ভূতে পাওয়া কলকাতা, কিস্তি ২: সমস্ত নিস্তব্ধতাকে চিরে একটা তীব্র আওয়াজ উঠেছিল--চিঁহি চিঁহি...

Last Updated:
#কলকাতা: কলকাতার আনাচেকানাচে তখন সন্ধে, নিশুতি রাতে ভূতের চলাফেরা! দিনে বেলাতেও তেঁনাদের দেখা গিয়েছিল। এই যে চিঠি-ঘর, ইংরেজিতে যাকে বলে জিপিও, এখানে ভূতেদের আনাগোনা, চলাফেরা চোখে পড়ার মতোই! এঁদের জন্যই 'ভূতুড়ে চিঠি'--'ঘোস্ট লেটারস' কথাটির উৎপত্তি কীনা কে জানে! ২৪ ঘণ্টা ধরে কাজ হয় এখানে। তারই মধ্যে কেউ কেউ নাকি দেখতে পেতেন টেবিলের পাশ দিয়ে সাঁ-করে কেউ চলে যাচ্ছে! প্রথম প্রথম কর্মীরা শিউরে উঠতেন, নিজের চেয়ারে সেঁটে বসে থাকতেন। পরে বুঝতে পারেন, এরা 'হার্মফুল' নন! তখন খানিক স্বস্তি! তবুও একটা শিরশিরে ভয় রয়ে যেতই ! পারতপক্ষে কেউ একা থাকতেন না! কাছাকাছি জড়ো হয়ে থাকতেন। কোণের ঘরটাতে কেউ কেউ শুনতে পেতেন নূপুরনিক্কণ! পাতা-ঝরা হাওয়ার সঙ্গে স্বনিত হত কোনও বুকফাটা দীর্ঘশ্বাস! কেউ-বা শুনেছেন আলতো পায়ে সিঁড়ি দিয়ে আলগা চলনের ধ্বনি...
এখানকার এক প্রাক্তন কর্মী নানা কিসিমের অভিজ্ঞতার কথা বলতেন! একদিন বর্ষার রাতে... বলতে গিয়েও তিনি থেমে গিয়েছিলেন...'সামকো বেহেশতিদের নিয়ে কুনো বাৎচিৎ করতে হয় না...! জিন একবার খেপে গেলে যে কী করে আউর কী করতে পারে তা হামি হামার গাঁয়ে দেখেছি'... তবু তিনি ফিরলেন সেই বর্ষার রাতের অভিজ্ঞতায়, সেদিন তাঁর নাইট ডিউটি ছিল। কেরানিবাবুও ছিলেন, ''বহুত পার্সেলও ছিল...'' কেমন আতঙ্কে কেঁপে কেঁপে উঠেছিলেন তিনি ...
advertisement
advertisement
সেদিন উত্তর-পশ্চিম কোণের করিডরে সমস্ত নিস্তব্ধতাকে চিরে একটা তীব্র আওয়াজ উঠেছিল--চিঁহি চিঁহি...অন্যরা কেউ শুনতে পাচ্ছিল না! কিন্তু সেই কর্মী অজ্ঞান হয়ে যান! তিনি দেখেছিলেন সারি সারি তেজীয়ান ঘোড়াদের মাথা দোলানো! ওঁরা ছিল ঘোড়া ভূত! ওরা ছিল সিরাজের আস্তাবলের ঘোরা! ওই যায়গায়ই যে ছিল সিরাজের নাচমহল!
বিচিত্র সব শব্দ আর উদ্ভট ঘটনার রাজ সাক্ষী ভারতীয় জাদুঘর ও তার আশপাশের এলাকা। একবার জাদুঘরের ছাদের স্কাইলাইন পরিষ্কার করতে গিয়ে দুটি শোকেসের মাঝে চাপা পড়ে মারা যান এক দিনমজুর। সেই ঘটনার পর কেটে গিয়েছে বহু বছর! কিন্তু আজও যাদুঘরের বহু নাইটগার্ড দেখতে পান, রাতের অন্ধকারে কে যেন কাপড় মুড়ি দিয়ে বেড়িয়ে যায় প্রধান ফটক থেকে বা নেমে আসে ছাদের সিঁড়ি বেয়ে। এখনও নাকী মধ্যরাতে নর্তকীর নাচের শব্দ ভেসে ওঠে মিউজিয়ামের কোনও কোনও ঘর থেকে।
advertisement
কলকাতা জাদুঘরের ঠিক পাশেই সদর স্ট্রিট! সেখানে একসময়ে ছিল ভারতের প্রথম গভর্নর জেনারেল ওয়ারেন হেস্টিংস-এর মেম্বার কাউন্সিলের সদস্য স্পিকস সাহেবের বাংলো। একদিন সাহেবের বাংলোতে একটি আর্জি নিয়ে আসেন এক শিখ যুবক। যুবকের সঙ্গে সাহেবের তীব্র কথাকাটাকাটি হয়। তারপরই গুলির শব্দ... গুম গুম গুম! পরপর তিনবার! মাটিতে লুঠিয়ে পড়ে যুবকের রক্তাক্ত নিথর দেহ।
আজও কোনও কোনও নিশুথি রাতে ফিরে আসে সেদিনের স্মৃতি! রাতের নিস্তব্ধতা ফুঁড়ে সদর স্ট্রিটের রাস্তায় শোনা যায় ক্ষিপ্র গলায় কথাকাটাকাটি, গুলির আওয়াজ...
advertisement
জাদুঘর থেকে খানিক দূরেই রেসের মাঠ! উলটো দিকে পুলিশ ট্রেনিং স্কুল। রাতে ওই অঞ্চলে যেতে ডড়ান ট্যাক্সি চালকেরা! বলেন, হাত দেখিয়ে গাড়ি থামান এক পুলিশ! পিছনের সিটে বসেন। নেমে যান চিড়িয়াখানার সামনে...। তারপরেই 'ভ্যানিশ'! যেমন
গাঢ় অন্ধকারের মধ্যে মিলিয়ে যায় বাগবাজারের গিরিশ ঘোষের বাড়ির মধ্যে থেকে 'ও বিনু, বিনু এলি!' ডাক! অনেকেই বলেন, আজও নাকি গিরিশ ঘোষ নটী বিনোদিনীকে ডাকেন!
advertisement
ভূতে পাওয়া কলকাতা, কিস্তি ১ পড়তে ক্লিক করুন--ভূতে পাওয়া কলকাতা, কিস্তি ১: একটা হাত ঝুলছে পালকির বাইরে, কাঁধ থেকে বইছে রক্ত...
view comments
বাংলা খবর/ খবর/ফিচার/
ভূতে পাওয়া কলকাতা, কিস্তি ২: সমস্ত নিস্তব্ধতাকে চিরে একটা তীব্র আওয়াজ উঠেছিল--চিঁহি চিঁহি...
Next Article
advertisement
Australia Woman Cricketer Molestation: বিশ্বকাপ খেলতে আসা অস্ট্রেলিয়ার মহিলা ক্রিকেটারের শ্লীলতাহানি, ইনদৌরের রাস্তায় কী ঘটল? ধৃত অভিযুক্ত
বিশ্বকাপ খেলতে আসা অস্ট্রেলিয়ার মহিলা ক্রিকেটারের শ্লীলতাহানি, ইনদৌরের রাস্তায় কী ঘটল?
  • অস্ট্রেলিয়ার মহিলা ক্রিকেটারের শ্লীলতাহানি৷

  • ইনদৌরের রাস্তায় আক্রান্ত দুই মহিলা ক্রিকেটার৷

  • অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল পুলিশ৷

VIEW MORE
advertisement
advertisement