Explainer: Covid 19-র পাশাপশি Viral Fever-র প্রকোপ বাড়ছে, যে যে বিষয় মাথায় রাখতে হবে...
- Published by:Debalina Datta
Last Updated:
কোভিড ১৯ ( covid 19) আটকাতে যে সব পদক্ষেপগুলি নেওয়া নেওয়া হচ্ছে সেই নিয়ম মেনে চললেই কি সাধারণ জ্বর (Viral Fever) থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব?
#কলকাতা: প্রায় প্রতিদিনই করোনায় (Covid 19) আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে অন্য বিভিন্ন রোগেও আক্রান্ত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। বিভিন্ন জটিল রোগ থেকে শুরু করে সাধারণ জ্বর সর্দি ও হচ্ছে অনেকের। আর এতেই চিন্তায় অনেকে। সাধারণ জ্বরকে (Viral Fever) অনেকেই করোনা জ্বরের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলছেন। বাড়ছে মানসিক চিন্তা। তবে এটাও ঠিক বর্তমান পরিস্থিতিতে সাধারণ জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। তাই বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, জ্বর হলে চিন্তা না বাড়িয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।
শুধু আমাদের দেশেই নয়, গোটা বিশ্বেই সাধারণ জ্বরের প্রকোপ বাড়ছে। এর ফলে অনেকেই বুঝে উঠতে পারছেন না সেটি সাধারণ জ্বর না কি কোভিড। তবে সে যাই হোক, বিশেষজ্ঞরা বলছেন নিয়ম মেনে সাবধানে থাকলে জ্বর থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। ভাইরাস যাতে মানবদেহে না ঢুকতে পারে সেই দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে, তাহলেই জ্বরের প্রকোপ অনেকটাই কমানো সম্ভব হবে।
advertisement
advertisement
এখানেই অনেকের প্রশ্ন- কোভিড ১৯ আটকাতে যে সব পদক্ষেপগুলি নেওয়া নেওয়া হচ্ছে সেই নিয়ম মেনে চললেই কি সাধারণ জ্বর থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব? এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে এই প্রতিবেদনে।
advertisement
সাধারণ জ্বর এবং কোভিডের মধ্যে পার্থক্য কী?
মানবশরীরে ভাইরাস আক্রমণের ফলে সাধারণ জ্বর এবং কোভিড (Covid 19) সংক্রমণ দেখা দেয়। সাধারণ জ্বরের (Viral Fever) ক্ষেত্রে মূলত ইনফ্লুয়েঞ্জা (Influenza) ভাইরাসের আক্রমণের ফলে সংক্রমণ হয়।
কিন্তু কোভিড ১৯ SARS-COV-2 ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হয়। কোভিড ১৯-এর ক্ষেত্রে জ্বর এবং অন্যান্য উপসর্গ যেমন দেখা যায়, সাধারণ জ্বরের ক্ষেত্রেও প্রায় একই উপসর্গ দেখা যায়। কিন্তু অনেক সময় করোনায় আক্রান্তদের শারীরিক অবস্থা খুব দ্রুত খারাপ হতে পারে। কিন্তু সাধারণ জ্বরের ক্ষেত্রে অতীতে কোনও অসুখ না থাকলে শারীরিক অবস্থা খুব একটা জটিল হয় না। পাশাপাশি সাধারণ জ্বরের ক্ষেত্রে সাধারণত শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা দেখা দেয় না।
advertisement
বর্তমান সময়ে কেন সাধারণ জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত হারে বাড়ছে?
সারা বিশ্বে যখন কোভিড ভয়ঙ্কর আকার নিয়েছে ঠিক সেই সময় অন্যান্য রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ছে। যেমন ডেঙ্গি, সোয়াইন ফ্লু, সাধারণ জ্বর ইত্যাদি। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন প্রতি বছরই সাধারণত সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত এই ধরনের রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। তাদের যুক্তি যেহেতু এই সময়ে ঋতু পরিবর্তন হয় এবং আবহাওয়ার দিক থেকে বেশ কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায় সে কারণে এই রোগগুলির প্রাদুর্ভাব ঘটে। এবং নির্দিষ্ট সময় পর নিজে থেকেই এই রোগগুলি চলে যায়।
advertisement
আরও পড়ুন - Post office scheme: ১০ হাজার টাকা জমা করে পেয়ে ম্যাচিউরিটিতে পান ১৬ লক্ষ টাকা, পোস্টঅফিসের মালমাল স্কিম
সাধারণ জ্বর এবং কোভিডের ক্ষেত্রে কোন কোন উপসর্গগুলি মাথায় রাখা উচিত?
দু'টি অসুখের ক্ষেত্রে উপসর্গ গুলি সাধারণত একই। এক্ষেত্রে যে যে উপসর্গগুলি দেখলে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত সেগুলি হল-
advertisement
জ্বর (Viral Fever), গা হাত পায়ের যন্ত্রণা, ঠাণ্ডা লাগা, কাশি, মাথা ব্যথা, ক্লান্তি- এই ধরনের উপসর্গগুলি দেখা দিলে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। তবে কিছু কিছু সময় কোভিড ১৯-এর (Viral Fever) ক্ষেত্রে কিছু ভিন্ন উপসর্গ প্রকাশ পায়। তার মধ্যে রয়েছে নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, কোনও খাবারে স্বাদ না পাওয়া, গন্ধ না পাওয়া, ব়্যাশ বের হওয়া ইত্যাদি।
advertisement
একই সময়ে করোনাভাইরাস এবং সাধারণ জ্বরে আক্রান্ত হওয়া সম্ভব?
সাধারণ জ্বর সাধারণত মানবদেহে দুই থেকে চার দিন পর্যন্ত থাকতে পারে। অন্য দিকে, করোনাভাইরাস দুই থেকে চোদ্দ দিন পর্যন্ত মানবদেহে থাকার সম্ভাবনা। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে একই সময়ে কোভিড এবং সাধারণ জ্বরের ভাইরাসের মানবদেহে আক্রমণ হতে পারে। বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করেছেন যদি সঠিকভাবে সাধারণ জ্বরের মোকাবিলা করা সম্ভব না হয় তাহলে এই করোনা পরিস্থিতিতে তা ভয়ঙ্কর রূপ নিতে পারে।
সাধারণ জ্বর থেকে বাঁচতে কী কী সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত?
যেহেতু দু'টোই ভাইরাসজনিত অসুখ তাই সে ক্ষেত্রে উভয়ের ক্ষেত্রেই প্রায় একই সাবধানতা অবলম্বন করা দরকার। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সাবধানতা অবলম্বন করলেই এই দু'টি রোগ থেকে অনেকটাই দূরে থাকা সম্ভব। ভাইরাস যদি মানবদেহে না ঢুকতে পারে তাহলে এই দু'টি রোগ আক্রমণ করতে পারবে না। তাই সে ক্ষেত্রে করোনার জন্য যে যে সাবধানতা অবলম্বন করা দরকার, সাধারণ জ্বরের ক্ষেত্রেও একই সাবধানতা অবলম্বন করা যেতে পারে। কী কী সাবধানতা মেনে চলতে হবে?
করোনা থেকে বাঁচতে যেমন নিয়মিত হাত ধোয়ার কথা চিকিৎসকরা বলেছেন সাধারণ জ্বরের ক্ষেত্রেও একই পরামর্শ দিয়েছেন তারা। বার বার ভালো করে হাত ধুতে হবে। ব্যবহার করতে হবে সাবান বা হ্যান্ডওয়াশ। প্রতিবার যে কোনও কিছু খাওয়ার আগে সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। সাবান বা জলের ব্যবস্থা না থাকলে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা যেতে পারে।
নাক, মুখ, চোখে যতটা সম্ভব কম হাত দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। কারণ এই তিনটি অঙ্গ দিয়ে ভাইরাস মানবদেহে প্রবেশ করে। বাইরে বেরোলে মাস্ক পড়তে হবে। নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে অপর ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলতে হবে। বাড়ির বাইরে বেরোলে যেখানে সেখানে হাত দেওয়া চলবে না। প্রচুর জনসমাগম হয় এমন জায়গা এড়িয়ে চলতে হবে। কারণ এই ধরনের জায়গায় ভাইরাস সংক্রমণ বেশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
এখন কি সাধারণ জ্বরের ভ্যাকসিন দেওয়া উচিত?
বর্তমানে কোভিড সংক্রমণ থেকে বাঁচতে দ্রুত হারে টিকাকরণের প্রক্রিয়া চলছে। এই পরিস্থিতিতে সাধারণ জ্বরের টিকা নেওয়া প্রয়োজন কি না তা নিয়ে অনেকেই চিন্তিত। বিশেষজ্ঞদের মতে কোভিড ১৯ ভ্যাকসিন সাধারণ জ্বর থেকে যেমন বাঁচাতে পারবে না তেমনই সাধারণ জ্বরের ভ্যাকসিন কোভিডের হাত থেকে রক্ষা করতে পারবে না। তাই উভয় ভ্যাকসিন নেওয়া জরুরি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সাধারণ জ্বরের ভ্যাকসিন বহু বছর থেকে দিয়ে আসা হচ্ছে এবং প্রত্যেক বছরই সেই ভ্যাকসিনের উন্নতিকরণ করা হচ্ছে। বিভিন্ন রিপোর্টে প্রকাশ যদি একই সময়ে করোনা ভ্যাকসিন এবং সাধারণ জ্বরের ভ্যাকসিন নেওয়া হয় সে ক্ষেত্রে কোনও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়নি।
এই সব কিছুর মধ্যেও বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ এই পরিস্থিতিতে সুষম আহার গ্রহণ এবং ধূমপানসহ বিভিন্ন নেশা দ্রব্য বর্জন করা উচিত। কেন না, ধূমপানসহ বিভিন্ন নেশাদ্রব্য গ্রহণ করলে শরীরে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে। যার ফলে রোগ মুক্তি হতে বেশ কিছুটা দেরি হয়। নিয়মিত প্রোটিন জাতীয় খাবার এবং শাকসবজি খাওয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
Location :
First Published :
September 24, 2021 3:04 PM IST