#শিলিগুড়ি: রবিবার ছিল জলপাইগুড়ি জেলার জলপাইগুড়ি, মালবাজার ও ময়নাগুড়ির পুরভোট। এছাড়াও কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ার জেলার কিছু পুরসভার ভোট ছিল। এই পুরভোটে শাসলদলের বিরুদ্ধে ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ আসে। এছাড়াও বিক্ষিপ্ত অশান্তিতে ছেয়ে যায় জেলাগুলি। এর মাঝেই ভোটে অশান্তি এবং একতরফা ভোটের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলে ১২ ঘন্টা বাংলা বনধের ডাক দেয় ভারতীয় জনতা পার্টি।
সোমবার সকালে শিলিগুড়ির ভেনাস মোড়ে হাসমি চক থেকে বের হয় বিজেপির একটি মিছিল। সেখানে সমর্থকরা দলীয় পতাকা নিযে হাঁটে। এর পাশাপাশি শহরজুড়ে বিধায়কদের দেখা যায় অন্যরূপে। তাঁদের রাস্তার উপর শুয়ে শাসকদলের বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা যায়। ১২ ঘণ্টা বাংলা বনধ সফল করতে শিলিগুড়ি শহর সংলগ্ন ইস্টার্ন বাইপাসে পিকেটিং করতে গিয়ে গ্রেফতার ডাবগ্রাম ফুলবাড়ি বিধানসভা এলাকার বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায়। এদিন সকাল থেকেই ইস্টার্ন বাইপাসে বিধায়কের নেতৃত্বে পিকেটিং করতে দেখা যায় বিজেপি কর্মীদের। খড়িবাড়ি থেকে শুরু করে শিলিগুড়ির সর্বত্র অবস্থান বিক্ষোভে নামেন বিজেপি কর্মী সমর্থকরা।
রাস্তার ওপর তারা টায়ার জ্বালিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বনধের সমর্থনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। এরপরই ঘটনাস্থলে আসে শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশের বিশাল বাহিনী। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায় সহ অন্যান্য অবরোধকারী বনধ সমর্থককে গ্রেফতার করে। এদিন ডাবগ্রাম ফুলবাড়ি বিধানসভা এলাকায় আংশিক বনধ ছিল। সকাল থেকেই শহরে যান চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও বিজেপি নেতা, কর্মী এবং সমর্থকরা রীতিমত রাস্তায় শুয়ে বনধ সার্থক করার দাবি রাখেন। ছাপ্পা ভোটের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলে তাঁরা রাস্তায় শুয়ে পড়েন। পুলিশ তাঁদের তুলে নিয়ে গেলেও গাড়ি থেকেও সমর্থকদের বচসা করতে দেখা যায়।
এদিকে, ১২ ঘণ্টার বাংলা বনধ পালন করতে গিয়ে খড়িবাড়িতে গ্রেফতার বিজেপি যুব মোর্চার শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি কাঞ্চন দেবনাথ সহ একাধিক। এদিন সকালে খড়িবাড়ি বাজারে কাঞ্চন দেবনাথের নেতৃত্বে বনধের সমর্থনে একটি মিছিল সংগঠিত হয়। পরবর্তীতে খড়িবাড়ি বিডিও অফিসের গেট বন্ধ করে বনধ সমর্থকরা অবস্থান করেন। কিছুক্ষণ পর খড়িবাড়ি থানা থেকে পুলিশ পৌঁছে বনধ সমর্থকদের উঠে যেতে বললে তাঁরা অবস্থানেই অনড় থাকেন। পরে পুলিশ সকলকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে। গ্রেফতার হওয়া দলীয় কর্মীদের ছেড়ে দেওয়ার দাবিতে খড়িবাড়ি থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাল বিজেপি। সোমবার বিজেপির ডাকা ১২ ঘণ্টা বনধের সমর্থনে খড়িবাড়ি বিডিও অফিসের সদর দরজায় অবস্থানে বসেন দলের কর্মী-সমর্থকরা। পুলিশের ভ্যান থেকেও তাদের বচসা করতে দেখা যায়। খড়িবাড়ির পাশাপাশি এদিন শহরের ভেনাস মোড়েও অবরোধ মিছিল করেন তারা। বনধের সমর্থকরা দলীয় পতাকা নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। তবে এদিন যান চলাচল খুব একটা ব্যহত হয়নি। এর ফলে গর্জে ওঠে গেরুয়া শিবির। জায়গায় জায়গায় অবরোধ ডাকে নেতাকর্মীরা। পুলিশ হস্তক্ষেপ করলেও তাঁরা অবস্থান থেকে অনড় হন। রাস্তা শুয়ে পড়ে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে পিছু হটেন না কেউ। তাদের বলতে শোনা যায়, 'ভারত মাতা কি জয়।'
এদিন যুব মোর্চা ছাড়াও শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ বনধের সমর্থনে মাটিতেই শুয়ে পড়েন রাস্তার উপরে। পুলিশ ওঠানোর চেষ্টা করলে তিনি গর্জে ওঠেন। উল্লেখ্য, রবিবার ছিল পুরভোট। জলপাইগুড়িতে ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ ওঠে। বিক্ষিপ্তভাবে অশান্তি হয় জলপাইগুড়ি জেলার সর্বত্র। পুলিশি নিষ্ক্রিয়তারও অভিযোগ করে বিরোধীরা। এর জেরেই বনধ ডাকে গেরুয়া শিবির।
Vaskar Chakraborty
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।