Pervez Musharraf Death: কোন পথে পাকিস্তানের মসনদে পৌঁছলেন দিল্লির ছেলে! মুশারফের সঙ্গে শেষ হয়ে গেল পাক ইতিহাসের এক অধ্যায়

Last Updated:

তারপরে অবশেষে ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে মুখ থুবড়ে পড়ে মুশারফের দল। সে বছরই ১৮ অগস্ট প্রেসিডেন্ট পদ থেকে উস্তফা দেন তিনি।

পাকিস্তান: কাশ্মীর থেকে দেশীয় রাজনীতি। কার্গিল যুদ্ধের কাণ্ডারি। রবিবার শেষ হয়ে গেল পাক রাজনীতির অন্যতম আলোচিত অধ্য়ায় পারভেজ মুশারফ। অ্যামাইলয়ডোসিস নামক বিরল রোগে দীর্ঘদিন ভুগছিলেন। অবশেষে দুবাইয়ের হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন প্রাক্তন এই পাক প্রেসিডেন্ট। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর।
১৯৯৯ সালে পাক সেনার দায়িত্বগ্রহণ করেন মুশারফ। তার পর ধীরে ধীরে পাক রাজনীতির অন্দরে উত্থান হয় এই সেনাকর্তার। একসময় দেশের সর্বোচ্চ ক্ষমতারও অধিকারী হয়ে পড়েন। ২০০১ সাল থেকে ২০০৮ পর্যন্ত পাকিস্তানের প্রসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেছিলেন এই মুশারফই।
আসুন এক ঝলকে দেখে নিই মুশারফের উত্থান-পতনের কাহিনি...
advertisement
আরও পড়ুন: প্রয়াত পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট পারভেজ মুশারফ! দীর্ঘ অসুস্থতার পর দুবাইয়ের হাসপাতালে মৃত্যু
পারভেজ মুশারফের জন্ম হয়েছিল কিন্তু এই ভারতেই। তখন অবশ্য ভারত পাকিস্তান ভাগ হয়নি। অবিভক্ত ভারতের দিল্লিতে জন্মেছিলেন পারভেজ। ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হওয়ার পরে তাঁর পরিবার পাকিস্তানের করাচিতে চলে যান। মুশারফের বাবা ছিলেন অত্যন্ত দক্ষ কূটনীতিক। বাবার কাজের জন্যই ১৯৪৯ থেকে ১৯৫৬ পর্যন্ত তুরস্কে থাকতে হয়েছিল মুশারফদের।
advertisement
ছোট থেকেই সামরিক এবং প্রতিরক্ষামূলক কাজে যোগ দেওয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষা পোষণ করতেন মনে মনে। সেই লক্ষ্যেই প্রথমে কেটার আর্মি কম্যান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজে পড়াশোনা। তারপরে লন্ডনের রয়্যাল কলেজ অফ ডিফেন্স স্টাডিজে উচ্চশিক্ষা। পড়াশোনার পর্ব শেষ হওয়ার পরে ১৯৬৪ সালে পাকিস্তান সেনায় যোগদান করেন মুশারফ।
সেনায় থাকাকালীন একাধিক পদমর্যাদার কাজ সামলেছেন। সামান্য পদাতিক সেনানী থেকে কম্যান্ডো গ্রুপের সদস্য। এমনকি, কেটা স্টাফ কলেজ এবং ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের ওয়ার উইংয়ের অধ্যাপকের দায়িত্ব সামলেছিলেন তিনি। ১৯৬৫ থেকে ৭১-এর ভারত -পাক যুদ্ধেও ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ময়দানে নামতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে।
advertisement
১৯৯৮ সালে পাক সেনার প্রধান হিসাবে তাঁর নাম ঘোষণা করেন ত‍‍ৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। তারপরে, ১৯৯৯ এই কার্গিল যুদ্ধ। কার্গিলের ভার ভূখণ্ডে পাক সেনা অনুপ্রবেশের অন্যতম কাণ্ডারি মনে করা হয় এই পারভেজ মুশারফকে। কিন্তু, আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ভারতের জমি থেকে পিছু হঠতে হয় মুশারফের সেনাকে। যা নিয়ে ঘরে-বাইরে বিক্ষোভের শিকার হতে হয়েছিল তাঁকে।
advertisement
তারপরেই ঘটল পাকিস্তানের ইতিহাসে অন্যতম বড় এবং বিতর্কিত রাজনৈতিক পালাবদল। ১৯৯৯ সালে, ১২ অক্টোবর। যখন মুশারফ দেশের বাইরে রয়েছেন, এমন সময় তাঁকে সেনাপ্রধানের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন নওয়াজ। শুধু তাই নয়, এরপরে মুশারফ দেশে ফিরতে চাইলেও তাঁর বিমান যাতে করাচির মাটি স্পর্শ না করতে পারে, তা নিশ্চিত করতে গোটা করাচি বিমানবন্দর ঘিরে ফেলে পাক প্রশাসন।
advertisement
তলে তলে আসলে পাকিস্তানে সেনা উত্থানের ফন্দি আঁটছিলেন মুশারফ। নওয়াজকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে সর্বোচ্চ ক্ষমতা দখলের পরিকল্পনা বোনা হচ্ছিল মুশারফের মাথায়। সেইমতো সাজিয়ে ফেলা হয়েছিল সমস্ত নাটক। যার খবর চলে গিয়েছিল নওয়াজের কাছে। সেই কারণেই তড়িঘড়ি মুশারফকে সেনাপ্রধানের দায়িত্ব থেকে সরানোর সিদ্ধান্ত।
advertisement
কিন্তু বিমানবন্দর ঘেরাও করেও লাভ হয়নি তখন। শেষমেশ নওয়াজ শরিফের সরকার ফেলে পাকিস্তানে সেনা শাসন জারি করেন মুশারফ। পাক নাগরিকদের আশ্বাস দেন, সময় এলে ফের গণতন্ত্র ফিরবে দেশে।
যদিও তা হয়ে ওঠেনি ২০০২ সাল পর্যন্ত। ক্ষমতা দখলের সঙ্গে সঙ্গে পাকিস্তানের সংসদসভা ভেঙে দিয়েছিলেন মুশারফ। তৈরি করেছিলেন ন্যাশনাল সিকিওরিটি কাউন্সিল নামে এক বিশেষ বাহিনী। ক্রমে তাঁর সখ্যতা গড়ে ওঠে আমেরিকার সঙ্গে। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর টুইন টাওয়ার ধ্বংসের পরে আফগানিস্তানের মাটিতে মার্কিন সেনা অনুপ্রবেশেও তাদের সাহায্য করে মুশারফ প্রশাসন।
advertisement
কাশ্মীর নিয়ে ঐকমত্যে আসতে ভারতের সঙ্গেও ভারত সফরেও আসেন মুশারফ। ২০০১ সালে পরভেজ মুশারফের আগ্রা সামিট ভারত-পাক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে চির গুরুত্বের অধিকারী। এবারেই কাশ্মীর সমস্যা সমাধানে ফোর পয়েন্ট সলিউশন-এর প্রস্তাব দিয়েছিলেন তিনি।
২০০২ সালে পাকিস্তানে ফের ফিরিয়ে আনা হয় সংসদীয় শাসন। আনুষ্ঠানিক ভাবে পাক প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি। তবে পাশাপাশি, সেনাও থাকে তাঁর দখলে।
আরও পড়ুন: পৈশাচিক আচরণ! 'শাস্তি' দেওয়ার নামে পথকুকুরদের গায়ে ঢেলে দেওয়া হল গরম পিচ
প্রেসিডেন্ট এবং সেনাপ্রধান এই দুই পদেই আসীন হওয়ায় ২০০৭ সালে প্রেসিডেন্ট হিসাবে তাঁর পুনর্নির্বাচনের আর্জি খারিজ করে দেয় পাক সুপ্রিম কোর্ট। পরিস্থিতি অনুকূল না দেখে, নির্বাচন পিছিয়ে ২০০৭ সালের নভেম্বরে পাকিস্তান জুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করে দেন মুশারফ।
জঙ্গি হানার আশঙ্কার অজুহাত দেখিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে। বিরোধীদের আটক করা হয়। কণ্ঠরোধ করা হয় সংবাদমাধ্যমের।
তারপরে অবশেষে ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে মুখ থুবড়ে পড়ে মুশারফের দল। সে বছরই ১৮ অগস্ট প্রেসিডেন্ট পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি।
২০০৭ সালে বেআইনি ভাবে জরুরি অবস্থা জারি করার কারণে তাঁর বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগ আনা হয়। ২০১৪ সেই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন তিনি।
তারপর থেকেই দুবাইয়ে বসবাস করছিলেন প্রাক্তন এই পাক প্রেসিডেন্ট।
বাংলা খবর/ খবর/বিদেশ/
Pervez Musharraf Death: কোন পথে পাকিস্তানের মসনদে পৌঁছলেন দিল্লির ছেলে! মুশারফের সঙ্গে শেষ হয়ে গেল পাক ইতিহাসের এক অধ্যায়
Next Article
advertisement
West Bengal Weather Update: ভারী বর্ষণের সতর্কতা উত্তরবঙ্গে ! দক্ষিণবঙ্গেও বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি চলবে
ভারী বর্ষণের সতর্কতা উত্তরবঙ্গে ! দক্ষিণবঙ্গেও বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি চলবে
  • ভারী বর্ষণের সতর্কতা উত্তরবঙ্গে !

  • দক্ষিণবঙ্গেও বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি চলবে

  • কলকাতা-সহ বাকি অংশে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হতে পারে রবিবার পর্যন্ত

VIEW MORE
advertisement
advertisement