#কলকাতা: 'যেখানে বাঘের ভয় সেখানে সন্ধ্যা হয়'- বাংলায় এই প্রবাদ বহুল প্রচারিত। আর ঠিক তার সঙ্গে মিলে গেলো ফ্রডস্টারদের নির্বুদ্ধিতা। প্রতারকরা নিজেদের অজান্তেই রাজ্য পুলিশের শীর্ষ কর্তাদের ফোন করে মোবাইল টাওয়ার বসনোর টোপ দেয়! ফোন আসে ভবনী ভবনের খোদ শীর্ষ কর্তাদের কাছেও। আর তাতেই বেআইনি কল সেন্টারের হদিশ পেল সিআইডি সাইবার ক্রাইম বিভাগের আধিকারিকরা।
যাকে বলে 'খাল কেটে কুমির আনা'। এই ঘটনায় সিআইডি-র হাতে গ্রেপ্তার দশ জন। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে, বিধাননগর টেকনোসিটি এলাকায়। সিআইডি সূত্রে খবর, প্রায় দুই বছর ধরে ওই বেআইনি কল সেন্টার চলছিল। বেআইনি কল সেন্টার চালানোর অভিযোগে সিআইডি দশজনকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের নাম অন্তরা সেন, অর্পিতা মণ্ডল, রাধা মিনজ, মাবিরা খাতুন, সৌরভ কুমার দত্ত, তপব্রত ব্যানার্জী, তাফসীর আজম, অভিষেক কুমার, হেমন্ত হাজরা, দেবকান্ত সিং। ঘটনাস্থল থেকে মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, নথি, হার্ড ডিস্ক, সিপিইউ, ল্যান্ড ফোন রিসিভার উদ্ধার করেছে সিআইডি।
মাসে দু লক্ষ টাকা দিয়ে ঝাঁ চকচকে অফিস ভাড়া নিয়ে চলছিল বেআইনি কল সেন্টার। নামি মোবাইল টাওয়ার বসানোর নাম করে টোপ দিয়ে মোটা টাকা অফার করত তারা। রাজি হলেই অনলাইন ডকুমেন্ট আপলোড ও বিভিন্ন ফি বাবদ নানা অজুহাতে লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতারণা করত বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন: দিলীপ ঘোষের কাছে 'ভিক্ষা', সুকান্ত মজুমদারের 'স্বাগত'! সব নজর দিল্লিতে
কীভাবে হদিশ পাওয়া গেল বেআইনি কল সেন্টারের? সিআইডি সূত্রে খবর, বেশ কিছুদিন ধরে রাজ্য পুলিশের শীর্ষ কর্তাদের কাছে নির্দিষ্ট নম্বর থেকে ফোন আসছিল। ফোনে বলা হয়, ফাঁকা জায়গা আছে কিনা। থাকলে মোবাইল টাওয়ার বসানোর জন্য আগ্রহী হলে মোটা টাকা অফার করা হয়। কিন্তু তার আগে ডকুমেন্টস অনলাইনে আপলোড করে কিছু টাকা রেজিস্ট্রেশন ফি দিতে হবে। দুঁদে আইপিএস অফিসারদের প্রায় অনেকের কাছে ফোন আসায় বুঝতে দেরি হয়নি প্রতারণা। এর পিছনে বড়সড় কোন প্রতারণা ফাঁদ পাতা রয়েছে বলে বুঝে যান তাঁরা।
আরও পড়ুন: ডিসেম্বরেই বঙ্গ BJP-তে বিরাট রদবদল, রাজ্য কমিটিতে থাকছে বড় চমক!
খোঁজ খবর নিতেই হদিস মেলে বিধান নগরে টেকনোসিটি এলাকায় জাঁকিয়ে চলছে বেআইনি এই কল সেন্টার। মঙ্গলবার গভীর রাত পর্যন্ত তল্লাশি চালিয়ে মোট দশ জনকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি সাইবার ক্রাইমের আধিকারিকরা। সিআইডি সূত্রে খবর, প্রতারণা জানতই না যে নম্বরের সিরিজ ধরে তারা ফোন করছে তাতে রাজ্য পুলিশের শীর্ষকর্তাদের নম্বর রয়েছে। ফলে অন্য সাধারণ মানুষকে যেভাবে বোকা বানিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতারণা করেছে সেই ভাবেই চেষ্টা করতে গিয়েই বিপদে পড়েছে প্রতারকরা। ধৃতদের মধ্যে রয়েছে মহিলা পুরুষ সকলেই আছে। গত দু বছর ধরে তারা সাধারণ মানুষকে বোকা বানিয়ে হাতিয়ে নিয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকা। কারো থেকে পাঁচ লক্ষ কারো থেকে ৬ লক্ষ। প্রত্যেক মাসে কর্পোরেট লুকসের পিছনে বেআইনি কল সেন্টার জাঁকিয়ে ব্যবসা করছিল। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: CID, Kolkata News