Durga Puja 2021| Sacramento Ankur Puja : সাজছে স্যাক্রামেন্টো! করোনা আবহে প্রবাসী পুজোর জমজমাট কাউন্টডাউন শুরু...
- Published by:Sanjukta Sarkar
Last Updated:
Durga Puja 2021 : কলকাতা থেকে হাজার হাজার মাইল দূরেও বেজে ওঠে শারদীয়া সুর। করোনা-কাঁটা সত্বেও যাবতীয় বিধি নিষেধ মেনে পুজোর আনন্দে ভেসে যায় বাঙালি মন।
#স্যাক্রামেন্টো : নর্দান ক্যালিফোর্নিয়াতে পাহাড়ে ঘেরা সেন্ট্রাল ভ্যালির অন্যতম শহর ক্যালিফোর্নিয়ার (California) রাজধানী স্যাক্রামেন্টো (Sacramento)। ইন্টেল, ব্লু শিল্ড, কাইজার, ডিগনিটি ইত্যাদির দৌলতে একটা 'মাল্টি-কালচারাল আরবান হাব' হিসেবে গড়ে উঠেছে জনবসতি। একসময় সানফ্রান্সিসকো (San Francisco) 'বে এরিয়া'-তে একটি বা দুটি বাঙালি সংগঠন (Sacramento Ankur Puja) থাকলেও আজ অন্তত ১২ থেকে ১৫ টি বাঙালি সংগঠন রয়েছে এই এলাকায়।
লোকেশন-এর মাহাত্ম্যও কম নয়। পশ্চিমে শিয়ারা নেভাডার পাদদেশে পাইনের জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে হাইওয়ে চলে গিয়েছে নৈসর্গিক লেক তাহই-তে। ফ্রান্সিস্কো কোর সমুদ্রতট, নাপা ওয়াইন ভ্যালি, প্রাচীন সিকুইয়া ফরেস্ট, আর অসংখ্য লেক ঢিল ছোড়া দূরত্বে। মন চাইলেই বেরিয়ে পড়া যায় স্ট্রিয়ারিংএ হাত রেখে।
মেডিকেল এবং আইটি ইন্ডাস্ট্রির দৌলতে স্যাক্রামেন্টোতে (Sacramento) থাকেন অসংখ্য ভারতীয়। তাদের মধ্যে ভারতীয় বাঙালি প্রায় ১০০ ঘর আর বাংলাদেশি ধরলে আরও একশ পরিবার। ১৫ বছর আগে এরই মধ্যে কিছু বাঙালি মিলে যেই অঙ্কুর টি রোপণ করেছিল সেটা এখন মহীরুহ। অঙ্কুর স্যাক্রামেন্টোর (Sacramento Ankur Puja) অন্যতম বাঙালি সাংস্কৃতিক সংগঠন।
advertisement
advertisement

সারা বছর ধরে চলে অঙ্কুরের (Sacramento Ankur Puja) তেরো পার্বণ। সরস্বতী পুজো, দুর্গাপুজো, অ্যানুয়াল স্পোর্টস পিকনিক, ক্যাম্পিং, দোল পূর্ণিমা, বৈশাখী। বাদ যায় না কিছুই। তবে শারদীয়া দুর্গা পুজোতে (Durga Puja 2021) যা সমাগম হয় সেটা নস্টালজিক প্রবাসী বাঙালির সাংস্কৃতিক মনস্কতার এক অনবদ্য ছবি সেকথা বলাই বাহুল্য।
advertisement
পুজোটা হয় কোন এক সপ্তাহশেষে অর্থাৎ উইকেন্ডে। প্রকৃত দুর্গাপূজার (Durga Puja 2021) তারিখের কাছাকাছি একটা শনি-রবি বেছে নেওয়া হয় পুজোর জন্য। খেয়াল রাখা হয় যাতে কর্মব্যস্ত বাঙালিরা প্রত্যেকেই অংশগ্রহণ করতে পারেন। আবার শারদীয়া আমেজটাও মনের আনাচে কানাচে থাকে তার সব রুপ-রস-গন্ধ নিয়ে।

advertisement
পুজো মোটে আড়াই দিন হলেও তার তোড়জোড়, আয়োজন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, প্রতিযোগিতা সবকিছুর মহড়া চলে পুজোর অন্তত তিন চার মাস আগে থেকে। ওইযে ফলসম হাইস্কুলের পেছনে স্টেজে কোমরে আঁচল বেঁধে দাপটে চেঁচিয়ে বেড়াচ্ছেন বঙ্গ তনয়া, উনি আসলে ভূত। হ্যাঁ, এবারকার পুজোর বাঙালি নাটক ভূতেশ্বর কো-অপারেটিভ সোসাইটির কর্ণধার, উনি মিস শাকচুন্নি।
আবার ওদিকে মাঠের পাশে রাবীন্দ্রিক ছন্দে যারা কোরিওগ্রাফি করছেন তাঁদের নিষ্ঠা কিন্তু বিশেষ কম নয়। আর নিষ্ঠার কথা বলতে গেলে বলতে হবে আমাদের পুরুত মশাইদের কথা। পুরোহিত নিয়ে অঙ্কুরে একটা সময় বেশ বেগ পেতে হত কয়েক বছর আগে পর্যন্ত। তাই শেষমেষ অঙ্কুরের বাঘা বাঘা সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার ডাক্তারদের পাঠানো হয়েছিল 'পুরোহিত ট্রেনিং'- এ। আজকাল তাই পুরোহিতের ছড়াছড়ি।
advertisement

আমেরিকার সম্বন্ধে বাইরে লোকে যতই উন্নাসিকতার দেখান না কেন, এখানকার গভর্মেন্ট ভিনদেশের সংস্কৃতির কিন্তু বড়ই পৃষ্ঠপোষক। তাই প্রাদেশিক 'কালচার'কে অনুপ্রেরণা দেওয়ার জন্য ছোট ছোট শহরের বাজেটেও বিশেষ অনুদান থাকে। তাই মেম্বারদের চাঁদা ছাড়াও অঙ্কুরের বাজেট কিন্তু বেশ ভালই।
advertisement
দুর্গাপুজো ঘিরে দুদিন ধরে অনুষ্ঠান যা হয়, স্টেজ, সাউন্ড, হল, লাইট এবং ম্যানেজমেন্ট সব প্রফেশনাল মানসম্পন্ন। আর না হলেই বা চলবে কী করে? ফি বছর বাঘা বাঘা শিল্পীরা যে কলকাতা থেকে উড়ে আসেন। তাই দশটা ট্রাঙ্ক ভর্তি সাউন্ডের যন্ত্রপাতিতে কাউকে হাত লাগাতে দেন না শুদ্ধসত্ত্ব ওরফে আমাদের সুড ঘোষ।
গানের প্রোগ্রাম বাচ্চাদের ড্রইং কম্পিটিশন ইত্যাদি নিয়ে কালচারাল টিম-এর পুজোর আগের কয়েকদিন নাওয়া খাওয়া বন্ধ হওয়ার যোগার। একতারা কাগজ হতে সবুজ পাঞ্জাবি আর জহর কোট পরে দেবাশীষের দৌড় আর শ্রীতমার হাঁকডাক অনেকটা 'দাদার কীর্তি'তে প্রবাসী পুজোর কথা মনে করিয়ে দেয়।
advertisement

আর এভাবেই কলকাতা থেকে হাজার হাজার মাইল দূরেও বেজে ওঠে শারদীয়া সুর। আর করোনা-কাঁটা সত্বেও যাবতীয় বিধি নিষেধ মেনে পুজোর আনন্দে ভেসে যায় বাঙালি মন। ঢ্যাং কুড় কুড় ঢাকের বাদ্দি, অষ্টমীর অঞ্জলি, একসঙ্গে ভোগ খাওয়া, সিঁদুর খেলা আর তার পর নাটক-নাচ-গান। কদিন যেন দেশের মাটির গন্ধে ভরে যায় স্যাক্রামেন্টোর বাতাস। শিউলির গন্ধও কি ভেসে আসে?
তথ্য ও ছবি : দেবরাজ গঙ্গোপাধ্যায়
(দেবরাজ গত ১৫ বছর ধরে স্যাক্রামেন্টোর বাসিন্দা।)
Location :
First Published :
August 30, 2021 4:09 PM IST