ভারত-চিন সীমান্ত বিরোধের জন্য ক্ষতির মুখে জলবায়ু গবেষণা, বিপদে সভ্যতা!
- Published by:Debalina Datta
Last Updated:
ভারত এবং চিন- এই দুই নদীমাতৃক দেশের সভ্যতার প্রয়োজনীয় জলধারার উৎসও হিমালয়। এই সুউচ্চ পর্বতশ্রেণী দুই দেশেরই জলবায়ু গঠনে প্রত্যক্ষ ?
#নয়াদিল্লি: প্রবাদ বলে- রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয়, উলুখাগড়ার প্রাণ যায়! সীমান্তের দখলদারি নিয়ে ভারত এবং চিনের মধ্যে দীর্ঘ অনেকগুলো বছর ধরে যে উত্তপ্ত পরিস্থিতি চলছে, যে কয়েকটি যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে, তা সাধারণ মানুষের জীবনে প্রভাব তো ফেলেছেই! কিন্তু দুই দেশের এই সীমান্ত সমস্যার ফলে বিপদের মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে সভ্যতাও। কেন না, এই বিবাদের জেরে জলবায়ু সংক্রান্ত গবেষণার কাজ বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে প্রতিনিয়ত বিপুল ভাবে।
আসলে, হিমালয় তো আর শুধুই দুই দেশের মাঝে প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়ে নেই! ভারত এবং চিন- এই দুই নদীমাতৃক দেশের সভ্যতার প্রয়োজনীয় জলধারার উৎসও হিমালয়। এই সুউচ্চ পর্বতশ্রেণী দুই দেশেরই জলবায়ু গঠনে প্রত্যক্ষ প্রভাব বিস্তার করে থাকে। কিন্তু বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাবে হিমালয় নানা বদলের সম্মুখীন হয়েছে এবং হয়ে চলেছে। যা সভ্যতার পক্ষে বিপজ্জনক বলে সাব্যস্ত হতে পারে। কিন্তু তা নিয়ে পরীক্ষা চালিয়ে যাওয়ার উপায় নেই। এখানে সমস্যা তৈরি করেছে দুই দেশের রাজনৈতিক বিবাদ।
advertisement
এই প্রসঙ্গে উত্তরাখণ্ডের আর্যভট্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব অবজারভেশনাল সায়েন্সেস নামের সংস্থাটির দিকে একবার তাকানো যেতে পারে। এই সংস্থা দীর্ঘকাল ধরে হিমালয় এবং তৎসলগ্ন বাতাস, জল নিয়ে কাজ করে চলেছে। কিন্তু গবেষণার জন্য পর্যাপ্ত তথ্য পাওয়া তাদের পক্ষে দিন দিন হয়ে উঠছে দুষ্কর। এই সংস্থা জানিয়েছে যে পৃথিবী যদি প্রয়োজনের তুলনায় মাত্র ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসও উষ্ণ হয়ে ওঠে, তাহলে হিমালয়ের নানা হিমবাহ গলে গিয়ে সভ্যতাকে বিপদে ফেলবে। কিন্তু সে দিকে পরিস্থিতি এগোচ্ছে কি না, হিমবাহগুলো রয়েছে ঠিক কেমন পর্যায়ে, তা সীমান্ত অতিক্রম করে পরীক্ষা করা যাচ্ছে না।
advertisement
advertisement
এই ব্যাপারে সত্যি বলতে কী দূর থেকে গবেষণা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়, স্থানীয় তথ্যই একমাত্র কাজে আসে। হিমালয়ের যে সব জায়গায় যাওয়া সম্ভব, সেখানে গিয়ে বাতাস এবং আবহাওয়ার অন্য তথ্য সংগ্রহ করে গবেষণার কাজ করতে হয়- না হলে পুরো বিষয়টিই হয়ে যায় অনুমান-সাপেক্ষ। আর অনুমানের উপরে ভিত্তি করে থাকলে বিপদ কোন দিক থেকে নেমে আসছে, তা সম্যক ভাবে বোঝা সম্ভব নয়। কিন্তু দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ব্যর্থতার কারণে ভারতীয় বিজ্ঞানীরা যেমন চিনের অংশে গিয়ে কাজ করতে পারছেন না, তেমনই চিনের বিজ্ঞানীদেরও এই দেশে আসা বারণ!
advertisement
আবার নেপালের ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ইন্টিগ্রেটেড মাউন্টেন ডেভেলপমেন্ট জানিয়েছে যে তারা হিমালয়ের হিন্দুকুশ অঞ্চলের ৮টি দেশের বাস্তুতন্ত্র এবং জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কাজ করে। কিন্তু রাজনৈতিক বিরোধের জন্য তাদেরও কাজ চালিয়ে যেতে সমস্যা হচ্ছে। ফলে, অনেক ক্ষেত্রেই ছোট প্রকল্পগুলো মাঝপথে থামিয়ে দিতে হচ্ছে বা শুরুই করা যাচ্ছে না। যার জেরে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে পাওয়া তথ্যে ভুল থেকে যাচ্ছে।
advertisement
দুই দেশের বিজ্ঞানীরাই তাই সামরিক বিরোধ থেকে গবেষণা সংক্রান্ত কাজগুলোকে আলাদা রাখার অনুরোধ জানাচ্ছেন সরকারকে। তাঁদের আবেদনে কাজ হবে কি না, তার উত্তর রয়েছে ভবিষ্যতের গর্ভে।
দেশের সব লেটেস্ট খবর ( National News in Bengali ) এবং বিদেশের সব খবর ( World News in Bengali ) পান নিউজ 18 বাংলায় ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং টপ হেডলাইন নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ ডাউনলোড করুন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস-এ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
First Published :
March 08, 2021 10:04 PM IST