ওসমানিয়া: কংক্রিটের চাঙড় সরাতেই বেরিয়ে পড়ছে একের পর এক দেহ। রাস্তায় আশেপাশে জমেছে বহুতলের ধ্বংসস্তূপ। সেখানে পরিজনকে ফিরে পাওয়ার আশায় ভিড় জমিয়েছেন অনেকে। মাত্র একদিনের মধ্যে চেনা ছবি কার্যত বদলে গিয়েছে তুরস্ক এবং সিরিয়াতে। ৭.৯ মাত্রার ভূমিকম্পে একদিন আগেই কেঁপে উঠেছিল এই দুই দেশ। তার পর থেকেই এই দুই দেশ থেকে আসছে একের পর এক বিপর্যয়ের খবর।
দুই দেশ মিলে এই ভূমিকম্পে মৃত্যু হয়েছে ৪ হাজারের বেশি মানুষের। তুরস্কের সরকার জানিয়েছে, ২,৩৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে ভূমিকম্পে। আহত কমপক্ষে ১৪,৪৮৩ জন। অন্যদিকে, সিরিয়া সরকার জানিয়েছে, ১,৪৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে এই বিপর্যয়ে। আহত হয়েছেন তিন হাজারের মানুষ। দুই দেশ মিলিয়ে এই ভূমিকম্পে প্রচুর মানুষ নিখোঁজ। আহতদের অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সিরিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে ধোঁয়াশা কিছুটা তৈরি হয়েছে। কারণ, সিরিয়ার সব অংশে সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই। গৃহযুদ্ধের আগুন এখনও থামেনি এই দেশে। দেশের উত্তর অংশের নিয়ন্ত্রণ এখনও বিরোধী গোষ্ঠীর হাতে। ফলে ভূমিকম্পে সেখানে কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং মৃত-আহতদের সঠিক পরিসংখ্যান, কিছুই জানা যায়নি সেই এলাকাগুলি থেকে। তবে জানা গিয়েছে, সিরিয়ার উত্তর অংশেও ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অর্থাৎ হু-এর তরফ থেকে জানানো হয়েছে এই ভূমিকম্পে অন্তত ২০ হাজার মানুষের মৃত্যু হতে পারে। অর্থাৎ মৃত্যু মিছিল আরও বাড়তে পারে। সবথেকে চিন্তার বিষয় ভূমিকম্পের পরে একের পর এক আফটারশকে কেঁপে উঠছে সিরিয়া এবং তুরস্কের বিস্তীর্ণ এলাকা। তার জেরে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়ছে। ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, সোমবার ভূমিকম্পের পরে অন্তত ১০০টি আফটারশক এসেছে।
সোমবার স্থানীয় সময় ভোর ৪টে ১৭ নাগাদ ভূমিকম্প হয়। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ৭.৯। ভূমিকম্পে দুই দেশে প্রচুর বহুতল ধসে পড়ে যায়। তার জেরেই প্রাণহানির সংখ্যা বেড়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন, মৃত ৪ হাজার, তুরস্ক-সিরিয়ার ভূমিকম্পে ২০ হাজার প্রাণহানির আশঙ্কায় WHO
আরও পড়ুন, ভূমিকম্পে মৃত্যুপুরী তুরস্ক-সিরিয়া, মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২৩০০
ভূমিকম্পের জেরে ঘরছাড়া হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। তাঁদের স্টেডিয়াম, শপিং মল, ধর্মীয় আশ্রয়স্থলে রাখা হচ্ছে। ভূমিকম্পের পরে বিভিন্ন দেশ থেকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। ভারতের তরফে উদ্ধারকারী দলকে পাঠানো হয়েছে। বিশেষভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত গাজিয়াবাদ থেকে এনডিআরএফ-কে পাঠানো হয়েছে তুরস্কে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।