Explained: ইক্যুইটিতে বিনিয়োগ করতে চাইছেন? যা যা জানা দরকার!
- Published by:Dolon Chattopadhyay
Last Updated:
যদি কেউ লং টার্ম বা দীর্ঘ মেয়াদি সুবিধার জন্য বিনিয়োগ করতে ইচ্ছুক থাকে তাহলে সেই বিনিয়োগকারীর উচিত সরাসরি ইক্যুইটিতে বিনিয়োগ করা।
#কলকাতা: প্রতিটি মানুষের অর্থ সঞ্চয় করা অন্যতম দায়িত্ব। কারণ নিজের ও প্রিয়জনদের আগামী দিন যাতে সুরক্ষিত হয় তার জন্যই সঞ্চয় করা উচিত। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, প্রতিটি মানুষ যা রোজকার করেন সেই অর্থের ২৫ শতাংশ সঞ্চয় করা দরকার। এবং অত্যন্ত কম বয়স থেকেই সঞ্চয় শুরু করা দরকার। সেই হিসেবে অনেকেই আছেন, যাঁরা অর্থ উপার্জনের শুরু থেকেই সঞ্চয় করতে শুরু করেন।
অর্থ সঞ্চয় করা নিয়েও অনেকের মনে অনেক প্রশ্ন থাকে। কোথায় কত সুদ, কোথায় অর্থ সঞ্চয় করলে তুলনামূলক বেশি রিটার্ন পাওয়া যাবে? কোথায় ঝুঁকি কম, শেয়ার বাজার না- মিউচুয়াল ফান্ড, কোথায় বিনিয়োগ করা সঠিক সিদ্ধান্ত- এই ধরনের যাবতীয় প্রশ্ন থাকে। কিন্তু সঠিক উত্তর না পেয়ে অনেকেই অনেক সময় ভুল জায়গায় বিনিয়োগ করেন। ফলস্বরূপ যা হয় তা হল, তুলনামূলক কম রিটার্ন অথবা বিনিয়োগের পুরো টাকাটাই ক্ষতি। ইক্যুইটিতে (Equity) বিনিয়োগ নিয়ে যাবতীয় তথ্য তুলে ধরা হল এই প্রতিবেদনে।
advertisement
advertisement
যদি কেউ লং টার্ম বা দীর্ঘ মেয়াদি সুবিধার জন্য বিনিয়োগ করতে ইচ্ছুক থাকে তাহলে সেই বিনিয়োগকারীর উচিত সরাসরি ইক্যুইটিতে বিনিয়োগ করা। কারণ দীর্ঘ মেয়াদি ক্ষেত্রে বা লং টার্মের ক্ষেত্রে ইক্যুইটি থেকে যে পরিমাণ রিটার্ন পাওয়া যায় অন্য কোনও বিনিয়োগে সেই অনুযায়ী রিটার্ন পাওয়া যায় না। অনেকেই আছেন যাঁরা সুরক্ষার কথা ভেবে এবং নিশ্চিত রিটার্নের কথা ভেবে সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পে বিনিয়োগ করেন। তার মধ্যে রয়েছে ফিক্সট ডিপোজিট (FD) এবং অন্য আরও বিনিয়োগ প্রকল্প। কিন্তু যদি বিশ্লেষণ করে দেখা যাবে ওই রিটার্নগুলি ম্যাচিওর বা প্রকল্পগুলির মেয়াদ শেষ হওযার পর যে পরিমাণ টাকা রিটার্ন হিসেবে পাওয়া যাবে তার মধ্যে বেশ কিছুটা অংশ ট্যাক্স হিসেবে কেটে নেওয়া হয়। ফলে দেখা যায় বিনিয়োগ করার পর যে পরিমাণ রিটার্ন আশা করা হয় তার অনেকটা কম রিটার্ন পাওয়া গিয়েছে। সব দিক বিচার করে বিশেষজ্ঞদের মত, ইক্যুইটিতে বিনিয়োগ করা সবথেকে ভালো সিদ্ধান্ত। ইক্যুইটিতে বিনিয়োগ করার আগে বেশ কয়েকটি বিষয় জেনে নেওয়া যাক-
advertisement
কী ভাবে ইক্যুইটিতে বিনিয়োগ করা সম্ভব?
সরাসরি মিউচুয়াল ফান্ডের মাধ্যমে- যদি কেউ সরাসরি ইক্যুইটিতে বিনিয়োগ করতে চান তাহলে তাঁকে ডি ম্যাট (Demat) অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। এবং সেই অ্যাকাউন্ট থেকে সরাসরি বিনিয়োগ করতে হবে। কিন্তু, প্রথম প্রথম যখন কেউ ইক্যুইটিতে বিনিয়োগ করতে ইচ্ছুক তাঁর ক্ষেত্রে সরাসরি বিনিয়োগ করা সঠিক সিদ্ধান্ত হবে না। কারণ, বিনিয়োগের আগের বাজার সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকতে হবে বিনিয়োগকারীর। বিনিয়োগের খুঁটিনাটি সম্পর্কেও জেনে রাখা দরকার। সাধারণত দেখা যায় বিনিয়োগের প্রথমের দিকে বিনিয়োগকারীদের এই ধারণাগুলি থাকে না।
advertisement
কোনও রকম ধারণা ছাড়া কেউ যখন কোনও বিনিয়োগকারী সরাসরি ইক্যুইটিতে বিনিয়োগ করেন তখন বড় অঙ্কের টাকার লোকসানের সম্ভাবনা থাকে। সে কারণে বিনিয়োগকারীরা মিউচুয়াল ফান্ডের মাধ্যমে ইক্যুইটিতে বিনিয়োগ করতে পারেন। কারণ মিউচুয়াল ফান্ডের ক্ষেত্রে একজন করে ফান্ড ম্যানেজার থাকে। যিনি প্রতিটি বিনিয়োগ কারীর টাকা একত্রিত করে বিভিন্ন কম্পানির বিভিন্ন শেয়ারে বিনিয়োগ করেন।
advertisement
ইনভেস্টমেন্টের সময়সীমা বা বিনিয়োগ করার সময়সীমা
ইক্যুইটি মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ দীর্ঘ সময় ধরে করতে হবে। তবেই ভালো রিটার্নের আশা করা যায়। যদি মাত্র কয়েক মাস বা বছরের জন্য বিনিয়োগ করা হয় সেক্ষেত্রে রিটার্নের পরিমাণ অত্যন্ত কম হয়। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন মিউচুয়াল ফান্ডে কমপক্ষে ১০ থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত বিনিয়োগ করতে হবে। কারণ ইক্যুইটির বাজার সব সময় সমান যায় না। কখনও বাজার বৃদ্ধি পায়, কখনও বাজার মন্দা যায়। এর ফলে অল্পমেয়াদী ক্ষেত্রে অত্যন্ত কম রিটার্ন পাওয়া যায়। শুধু তাই নয়, কম দিনের মধ্যে বিনিয়োগ করা অর্থ তুলতে চাইলে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থও কেটে নেওয়া হয়।
advertisement
কোন ধরনের ফান্ডে বিনিয়োগ করা উচিত?
বাজারে প্রচুর ইক্যুইটি মিউচুয়াল ফান্ড রয়েছে। সেই সমস্ত মিউচুয়াল ফান্ডকে মূলত তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়। প্রথমত, লার্জ ক্যাপ (Large Cap), মিড ক্যাপ (Mid Cap), স্মল ক্যাপ (Small Cap)। নামের মধ্যেই এই তিন ধরনের মিউচুয়াল ফান্ডের গুরুত্ব বোঝানো রয়েছে। লার্জ ক্যাপ মিউচুয়াল ফান্ড হল সেই সব মিউচুয়াল ফান্ড যেগুলি সাধারণত বড় বড় সংস্থাগুলির সঙ্গে বিনিয়োগ করে। সাধারণ বাজারে বিভিন্ন সংস্থাকে নিয়ে যে তালিকা প্রস্তুত করা হয় সেই তালিকার ১ নম্বর থেকে ১০০ নম্বরের মধ্যে ওই কম্পানিগুলি থাকে। মিড ক্যাপ মিউচুয়াল ফান্ড হল সেই সব মিউচুয়াল ফান্ড যেগুলি মূলত মাঝারি মাপের কম্পানিতে বিনিয়োগ করে। মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশনের তালিকা অনুযায়ী এই সংস্থাগুলি ১০১ থেকে ২৫০-র মধ্যে থাকে। সব শেষে আসে স্মল ক্যাপ। যেগুলি মূলত ওই তালিকার ২৫০ এর পরে থাকে।
advertisement
বাজার কমা-বৃদ্ধির দিকে বিচার করলে দেখা যাবে লার্জ ক্যাপ মিউচুয়াল ফান্ডের রিস্ক বা ঝুঁকি কম। তুলমামূলক ভাবে স্মল ক্যাপ এবং মিড ক্যাপের ক্ষেত্রে বাজারগত ঝুঁকি তুলনায় বেশি। কিন্তু রিটার্নের দিকে বিচার করলে দেখা যাবে স্মল এবং মিড ক্যাপের ক্ষেত্রে রিটার্ন তুলনামূলক ভালো। তাই কোনও মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করার আগে বোঝা দরকার বিনিয়োগকারী কতটা ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত। যদি কোনও বিনিয়োগকারী তুলনামূলক কম ঝুঁকি নিতে চান তাহলে তাঁর ক্ষেত্রে উচিত এমন ফান্ডে বিনিয়োগ করা যেখানে লার্জ ক্যাপ কম্পানি জড়িত রয়েছে। অথবা মাল্টি ক্যাপ ফান্ডে বিনিয়োগ করা উচিত। যেখানে লার্জ ক্যাপ, মিড ক্যাপ এবং স্মল ক্যাপ কম্পানি রয়েছে। মাল্টিক্যাপ ফান্ডে রিটার্ন থাকে অনেক বেশি। তুলনামূলক লার্জ ক্যাপ ফান্ডে কম রিটার্ন পাওয়া যায়। যাঁরা অত্যন্ত কম বয়স থেকে বিনিয়োগ করছেন বা বিনিয়োগের কথা ভাবছেন তাঁদের স্মল অথবা মিড ক্যাপ ফান্ডে বিনিয়োগ করা উচিত।
ট্যাক্স ছাড়
কোনও বিনিয়োগকারী যদি ট্যাক্সে ছাড় নিতে চান তাহলে তাঁর ইক্যুইটি লিঙ্কট সেভিংস স্কিমে (ELSS) বিনিয়োগ করা উচিত। যদি কোনও বিনিয়োগকারী পর পর ৩ বছর বিনিয়োগ করেন সেক্ষেত্রে ৮০ সি (80 C) ধারায় এক্ষেত্রে ট্যাক্স মকুব সম্ভব ।
SIP করা উচিত না একসঙ্গে বড় অঙ্কের টাকা বিনিয়োগ করা উচিত?
মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করার শুরুর দিকে SIP-তে বিনিয়োগ করা উচিত। কারণ বাজারের উপরের নির্ভর করে ইউনিটের দাম নির্ভর করে। সেক্ষেত্রে এককালীন বড় অঙ্কের টাকা বিনিয়োগ করে যে পরিমাণ ইউনিট পাওয়া যেতে পারে, পরবর্তীতে ইউনিটের দাম কমলে সম পরিমাণ টাকায় বেশি পরিমাণ ইউনিট পাওয়া যেতে পারে। তাই SIP করা উচিত।
Location :
First Published :
October 05, 2021 8:30 AM IST