#থাইল্যান্ড: আন্তিচা সাংগচাই। ৩০ বছর পর্যন্ত বাইরের জগৎ দেখার সুযোগ পাননি। সমাজ ও ধর্মের নানা জাঁতাকলে বারবার পিষতে হয়েছে তাঁকে। একটি অল্পবয়সী ছেলের সঙ্গেও বিয়ে হয়েছে তাঁর। কিন্তু এ বার বোধহয় বদলের সময় এসেছে। দক্ষিণ থাইল্যান্ডের রক্ষণশীল সম্প্রদায়কে লিঙ্গ সমতা (Gender Equality), অধিকার বোঝানোর সময় এসেছে। সময় এসেছে আন্তিচার মতো আরও শত শত এই রকম নারীদের গর্জে ওঠার। ঠিক এই ভাবনা থেকেই জন্ম বুকু ফুটবল ক্লাবের। একটা সংগঠন যেখানে লেসবিয়ান (Lesbian), বাই-সেক্সচুয়াল (Bisexual) বা LBQ-রা মন খুলে অক্সিজেন নিতে পারেন। আর সেই ফুটবল ক্লাব সূত্রে আয়োজন করা হয়েছিল এক টুর্নামেন্টের। যেখানে হিজাব পরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেল পরিবর্তন আনার কাণ্ডারীদের।
গতমাসেই তাদের প্রথম LBQ টুর্নামেন্টের আয়োজন করল Buku FC। দক্ষিণ প্রদেশ থেকে আসা অংশগ্রহণকারী ছয়টি টিমের মধ্যেই অনেককেই হিজাব পরে মাঠে নামতে দেখা যায়। অনেকের পরিবারও স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে তাঁদের প্লেয়ারদের জন্য গলা ফাটাচ্ছিল। তবে কয়েক বছর আগে পর্যন্ত এই দৃশ্য কল্পনা করাই অসম্ভব ছিল। আন্তিচার মতো আরও অনেকেই সেই কথা বলেছেন। তাঁদের বক্তব্য, মেয়েদের ফুটবল খেলা যে তাঁদের ধর্মে পাপ, এর জন্য বহু বাধা পেরোতে হয়েছে! এ বছরই লিঙ্গ সমতা নিয়ে একটি সিভিল পার্টনারশিপ বিলের অনুমোদন দিয়েছিল থাইল্যান্ডের ক্যাবিনেট। রাজনীতি থেকে শুরু করে নানা ক্ষেত্রে সমকামীদের (Homosexual) সুযোগ-সুবিধাও দেওয়া হচ্ছে। তবে এ নিয়ে এখনও সরকারের মতবিরোধী আন্দোলন জারি। জারি লিঙ্গ সমতার হয়ে দাবি জানানো।
মাসখানেক আগেই Buku FC-এর সদস্য হয়েছেন ১৬ বছরের ফাদিলা পোনসা। তাঁর কথায়, ফুটবল খেলতে পেরে নিজেকে স্বাবলম্বী ও স্বাধীন মনে হচ্ছে। এর পাশাপাশি তাঁর সাফ বক্তব্য- মনে হয় না, মেয়েদের ফুটবল খেলা বা সমকামিতা নিয়ে ইসলাম ধর্মে কোনও সমস্যা রয়েছে!
তবে Buku FC-র জন্য এই লড়াইটা অনেক বড়। লড়াইটা ধর্মের। লড়াইটা সেক্সুয়াল আইডেনটিটি (Sexual Identity) নিয়ে। ইসলাম তাঁর সেক্সুয়াল আইডেনটিটিকে স্বীকৃতি দেয় না। বলে এটা না কি পাপ! পরিবারও মনে করে এটি ভুল। কিন্তু তিনি নিজের মতো করে থাকতে চান- বলছিলেন শর্টস আর জার্সি পরে দাঁড়িয়ে থাকা ২৬ বছর বয়সী নাজমি তানিঅং। এঁদের সবার লক্ষ্য একটাই- পরিবর্তন আনার!