দেবীর বোধন শুরু হলেই হাতে শাঁখা পরেন এ পরিবারের অবিবাহিত মেয়েরা

Last Updated:

এখানে পুজো হয় বৃহন্নন্দিকেশ্বর পুরাণ মতে ৷ বোধন বসে পুজোর ঠিক ১২ দিন আগে অর্থাৎ কৃষ্ণনবমী তিথিতে আর শেষ হয় দুর্গানবমীতে ৷ পুজো বসলে এ পরিবারের অবিবাহিতা মেয়েরা হাতে শাঁখা পরেন ৷

#আন্দুল: হাওড়া জেলার অন্যতম প্রাচীন এই বনেদি পরিবার ৷ যত দূর জানা যায়, এ পরিবারের মুরারি দত্তবিশ্বাসের কনিষ্ঠ পুত্র দেবদাস দত্ত পিতৃদত্ত ধন সম্পদ গ্রহণ করে সরস্বতী নদীর ধারে কালীন মুজঃফরপুর পরগণার বিস্তীর্ণ জমি অধিগ্রহণ করেন ৷ ২৫২ বিঘা জমিতে নির্মাণ করেন বিরাট প্রাসাদ ৷ দেবদাস দত্ত সঙ্গে করে এনেছিলেন দুলে, জেলে, শবর, ধোপা, ব্রাহ্মণ, নাপিত, কামার, কুমোর, মালাকার জাতির মানুষদের ৷ তাঁর এই জমিদারি দেখে বাংলার সুলতান তাঁকে ‘চৌধুরী’ উপাধি দিয়েছিলেন ৷ তারপর থেকেই এই পরিবার দত্তচৌধুরী পরিবার নামে পরিচিতি পায় ৷
এই গ্রামে পরবর্তীকালে এসেছিলেন নিত্যানন্দ প্রভু ৷ তখন জমিদার কৃষ্ণানন্দ দত্তচৌধুরীর শাসনকাল চলছে ৷ সাদর অভ্যর্থনা জানিয়ে নিত্যানন্দকে জমিদারবাড়িতে নিয়ে আসা হয় ৷ সে সময়ই কৃষ্ণানন্দ গৌড়ীয় বৈষ্ণব মতে দীক্ষিত হয়েছিলেন ৷ সন্ন্যাস নিয়ে পরবর্তীকালে কৃষ্ণানন্দ এই গ্রাম ছেড়ে পুরীতে চলে যান ৷ যাওয়ার আগে তাঁর প্রজাদের বলে যান, নিত্যানন্দের পদস্পর্শে পবিত্র হয়েছে যে গ্রাম তার নাম হোক ‘আনন্দধূলি’ ৷ পরবর্তীতে সেই ‘আনন্দধূলি’ই লোকমুখে আন্দুল হয়ে যায় ৷
advertisement
কৃষ্ণানন্দ সন্ন্যাসী হয়ে যাওয়ার পর তাঁর ছোট ছেলে কন্দরপরামের বড় ছেলে জমিদার রামশরণ দত্তচৌধুরী এই পরিবারে দুর্গোৎসব শুরু করেন ৷ সেটা আনুমানিক ১৫৬৮ সাল ৷ ঘোটকাকৃতি সিংহের উপর উপবিষ্ট সে সময়ের দেবী প্রতিমা পুজো হত খড়ের আটচালাতে ৷ হত পাঁঠাবলিও ৷ পরে এই রামশরণের কনিষ্ঠ পুত্র কাশীশ্বর দত্তচৌধুরী এই আন্দুলেই দিন কাটান ৷ কিন্তু অন্য ভাইরা ছড়িয়ে পড়েছিল এদিক ওদিক ৷ হাটখোলার দত্ত পরিবার এই  দত্তচৌধুরীদেরই বংশধর ৷
advertisement
advertisement
6
কাশীশ্বরের নির্মিত দুর্গাদালান ১৯২৯ সালে একেবারে ধূলিস্যাৎ হয়ে যায় ৷ তখন আবার তৈরি করা হয়েছিল ঠাকুরদালান ৷ দু’দালান ও পাঁচ খিলান বিশিষ্ট সেই দুর্গাদালানে আজও পুজো হয় ৷ এখানে দুর্গা সসিংহ, মহিষমর্দিনী, সাবেকি ডাকের সাজে টানাচৌরি চালচিত্রে মাটির বেদিতে পূজিতা ৷ এই পরিবারের সিংহবাহিনীর নাম ‘দেবী কাশীশ্বরী’ ৷
advertisement
এখানে পুজো হয় বৃহন্নন্দিকেশ্বর পুরাণ মতে ৷ বোধন বসে পুজোর ঠিক ১২ দিন আগে অর্থাৎ কৃষ্ণনবমী তিথিতে আর শেষ হয় দুর্গানবমীতে ৷ পুজো বসলে এ পরিবারের অবিবাহিতা মেয়েরা হাতে শাঁখা পরেন ৷ তবে নোয়া পরতে পারবেন না ৷ পুরীর জিবেগজা প্রসাদের মধ্যে অন্যতম ৷ এ পরিবারের মা দুর্গা অন্নভোগ পান ৷ প্রসাদ বিতরণের সময় সকলে একসঙ্গে বলে ওঠেন, ‘‘বাবা রামশরণের কড়াই ধর’’ ৷
advertisement
মহাষ্টমীর দিন হয় কালো প্রদীপের আরতি ৷ পাঁঠাবলি এখন বন্ধ ৷ তার বদলে হয় আঁখ, চালকুমড়ো এবং চালের পিটুলি দিয়ে তৈরি শত্রু বলি ৷ এখানে ব্রাহ্মণ-অব্রাহ্মণ দু’জন কুমারীকে পুজো করা হয় ৷ দশমীর বিসর্জনের আগে বাড়ির মেয়ে-বৌরা কনকাঞ্জলি নেন ৷ এখন দেবীকে কাঁধে করে নিয়ে যাওয়া হয় বিসর্জনের ঘাটে ৷ বাড়ি থেকে বেরিয়ে মা যান দুলে পাড়ায় ৷ সেখানে দুলে বৌরা দেবীকে বরণ করেন ৷ তারপর আবার শোভাযাত্রা করে দেবীকে চৌধুরী  পাড়ায় নিয়ে আসা হয় ৷ তারপর পরিবারের পুকুরেই হয় প্রতিমা নিরঞ্জন ৷ তবে পরিবারের কোনও মহিলা এখন বিসর্জনের শোভাযাত্রায় যেতে পারেন না ৷
advertisement
তথ্য সহায়তা: ধ্রুব দত্তচৌধুরী
বাংলা খবর/ খবর/ফিচার/
দেবীর বোধন শুরু হলেই হাতে শাঁখা পরেন এ পরিবারের অবিবাহিত মেয়েরা
Next Article
advertisement
'আমি শিবভক্ত, সব বিষ গিলে নিই...', অসমের জনসভায় বললেন মোদি, তাঁর 'রিমোট কন্ট্রোল' কে? চিনিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী!
'আমি শিবভক্ত, সব বিষ গিলে নিই...', 'রিমোট কন্ট্রোল' কে? অসমের জনসভায় চিনিয়ে দিলেন মোদি
  • অসমের জনসভায় কংগ্রেসকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করলেন প্রধানমন্ত্রী

  • মোদি বলেন, জনগণই তাঁর আসল প্রভু এবং তাঁর ও ‘রিমোট কন্ট্রোল বা নিয়ন্ত্রক’

  • অসমের দরং ও গোলাঘাটে ১৮,৫৩০ কোটি টাকার প্রকল্পের উদ্বোধন

VIEW MORE
advertisement
advertisement