের কাছে পাঠানো শো কজ নোটিস প্রত্যাহার করতে হবে। গণহারে যেভাবে রাজ্যের আন্দোলনকারী সরকারি কর্মচারীদের শোকজ করা হয়েছিল, সেই প্রত্যেকটি শোকজকে ফিরিয়ে নিতে হবে রাজ্য সরকারকে।
3) আন্দোলনকারী সরকারি কর্মীদের শাস্তিমূলক বদলির নির্দেশ বাতিল করতে হবে। আন্দোলনকারী অনেক সরকারি কর্মচারীকেই রুটিন বদলি বলে বদলি করা হলেও, তা আসলে প্রতিহিংসামূলক বদলি বলেই মনে করছেন আন্দোলনকারীরা। তাই প্রত্যেকের বদলির আদেশ পুনর্বিবেচনা করে তাদেরকে আগের জায়গায় বহাল করতে হবে।
তবে আগামী ১০ এবং ১১ এপ্রিল দিল্লির যন্তরমন্তরে আন্দোলনকারী রাজ্য সরকারি কর্মীদের ধর্না কর্মসূচি বহাল থাকছে বলেই জানানো হয়েছে আন্দোলনকারীদের তরফে। এমনকি, এই দুদিনের মধ্যে কোনও একদিন যদি রাজ্য আলোচনার টেবিলে বসার আহ্বান জানায় এবং শর্ত মেনে নেয়, তাহলেও দিল্লির ধর্না হবে। তবে রাজ্য সরকারের তরফে আদালতের নির্দেশ মেনে আলোচনায় বসা হবে কি না, সেই নিয়ে আদৌ নিশ্চিত নন আন্দোলনকারীরা।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: DA Protest