#কলকাতা: বিভিন্ন সময়ে বাম দলগুলির মধ্যে সমীকরণ বদলেছে রাজ্য রাজনীতিতে। বিধানসভায় কংগ্রেসের সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতা করায় অনেক ক্ষেত্রে দূরত্ব বেড়েছে বামপন্থী দলগুলোর মধ্যে। বামফ্রন্টের বাইরের দলগুলি বটেই ভোটে ভরাডুবির পর একটা সময় ফ্রন্টের শরিক ফরওয়ার্ড ব্লকও তোপ দেগেছিল আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে।
বিধানসভায় ভোট শতাংশ কার্যত তলানিতে চলে যায়। এরপর গঙ্গা দিয়ে বয়ে গিয়েছে অনেক জল। বিধানসভা ভোটের পর শান্তিপুর ও খড়দহ উপনির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে কোনও জোট হয়নি কিন্তু ভোট বেড়েছে লাল শিবিরে। রাজনৈতিক মহলের একাংশ এটাকে কাকতালীয় ভাবে ব্যাখ্যা করলেও পরবর্তী সময়ে কলকাতা পুরসভা, রাজ্যের পুরসভা নির্বাচন গুলির ফলাফল এবং সবশেষে বালিগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনেও কংগ্রেসের সাথে সমঝোতা না হওয়ায় ভোট বাড়ে সিপিএমের। এরপরেই নড়েচড়ে বসে বাম নেতৃত্ব। কংগ্রেসের বদলে বাম ঐক্য জোরদার করার দাবি ওঠে সিপিএমের সম্মেলনগুলির মধ্যে থেকে। কংগ্রেসের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে সিপিএমকে যৌথ কর্মসূচিতে সেভাবে আর দেখা না গেলেও বাম দলগুলি একসঙ্গে কর্মসূচি করার আগ্রহ বাড়তে দেখা যায়।
আরও পড়ুন: আজই আবহাওয়ার আমূল বদল, তছনছ করতে পারে কালবৈশাখী, 'এই' জেলাগুলিতে ঝেঁপে নামবে বৃষ্টি...
বুধবার ১৫ বামপন্থী দল বৈঠকে বসে একসঙ্গে কর্মসূচি করার সিদ্ধান্ত নেয়। ঠিক হয় মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ও কর্মসংস্থানের দাবিতে ২৫-৩১ মে পর্যন্ত রাজ্যজুড়ে মিটিং, মিছিল-সহ বেশকিছু আন্দোলন সংগঠিত করা হবে। কলকাতাতেও হবে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি। তিন ঘন্টার অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহন করবেন ১৫ দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। সিপিআইএম, সিপিআই, আরএসপি, ফরওয়ার্ড ব্লক, আরসিপিআই, বিবিসি, সিপিআইএমএল, এমএফবি, ওয়ার্কার্স পার্টি, বলশেভিক পার্টি, সিআরএলআই, সিপিবি, পিডিএস, আরজেডি, এনসিপি, জেডিইউ নেতৃবৃন্দ বুধবার বৈঠকে মিলিত হয়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
বিমান বসু জানিয়েছেন, "বর্তমান লাগামছাড়া মুল্যবৃদ্ধি ও বেনজির বেকারত্বের পরিস্থিতি নিয়ে সভায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। জনগণের ঘাড়ে নজিরবিহীন বোঝা চাপছে। বাড়ছে অনাহার। দারিদ্র্যের জ্বালায় আত্মহত্যা বাড়ছে। গত এক বছরে পেট্রোলের দাম বেড়েছে ৭০ শতাংশ। তরিতরকারির দাম বেড়েছে ২০ শতাংশ। ভোজ্য তেলের দাম বেড়েছে ২৩ শতাংশ, দানাশস্যের দাম বেড়েছে ৮ শতাংশ, গমের দাম বেড়েছে ১৪ শতাংশের বেশি। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য প্রধানত দায়ী কেন্দ্র। একই সঙ্গে রাজ্য সরকারেরও দায় রয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজ্যের ২ মন্ত্রীকে বিঁধে সিপিআইএমের নতুন প্যারোডি, গান বাঁধলেন রাহুল-নীলাব্জ
এ রাজ্যে মূল্যবৃদ্ধি রোখার জন্য মুখ্যমন্ত্রী টাক্সফোর্স গঠনের ঘোষণা করেছেন। তাঁদের বাজারে ঘুরে নজরদারি করার কথা। সে কাজ করা হয়েছে কি? পেট্রোপণ্যের উপর কেন্দ্রীয় সরকারের মতো রাজ্য সরকারও কর বসিয়ে অর্থ সংগ্রহ করছে। যা মূল্যবৃদ্ধি ঘটাচ্ছে। এরাজ্যের আন্দোলনের ঐতিহ্য অনুসারে ১৫টি বামপন্থী ও সহযোগী দল মিলিতভাবে আন্দোলনের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। আগামি ২১ মের মধ্যে জেলায় জেলায় বামপন্থী দল ও সহযোগী দলসমূহের সভা অনুষ্ঠিত করে কর্মসূচি নির্দিষ্ট করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।"
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বিরুদ্ধে আন্দোলন হলেও এই কর্মসূচি আগামী দিনে লাগাতার চলবে বলেই ফ্রন্ট সূত্রে খবর। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে আগামী দিনে রাজ্য রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ হতে চলেছে।
UJJAL ROY
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Cpim, Kolkata Market Price Hike