School Teachers Policy: 'গ্রামে শিক্ষকতা বাধ্যতামূলক করা উচিত', কী সুপারিশ শিক্ষাবিদদের?
- Published by:Sanjukta Sarkar
- Written by:SOMRAJ BANDOPADHYAY
Last Updated:
School Teachers Policy: ইতিমধ্যেই রাজ্যের শিক্ষানীতিতে গ্রামের শিক্ষকতা বাধ্যতামূলক করার ওপর প্রস্তাব রাখা হয়েছে। কিন্তু এবার এর কার্যকারিতা নিয়ে সরব হচ্ছেন শিক্ষাবিদের একাংশ।
কলকাতা: চিকিৎসকদের কর্মজীবনের একটি নির্দিষ্ট সময় গ্রামের হাসপাতালগুলিতে গিয়ে চিকিৎসা করাতে হয়। চিকিৎসা না করালে তাদের জরিমানা পর্যন্ত দিতে হয়। সেই ধাচেই এবার শিক্ষকদের ক্ষেত্রে কেন এই ধরনের নীতি করা যাবে না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন শিক্ষাবিদরা।
যদিও গ্রামে শিক্ষকতা করানোর জন্য একটি নির্দিষ্ট নীতি রাজ্যের শিক্ষা নীতিতে রাখা হয়েছে।বলা হয়েছে শিক্ষকদের কর্মজীবনের পাঁচ বছর গ্রামের স্কুলগুলিতে শিক্ষকতা করতে হবে। কিন্তু তার এখনও কার্যকরিতা হয়নি। কী ভাবে কার্যকরী হবে তারও কোন নীতি প্রণয়ন হয়নি। যদিও রাজ্যের শিক্ষানীতি থেকে স্কুল স্তরে কোন সুপারিশ গুলিকে কার্যকর করা যায় তা নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকার একটি কমিটি তৈরি করেছে। সেই কমিটি সে অর্থে এখনও পর্যন্ত বৈঠকে বসেনি বলেই জানা গেছে। তবে এবার রাজ্যের স্কুল শিক্ষকদের কর্মজীবনে কেন গ্রামের স্কুলে শিক্ষকতা করাবেন না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
advertisement
advertisement
সম্প্রতি উচ্চ প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগের কাউন্সিলিং প্রক্রিয়ায় দেখা গেছে গ্রামের স্কুল নেওয়ার ক্ষেত্রে আগ্রহ হারাচ্ছেন হবু শিক্ষকরা।যা নিয়ে শিক্ষক নিয়োগের কাউন্সিলিং প্রক্রিয়ায় চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। শিক্ষাবিদ নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ীর মতে “এটি এখন একটা অভ্যাস হয়ে গেছে, গ্রামের স্কুলে না যাওয়ার। গ্রামে স্কুলে শিক্ষকতা করানোর জন্য রাজ্য সরকারকে নির্দিষ্টভাবে কিছু ভাবতে হবে।”
advertisement
যদিও গ্রামীন স্কুলে শিক্ষকতা না করাকে দুর্ভাগ্যজনক বলেই বলছেন শিক্ষাবিদ তথা সিলেবাস কমিটির প্রাক্তন চেয়ারম্যান অভীক মজুমদার। তিনি বলেন “এটা খুব দুর্ভাগ্যজনক গ্রামের স্কুলে হবু শিক্ষকরা যেতে চাইছেন না। এর জন্য যেমন রাজ্য সরকারকে তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। তেমনি নির্দিষ্ট কিছু নিয়মও তৈরি করা উচিত।”
advertisement
প্রসঙ্গত গ্রামে শিক্ষকতায় অনীহার তথ্য উঠে এসেছে উচ্চ প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগের কাউন্সিলিং প্রক্রিয়ায়। সম্প্রতি উচ্চ প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগের কাউন্সিলিং প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে আদালতের নির্দেশ মোতাবেক। আর সেই কাউন্সেলিং প্রক্রিয়ায় দেখা গেছে কাউন্সিলিং এ যোগ দিয়েও স্কুল গ্রামে হওয়ায় চাকরি নিলেন না হবু শিক্ষকরা। স্কুল সার্ভিস কমিশন সূত্রে জানা গেছে পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম এর মত জেলাগুলিতে প্রান্তিক অঞ্চল গুলিতে স্কুলগুলি নিতেই চাইছেন না হবু শিক্ষকরা। যা নিয়ে, রীতিমতো হইচই পড়ে গেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন এর অন্দরে। স্কুল সার্ভিস কমিশন সূত্রে খবর এখনো পর্যন্ত উচ্চ প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগের কাউন্সেলিং হয়েছে ৮ দিন। আর এই ৮ দিনেই প্রায় ২৫ জন চাকরি প্রার্থী তারা কাউন্সিলিং এ যোগ দিলেও স্কুল পছন্দ না হওয়ায় চাকরি নিলেন না।
advertisement
কমিশন সূত্র জানা গেছে পছন্দ না হওয়ার স্কুল গুলি গ্রামাঞ্চলেই। বেশিরভাগ স্কুলই প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে। তার জন্যই খুব শিক্ষকরা এই স্কুলগুলোর চাকরি নিতে চাইলেন না। আর তার জেরেই প্রশ্ন উঠছে এর ধরুন শিক্ষকদের জন্য গ্রামে শিক্ষকতা করানো বাধ্যতামূলক আগামিদিনে করবে রাজ্য?
তাহলে আগামী দিনের গ্রামের স্কুল গুলি কি শিক্ষকহীন হয়ে থাকবে? সম্প্রতি উচ্চ প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দেখা গেছিল মেধাতালিকায় প্রথম দিকে থাকা চাকরি প্রার্থীরা অনুপস্থিত থাকছেন কাউন্সেলিং-এ। এখনও পর্যন্ত গত আট দিনে ৪৫০০ জন চাকরিপ্রার্থীকে কাউন্সিলিং এ ডাকা হলেও ৪৫০ এরও বেশি চাকরিপ্রার্থী অনুপস্থিত থেকেছেন। দীর্ঘদিন ধরে এই শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া চলার দরুন অনেকেই অন্যান্য চাকরিতে চলে গেছেন বলেই দাবি করেছিল কমিশন।
advertisement
কিন্তু এবার এই তথ্য যথেষ্ট নাড়া ফেলে দিল রাজ্যের অন্দরে। শিক্ষকদের বদলি হওয়ার জন্য গ্রামের একাধিক স্কুলে শিক্ষক শিক্ষিকার সংখ্যা অনেকটাই কমে গিয়েছে। সেই ঘাটতি পূরণ অবশ্যই প্রয়োজন বলেও হাইকোর্ট ও তার পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করেছে। কিন্তু এবার হবু শিক্ষকরাই গ্রামে না যেতে চাওয়ায় সেই ঘাটতিপূরণ কী ভাবে সম্ভব হবে তা নিয়েই উড়ছে প্রশ্ন। তাহলে কি মেধার সঙ্গেই আপোষ হয়ে যাবে? সেই প্রশ্নও উঠছে।
advertisement
সোমরাজ বন্দ্যোপাধ্যায়
Location :
Kolkata,West Bengal
First Published :
November 27, 2023 3:19 PM IST