World Cancer Day 2022 : যে কর্কটরোগের চিকিৎসায় সর্বস্বান্ত, সুস্থতার পর সেই অসুখই দিল নতুন জীয়নকাঠি

Last Updated:

World Cancer Day:এঁরা প্রত্যেকে মারণ ক্যানসারজয়ী

কলকাতা : মৃত্যুকে জয় করে আরও অনেক মানুষের পাশে দাঁড়াবেন রীমা, সুরজিৎ,বিমল। এঁরা প্রত্যেকে মারণ ক্যানসারজয়ী (World Cancer Day)। লেকটাউন এর বাসিন্দা ৪৬ বছরের রিমা রায়, ৩ বছর আগে স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হন। আরও অনেকেরই মতো অন্ধকার নেমে আসে জীবনে। ২০১৯-এর নভেম্বর মাসে প্রথম কেমোথেরাপি শুরু,আর তার পর ২১ টি কেমোথেরাপি সম্পূর্ণ করে এখন ক্যান্সারমুক্ত রিমা। যদিও যে চাকরি করতেন, সেই নিয়োগকর্তারা আর তাঁকে চাকরি রাখেননি । অথৈ জলে পড়ে যান রিমা ও তাঁর ওপর নির্ভরশীল পরিবার।
একই রকম গল্প  ৩৮ বছরের সুরজিত মৃধার।গড়িয়ার বাসিন্দা। পুরুষাঙ্গে ক্যানসার ধরা পড়ে ২০১৮-র নভেম্বরে। ডিসেম্বরে তাঁর অপারেশন হয়। এর পর থেকে তিনি নিয়মিত চেক-আপে ছিলেন। আড়াই লাখ টাকার উপর খরচ হয়ে যায় বিল্ডিং কন্ট্রাক্টরের কাছে দৈনিক মজুরিতে কাজ করা সুরজিতের। ধারদেনা করে সর্বস্বান্ত অবস্থা হয়ে যায় তাঁর। ক্যানসার মুক্ত হওয়ার পরে সামান্য কাজটুকুও চলে যায়।
advertisement
গড়িয়ার বাসিন্দা ৪৩ বছরের বিমল সাহার জীবনেও একইরকম কালো ছায়া। ২০১০ সালে ৮ মাস ধরে ঘন ঘন জ্বর। নানা চিকিৎসক, অনেক পরীক্ষার পর কেউ টিবি, কেউ বা টাইফয়েড, কেউ বা জন্ডিস হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন এই রোগকে। কিন্তু উপশম হয়নি বিমলবাবুর।
advertisement
আরও পড়ুন : জীবনে দরকার সামান্য কয়েকটা বদল, ক্যান্সারকে চ্যালেঞ্জ করতে পারেন আপনিও!
নানা জায়গায় ঘোরাঘুরির পর অবশেষে ২০১১-এর অগাস্টে তাঁর রোগ চিহ্নিত হয়। গলায় ক্যানসার। অনেক পরে হাজরা চিত্তরঞ্জন ক্যানসার হাসপাতালে ১০ টি কেমোথেরাপি নিয়ে অনেকটাই সুস্থ বিমল সাহা। যদিও পরিবারের এক মাত্র সদস্য বিমলের তত দিনে দু’ লাখ টাকার উপর খরচ হয়ে গিয়েছে চিকিৎসাবাবদ। বাড়ির গয়না, বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজনের থেকে ধার করে এই খরচ সামলান। ক্যান্সারমুক্ত হওয়ার পর সামান্য যে চাকরি করতেন বেসরকারি সংস্থায়, সেই চাকরিও যায় চলে।
advertisement
আরও পড়ুন : ছোট থেকে এভাবেই আপনার শিশুকে শেখান সুস্পর্শ ও কুস্পর্শের পার্থক্য
এরপরই ক্লাইম্যাক্স। এক মৃত্যুকে জয় করে ওঠা এই মানুষগুলো যখন আবার নতুন করে খাদের কিনারায়, তখনই রীমা, সুরজিৎ এবং বিমলদের পাশে এসে দাঁড়ালেন ইএম বাইপাসের পাশে এক বেসরকারি হাসপাতালের কিছু মুক্তমনা চিকিৎসক। মেডিকা হাসপাতাল তাদের বর্তমান হাসপাতালের পাশেই নতুন ক্যানসার হাসপাতাল গড়ে তুলছেন। সেই হাসপাতালেই এই রিমা, সুরজিৎ এবং বিমলদের চাকরি দেওয়া হয়েছে। রিমা পেয়েছেন রিসেপশনিস্টের কাজ, আর যোগ্যতা অনুযায়ী সুরজিৎ এবং বিমল পেয়েছেন হাউসকিপিং এর কাজ। আগামী ৩ থেকে ৩ মাসের মধ্যে ১৫০ শয্যার এই ক্যানসার হাসপাতাল সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। রোবোটিক সার্জারির বাইরেও ক্যান্সারের অত্যাধুনিক চিকিৎসার সব ব্যবস্থাই থাকবে বলে জানান মেডিকা গ্রুপ অফ হসপিটালের চেয়ারম্যান অলোক রায়। তিনি জানান, " ক্যানসার চিকিৎসায় আরও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রয়োজন রয়েছে। রোগীর মানসিক উদ্বেগের দিকে লক্ষ রাখা, তাঁদের জীবনের মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনা এবং আগের মতোই তাঁদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরানোর ব্যাপারে কর্পোরেট হাসপাতালের অবশ্যই লক্ষ রাখা উচিত।"
advertisement
অন্যদিকে মেডিকা হাসপাতালের ক্যানসার বিভাগের ডিরেক্টর ডক্টর সৌরভ দত্ত জানান, " একজন ক্যানসার রোগী যখন তাঁর চোখের সামনে একজন ক্যানসারজয়ীকে চিকিৎসা করতে দেখবেন, তখন তাঁর মনোবল অনেকটা বেড়ে যাবে, যা রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার পথে ম্যাজিকের  মতো কাজ করতে পারে। আর একইসঙ্গে এই মানুষগুলো, যারা ক্যান্সার চিকিৎসা করতে গিয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন, যাঁদের অর্থনৈতিক অবস্থা শোচনীয়, তাঁদের পাশে এইভাবে সামান্য দাঁড়ানোর প্রচেষ্টা। চাইব,আগামীদিনে অন্য হাসপাতালগুলোও যেন এই ক্যান্সারমুক্ত মানুষের  কর্মসংস্থানে এগিয়ে আসেন।”
advertisement
আর রীমা,সুরজিৎ,বিমলরা এখন কাজ করার জন্য মুখিয়ে আছেন। প্রত্যেকেই একবাক্যে বলছেন, ‘‘আমরা যে ভাবে ক্যান্সার আক্রান্ত মানুষের পাশে দাঁড়াব, তা অন্য কেউ পারবেন না। কারণ, আমরাই জানি, এই রোগের চিকিৎসায় কতটা কষ্ট,কতটা সহমর্মিতা লাগে!’’ এখন দেখার বিষয়, শুধুই সাময়িক চমক নাকি আগামিদিনে সত্যিই এই ক্যান্সার আক্রান্ত মানুষের পাশে দাঁড়াবে এই বেসরকারি হাসপাতাল। আর এদের দেখানো পথে বাকি হাসপাতালগুলো এগিয়ে আসে কিনা।
বাংলা খবর/ খবর/কলকাতা/
World Cancer Day 2022 : যে কর্কটরোগের চিকিৎসায় সর্বস্বান্ত, সুস্থতার পর সেই অসুখই দিল নতুন জীয়নকাঠি
Next Article
advertisement
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! তারপরেই, এই এলাকার পুজোর থিম দেখলে অবাক হবেন!
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! অন্যরকম থিম এই এলাকায়
VIEW MORE
advertisement
advertisement