Explained: সর্ষের তেল খাচ্ছেন? অতিরিক্ত খেলে কী হয় জানুন
- Published by:Siddhartha Sarkar
Last Updated:
Mustard oil for weight loss: সর্ষের তেল খেলে কি শরীরে মেদ বাড়তে পারে? জেনে নেওয়া যাক...
#কলকাতা: বর্তমানে অনেকেই ওবেসিটিতে (Obesity) ভুগছেন। যার ফলে একাধিক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাঁদের। অনেকেই তাই ওজন কমানোর দিকে জোর দিচ্ছেন। বিশেষজ্ঞদেরও মত ওজন শরীরে অতিরিক্ত মেদ জমলে তাতে একাধিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই শরীর মেদ মুক্ত রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা। বর্তমানে কোভিড পরিস্থিতির জেরে বাড়ি থেকেই চলছে অফিসের কাজকর্ম অন্যদিকে। বাইরে বেরিয়ে শরীরচর্চাও করছেন না অনেকে। এর ফলে শরীরে মেদের পরিমাণ বাড়ছে। যা শরীরে স্থুলতা তৈরি করে। একাধিক রোগের সম্মুখীন হতে হয়। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, তেল বা চর্বি জাতীয় খবার তুলনামূলক কম খেতে হবে (Link between mustard oil and weight loss)। কোন তেলে রান্না করা খাবার খাওয়া যেতে পারে? সর্ষের তেল খেলে কি শরীরে মেদ বাড়তে পারে? জেনে নেওয়া যাক...
সর্ষের তেলের সঙ্গে ওজন কমানোর কী সম্পর্কে?
খাবার নিয়ে অনেকের কাছে প্রশ্ন থাকে কী ধরনের তেল খাওয়া শরীরে পক্ষে ভালো। অনেকের মতে যে কোনও তেল শরীরের পক্ষে খারাপ আবার একশ্রেণি মানুষের ধারণা কিছু তেল শরীরের পক্ষে ভালো সেগুলি শরীরে অতিরিক্ত মেদ তৈরি করে না। এমনকী শরীর গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাহলে আসল তথ্য কী? সত্যিই কি কোনও তেল শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে? বিজ্ঞানীরা মনে করেন সর্ষের তেল হল এমন এমন একটি খাদ্য উপাদান যা শরীরের বিভিন্ন উপকারে আসে। এমনকী ওজন কমাতেও সাহায্য করে। জেনে নেওয়া যাক বিস্তারিত…
advertisement
advertisement
ওজন কমাতে সর্ষের তেলের ভূমিকা…
সর্ষের তেলের মধ্যে এমন এক বিশেষ খাদ্য উপাদান থাকে যা শরীরে মেটাবলিজম বাড়িয়ে তোলে। সর্ষের তেলের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন B কমপ্লেক্স। যার মধ্যে নিয়াসিন এবং রিভোফ্লাভিন জাতীয় উপাদান রয়েছে। এই উপাদানগুলির জন্য শরীরে মেটাবলিজম খুবই ভালো হয়। খাবার দ্রুত হজম হয়, এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে।
advertisement
অনেকেই সর্ষের তেল খেতে পছন্দ করেন না। তাঁদের বক্তব্য সর্ষের তেলের মধ্যে এক ধরনের চটচটে ভাব থাকে এবং অত্যন্ত ঝাঁঝাল গন্ধ থাকার কারণে তা অপছন্দ করেন অনেকে। কিন্তু গুণাগুণের দিকে তুলনা করলে দেখা যাবে, অন্য তেলের তুলনায় সর্ষের তেলে প্রচুর পরিমাণে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রয়েছে। রয়েছে ওমেগা ৩ (omega-3) এবং ওমেগা ৬ (omega-6) এর মতো গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং হার্টের পক্ষে উপযোগী ফ্যাট।
advertisement
হার্টের উপযোগী ফ্যাটি অ্যাসিড থাকার ফলে শুধুমাত্র খাবারের স্বাদের ক্ষেত্রে পরিবর্তন হয় তা নয়। রক্তে ফ্যাটের পরিমাণও কমাতে সাহায্য করে। ওমেগা ৬ (Omega-6) ফ্যাটি অ্যাসিড শরীরের মধ্যে জমে থাকা অতিরিক্ত ফ্যাট কমাতে সাহায্য করে। ফলে খুব সহজেই ওজন কমানো সম্ভব হয়।
সর্ষের তেল খাওয়ার সুবিধা কী কী?
ওজন কমানো ছাড়াও সর্ষের তেলের এখাধিক উপকারিতা রয়েছে। শরীরের অনেক প্রয়োজনে লাগে সর্ষের তেল। সর্ষের তেলে রয়েছে মনো স্যাচুরেটেড (Monosaturated) এবং পলি আনস্যাচুরেটেড (Polyunsaturated) ফ্যাট। যা হার্টের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এবং শরীরে ভালো কোলেস্টেরলের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এছাড়াও সর্ষের তেলের মধ্যে রয়েছে ক্যান্সার প্রতিরোধক বিভিন্ন উপাদান। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, তাতে রয়েছে গ্লুকোসিনোলেট নামে একটি উপাদান রয়েছে সর্ষের তেলে। এই উপাদান থাকার ফলে শরীরে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। ফলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন সর্ষের তেল ক্যান্সার কমাতে অতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
advertisement
রান্না করা ছাড়াও একাধিক কাজে ব্যবহার করা হয় সর্ষের তেল। যেকোনও ব্যথায় সর্ষের তেল মাসাজ করলে আরাম পাওয়া যায়। এবং ব্যথা উপশম হয়। এছাড়াও সর্ষের তেল অল্প গরম করেও শরীর ও বিভিন্ন জয়েন্টে মাখা হয়। সদ্যোজাত শিশুদের ক্ষেত্রেও সর্ষের তেল মাখানোর রেওয়াজ আছে। আগেকার দিনে দেখা যেত সদ্যোজাত শিশুদের সর্ষের তেল মাখিয়ে রোদে বেশ কিছুক্ষণ শুয়ে রাখা হত। এছাড়াও বুকের ব্যথা অথবা পায়ের পাতায় ব্যথার ক্ষেত্রেও সর্ষের তেল মালিশ করা হয়। অন্যদিকে, সর্দি হলে সর্ষের তেল মাখেন অনেকে এবং কপালে তেল লাগিয়ে রাখেন। সেভাবে এই পদ্ধতিগুলির কোনও বিজ্ঞানসম্মত প্রমাণ না পাওয়া গেলেও অনেকে এই পদ্ধতিতে উপকার পেয়েছেন এবং সেকারণে তাঁরা এই পদ্ধতি মেনে চলেন।
advertisement
খারাপ দিক-
তবে এটা অবশ্যই ঠিক যে সবকিছু অতিরিক্ত শরীরের জন্য খারাপ। সর্ষের তেলের ক্ষেত্রেও এই যুক্তি প্রমাণিত। সর্ষের তেলে ডিপ ফ্রাই করা খাবার অথবা ডুবো তেলে ভাজা কোনও খাবার খাওয়া উচিত নয়। যখন রান্নার জন্য সর্ষের তেল ব্যবহার করা হয় তখন যেটুকু প্রয়োজন ততটুকুই সর্ষের তেল ব্যবহার করা উচিত এবং সেটাই রান্না করার জন্য যথেষ্ট। রান্না করার সময় মনে রাখতে হবে তেল গরম হওয়ার পর তাতে সবজি বা অন্য কিছু দিয়ে রান্না শুরু করা উচিত। ঠাণ্ডা তেলে কোনও কিছু দেওয়া উচিত নয়। কারণ ঠাণ্ডা সর্ষের তেলে অনেক পুষ্টিগুন থাকে না যা গরম করার পর পাওয়া যায়। অতিরিক্ত সর্ষের তেল খেলে ইউরিক অ্যাসিড বাড়তে পারে। তাতে শরীরে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। অনেক ব্যক্তির চামড়ার উপর সর্ষের তেল সহ্য হয় না। তাঁদের ক্ষেত্রে সর্ষের তেল শরীরে মাখা উচিত নয়। বর্তমানে অনেক সর্ষের তেলে ভেজাল থাকে। মেশানো হয় বিভিন্ন কেমিক্যাল। সেই সব কেমিকেল শরীরের পক্ষে বিভিন্ন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে। তাই ভালো ব্রান্ডের সর্ষের তেল খাওয়া উচিত।
advertisement
একনজরে দেখে নেওয়া যাক সর্ষের তেলের কিছু গুণ-
শরীরে ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি বন্ধ করতে খুবই উপযোগী।
সর্ষের তেল চামড়া ও চুলের পক্ষে উপযোগী। চুল মজবুত করতে কাজ করে সর্ষের তেল।
শরীরের মধ্যে বিভিন্ন যন্ত্রণা উপষম করতে কাজে লাগে।
ক্যানসার বৃদ্ধি প্রতিহত করে।
হার্টের স্বাস্থ্য বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
আর্থারাইটিস কমাতে সাহায্য করে।
সর্দি ও কাশি কমাতে সাহায্য করে।
একনজরে দেখে নেওয়া যাক সর্ষের তেলে কী কী উপাদান থাকে-
সর্ষের তেলে রয়েছে মনো স্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড। যা থাকে প্রায় ৬০ শতাংশ ( যার মধ্যে রয়েছে ৪২ শতাংশ ইউরিক অ্যাসিড এবং ১২ শতাংশ ওলেয়িক অ্যাসিড)। এছাড়াও রয়েছে, ২১ শতাংশ পলি আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট। ৬ শতাংশ ওমেগা ৩ এবং আলফা লায়োনিক অ্যাসিড থাকে। ওমেগা ৬ থাকে ১৫ শতাংশ। এবং স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে ১২ শতাংশ। এছাড়াও অন্য উপাদানও থাকে।
view commentsLocation :
First Published :
October 21, 2021 5:32 PM IST