Explained: সাধারণ ডেঙ্গু ও মারাত্মক ডেঙ্গুর মধ্যে পার্থক্য কী? কী ভাবে বাঁচবেন এর কবল থেকে?
- Published by:Siddhartha Sarkar
Last Updated:
Dengue and Severe Dengue: ডেঙ্গু জ্বরের নির্দিষ্ট কোনও চিকিৎসা নেই। জ্বর কমানো এবং পেইন কিলার ব্যবহার করা যেতে পারে। ডেঙ্গুর উপসর্গগুলির চিকিৎসার সর্বোত্তম বিকল্প হল অ্যাসিটামিনোফেন বা প্যারাসিটামল।
#কলকাতা: ডেঙ্গু (Dengue) একটি এডিস মশাবাহিত ভাইরাল রোগ, যা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। এডিস ইজিপ্টাই প্রজাতির মহিলা মশা ডেঙ্গু ভাইরাসের প্রধান বাহক। এই মশা চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার এবং জিকা ভাইরাসের ভেক্টর। ডেঙ্গু একটি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় রোগ।
বৃষ্টিপাত, তাপমাত্রা, আপেক্ষিক আর্দ্রতা এবং অপরিকল্পিত দ্রুত নগরায়ণের উপরে নির্ভর করে এই রোগের বৃদ্ধি ঘটে। ডেঙ্গু রোগের বিস্তৃতি বিরাট। অনেক সময় মানুষ জানতেই পারে না যে সে সংক্রমিত। সংক্রমিত ব্যক্তিদের মধ্যে ফ্লুর মতো গুরুতর উপসর্গ দেখা দিতে পারে। অনেকে আবার মারাত্মক ডেঙ্গুতে (Severe Dengue) আক্রান্ত হতে পারেন। যার কারণে রক্তপাত, অঙ্গ দুর্বলতা অথবা প্লাজমা লিকেজ হতে পারে। যথাযথভাবে চিকিৎসা না হলে মারাত্মক ডেঙ্গুতে মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি থাকে।
advertisement
পাঁচের দশকে ফিলিপিন্স এবং থাইল্যান্ডে ডেঙ্গু মহামারির সময় মারাত্মক ডেঙ্গু প্রথম স্বীকৃত হয়েছিল। আজ, মারাত্মক ডেঙ্গু বেশিরভাগ এশিয়ান এবং লাতিন আমেরিকান দেশগুলিতে দেখা যায়। এই অঞ্চলে শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি এবং মৃত্যুর একটি প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে মারাত্মক ডেঙ্গু।
advertisement
advertisement
ডেঙ্গু এবং তার সেরোটাইপ
ডেঙ্গু ফ্ল্যাভিভিরিড পরিবারের একটি ভাইরাস দ্বারা তৈরি হয়। চারটি ভাইরাস রয়েছে যেগুলি সেরোটাইপস জাতীয়। সেগুলি হল ডিইএনভি ১, ডিইএনভি ২, ডিইএনভি ৩ এবং ডিইএনভি ৪ । এই ভাইরাসগুলিই প্রধানত ডেঙ্গুর জন্য দায়ী। ভাইরাসটির একটি সেরোটাইপে সংক্রমণ হলে সেই সেরোটাইপের বিরুদ্ধে রোগী আজীবন প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করে। কিন্তু অন্য সেরোটাইপের বিরুদ্ধে সাময়িক প্রতিরোধী ক্ষমতা অর্জন করে। পরবর্তীতে ভিন্ন সেরোটাইপের ডেঙ্গু ভাইরাস সংক্রমিত হলে রোগীর মারাত্মক জটিলতা দেখা দিতে পারে।
advertisement
ডেঙ্গুর বিশ্বব্যাপী বোঝা
সাম্প্রতিক দশকগুলিতে সারা বিশ্বে ডেঙ্গুর প্রকোপ নাটকীয় ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা উপসর্গহীন বা হালকা উপসর্গ থাকছে। তাই ডেঙ্গু রোগের প্রকৃত সংখ্যা কম রিপোর্ট করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে অন্যান্য জ্বরজনিত অসুস্থতার সঙ্গে গুলিয়ে ফেলা হয়। অনুমান প্রতি বছর ৩৯০ মিলিয়ন ডেঙ্গুর সংক্রমণ হয়। যার মধ্যে ৯৬ মিলিয়ন ক্লিনিক্যালি প্রকাশ পায়। ডেঙ্গুর বিস্তার নিয়ে আরেকটি গবেষণায় অনুমান করা হয়েছে যে ৩৯০ মিলিয়ন মানুষ ডেঙ্গু ভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছেন। বিশ্বের ১২৯টি দেশে সংক্রমণের এই ঝুঁকি রয়েছে। যার মধ্যে ৭০ শতাংশ দেশ এশিয়ার। গত দুই দশকে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা আটগুণ বেড়েছে।
advertisement
ডেঙ্গুর বিস্তার ও প্রাদুর্ভাব
১৯৭০ সালের আগে বিশ্বের মাত্র ৯টি দেশে মারাত্মক ডেঙ্গু মহামারী হয়েছিল। আফ্রিকা, আমেরিকা, পূর্ব ভূমধ্যসাগর, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ১০০টিরও বেশি দেশে এই রোগটি এখন হামেশাই হচ্ছে। আমেরিকা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলগুলি ডেঙ্গুর কারণে সব চেয়ে মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। মোট সংক্রণের ৭০ শতাংশ এশিয়া মহাদেশে হয়। ইউরোপ-সহ নতুন অঞ্চলে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে কেবল আক্রান্তর সংখ্যা বাড়ছে তা নয়, বিস্ফোরক প্রাদুর্ভাব ঘটছে। ২০১০ সালে ফ্রান্স এবং ক্রোয়েশিয়ায় প্রথমবারের মতো লোকাল ট্রান্সমিশন রিপোর্ট করা হয়েছিল। এছাড়াও তিনটি দেশে এই সংক্রমণ ছড়িয়েছিল। ২০১২ সালে পর্তুগালের মাদিরা দ্বীপে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব ঘটে। পরে মূল ভূখণ্ড পর্তুগাল এবং ইউরোপের ১০টি দেশে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। ২০২০ সালে, ডেঙ্গু বেশ কয়েকটি দেশে মহামারী আকার নেয়। বাংলাদেশ, ব্রাজিল, কুক দ্বীপপুঞ্জ, ইকুয়েডর, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মালদ্বীপ, মৌরিতানিয়া, মায়োটে (ফ্রা), নেপাল, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, সুদান, থাইল্যান্ড, তিমুর-লেস্টে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। চলতি বছরে ব্রাজিল, কুক দ্বীপপুঞ্জ, কলম্বিয়া, ফিজি, কেনিয়া, প্যারাগুয়ে, পেরুতে ডেঙ্গি ভয়াবহ আকার নিয়েছে। ২০১৯ সালে বিশ্বব্যাপী ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা সব চেয়ে বেশি হয়। সেই প্রথমবার আফগানিস্তানে ডেঙ্গু সংক্রমণ ধরা পড়ে।
advertisement
সংক্রমণ:
মশা থেকে মানুষে সংক্রমণ:
ডেঙ্গুর ভাইরাসটি সংক্রমিত মহিলা মশার কামড়ের মাধ্যমে মানুষের শরীরে আসে। প্রাথমিকভাবে এডিস ইজিপ্টি মশা বাহক হিসেবে কাজ করে। স্ত্রী মশা ডেঙ্গু আক্রান্তর রক্তপান করে নিজে সংক্রমিত হয় ও ভাইরাস বহন করে। প্রায় ৮-১০ দিন পর ভাইরাস মশার দেহের অন্যান্য কোষে ছড়িয়ে পড়ে, যার মধ্যে আছে মশার লালাগ্রন্থি ও সেকেন্ডারি টিস্যু। একবার সংক্রমিত হয়ে গেলে, মশা সারা জীবন এই ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়াতে সক্ষম।
advertisement
মানুষের থেকে মশার সংক্রমণ:
মশারা এমন লোকদের দ্বারা সংক্রামিত হতে পারে যারা DENV ভাইরাসে আক্রান্ত। এটি এমন কেউ হতে পারে যার ডেঙ্গুর উপসর্গ রয়েছে, আবার এমন কেউ যার এখনও উপসর্গ দেখা যায়নি। যারা সংক্রমিত, অথচ অসুস্থ হননি তাঁদের থেকেই সংক্রমণ মশার শরীরে ছড়াতে পারে। মানুষের থেকে মশার সংক্রমণ ২ দিন পর্যন্ত হতে পারে। সেটা জ্বর আসার আগেও হতে পারে, জ্বর সেরে যাওয়ার পরেও হতে পারে।
সংক্রমণের অন্যান্য পদ্ধতি:
মানুষের মধ্যে DENV সংক্রমণের প্রাথমিক পদ্ধতিতে মশার বাহক জড়িত। যাই হোক, এখানে গর্ভবতী মায়ের থেকে তাঁর শিশুর শরীরে সংক্রমণের সম্ভাবনা আছে। যদিও এই সংক্রমণের হার কমই। সংক্রমণের ঝুঁকি আপাতদৃষ্টিতে গর্ভাবস্থায় হয়। গর্ভবতী মা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে শিশু সময়ের আগেই জন্ম নিতে পারে অথবা কম ওজনের হতে পারে।
ভেক্টর ইকোলজি:
এডিস মশা শহুরে আবাসস্থলে বাস করে এবং বেশিরভাগই বিভিন্ন পাত্রে প্রজনন করে। এরা দিনের এক সময়ে কামড়ায়। সর্বাধিক কামড়ানোর সময় ভোরে এবং সন্ধ্যায়, ঠিক সূর্যাস্তের আগে। ডিম পাড়ার সময়কালে এডিস মশা একাধিক বার কামড়াতে পারে। ডিম পাড়ার পর ডিমগুলি বেশ কয়েক মাস ধরে পড়ে থাকে। জলের সংস্পর্শে আসলেই সেগুলি থেকে বাচ্চা বের হয়। এডিসের সেকেন্ডারি ডেঙ্গু ভেক্টর এডিস অ্যালবোপিক্টাস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩২টিরও বেশি রাজ্যে এবং ইউরোপের ২৫টিরও বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।
ডেঙ্গুর উপসর্গ:
ডেঙ্গু একটি মারাত্মক, ফ্লু-এর মতো রোগ, যা শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্কদের হতে পারে ও মৃত্যুর কারণ হয়। ডেঙ্গুর উপসর্গ সাধারণত ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হয়। ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (WHO) ডেঙ্গুকে দু'টি প্রধান শ্রেণীতে শ্রেণিবদ্ধ করেছে- ডেঙ্গু (উপসর্গ সহ /হীন) এবং মারাত্মক ডেঙ্গু। সতর্কতামূলক উপসর্গ সহ বা ছাড়াই ডেঙ্গুর উপ-শ্রেণিবিন্যাস করা হয়েছে, যাতে সঠিক চিকিৎসা হয় ও মারাত্মক ডেঙ্গু হওয়ার ঝুঁকি কমানো যায়।
খুব মাথাব্যথা, চোখের পিছনে ব্যথা, পেশি এবং জয়েন্টের ব্যথা, বমি বমি ভাব, বমি,গ্রন্থি ফোলা, ফুসকুড়ি ইত্যাদি।
মারাত্মক ডেঙ্গুর উপসর্গ:
সাংঘাতিক পেটে ব্যথা, ক্রমাগত বমি, দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস, মাড়ি থেকে রক্তপাত, ক্লান্তি, অস্থিরতা, রক্তবমি ইত্যাদি।
আরও পড়ুন-
রোগ নির্ণয়:
ডেঙ্গু নির্ণয়ের জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করা যেতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে ভাইরোলজিক্যাল পরীক্ষা এবং সেরোলজিক্যাল পরীক্ষা। বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক পদ্ধতির প্রয়োগ করে ডেঙ্গু নির্ণয় করা যায়। অসুস্থতার প্রথম সপ্তাহে সংগৃহীত নমুনার সেরোলজিক্যাল এবং ভাইরোলজিক্যাল পদ্ধতি মেনে পরীক্ষা করা উচিত।
ভাইরোলজিক্যাল পদ্ধতি:
ভাইরাস সংক্রমণের প্রথম কয়েকদিন রক্ত থেকে বিচ্ছিন্ন হতে পারে। বিভিন্ন রিভার্স ট্রান্সক্রিপ্টেজ-পলিমারেজ চেইন রিঅ্যাকশন (RT-PCR) পদ্ধতি আছে রোগ নির্ণয়ের। সাধারণভাবে, আরটি-পিসিআর পরীক্ষার জন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের বিশেষ সরঞ্জাম এবং প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হয়। অনেক সময় সব চিকিৎসার সুবিধা পাওয়া যায় না। NS1 নামক ভাইরাস উৎপাদিত প্রোটিন পরীক্ষা করেও ডেঙ্গুর ভাইরাস সনাক্ত করা যেতে পারে। রিপোর্ট জানতে ২০ মিনিট সময় লাগে এবং পরীক্ষার জন্য বিশেষ ল্যাব বা সরঞ্জামের প্রয়োজন হয় না।
সেরোলজিক্যাল পদ্ধতি:
সেরোলজিক্যাল পদ্ধতি সাম্প্রতিক বা অতীতের সংক্রমণের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে পারে। IgM এবং IgG অ্যান্টি-ডেঙ্গু অ্যান্টিবডি সনাক্ত করা যায় এই টেস্টে। IgM অ্যান্টিবডি সংক্রমণের এক সপ্তাহ পরে সনাক্ত করা যায় এবং অসুস্থতার শুরু হওয়ার ২ থেকে ৪ সপ্তাহ পরে সর্বোচ্চ হয়। IgM-র উপস্থিতি সাম্প্রতিক ডেঙ্গু সংক্রমণের লক্ষণ। IgG অ্যান্টিবডির মাত্রা IgM এর তুলনায় প্রকাশ পেতে বেশি সময় নেয়, কিন্তু IgG বছরের পর বছর ধরে শরীরে থাকে। IgG- এর উপস্থিতি অতীতের সংক্রমণের ইঙ্গিত দেয়।
চিকিৎসা:
ডেঙ্গু জ্বরের নির্দিষ্ট কোনও চিকিৎসা নেই। জ্বর কমানো এবং পেইন কিলার ব্যবহার করা যেতে পারে। ডেঙ্গুর উপসর্গগুলির চিকিৎসার সর্বোত্তম বিকল্প হল অ্যাসিটামিনোফেন বা প্যারাসিটামল। নন-স্টেরয়েডাল অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ড্রাগস যেমন আইবুপ্রোফেন এবং অ্যাসপিরিন না ব্যবহার করাই ভালো। এই ওষুধগুলি রক্তকে পাতলা করে দেয় এবং রক্তক্ষরণের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে।
মারাত্মক ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে অভিজ্ঞ চিকিৎসক এবং নার্সদের তৎপরতায় জীবন বাঁচানো যেতে পারে। মৃত্যুর হার ২০ শতাংশ পর্যন্ত কমানো যায়। গুরুতর ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর শরীরের তরল ভলিউম সব সময় ঠিক রাখা উচিত।

টিকা:
ডেঙ্গুর টিকা ডেঙ্গভ্যাক্সিয়া ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে অনুমোদন পেয়েছে। যদিও এই ভ্যাকসিন ৯ থেকে ৪৫ বছর বয়সীদের জন্য। বিশ্বের ২০ দেশের নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ এটিকে অনুমোদন দিয়েছে। বিশ্বে প্রথম মেক্সিকোতে ডেঙ্গভ্যাক্সিয়া টিকার অনুমোদন দেওয়া হয়।
টিকা নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মত:
যাঁরা সত্যি সত্যিই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন, শুধু তাঁদেরই এই টিকা দেওয়া যেতে পারে। অন্যদের দিলে হিতে বিপরীত হতে পারে। আমেরিকার সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন বলছে, ওই টিকা প্রস্তুতকারী সংস্থা ‘সানোফি প্যাস্টোর’ ২০১৭ সালে জানিয়েছিল যে আগে কেউ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত না হয়ে থাকলে, তাঁকে যদি ওই টিকা দেওয়া হয়, তা হলে তিনি মারাত্মক ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে পড়বেন।
প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ:
যদি জানা থাকে যে ডেঙ্গু হয়েছে, তবে অসুস্থতার প্রথম সপ্তাহে মশার কামড় এড়িয়ে চলতে হবে। এই সময় ভাইরাস রক্তে সঞ্চালিত হতে পারে। এই সময় অন্য মশা কামড়ালে সে সংক্রমিত হয়ে আবার অন্যদের সংক্রমিত করতে পারে। বর্তমানে, ডেঙ্গু ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ বা প্রতিরোধের প্রধান পদ্ধতি হল মশার বাহকদের মোকাবিলা করা।
মশার প্রজনন প্রতিরোধ:
পরিবেশগত ব্যবস্থাপনা এবং পরিবর্তনের মাধ্যমে মশা যাতে ডিম পাড়তে না পারে তার ব্যবস্থা করা।
কঠিন বর্জ্য সঠিকভাবে ফেলা এবং আবাসনে জল জমতে না দেওয়া।
সপ্তাহে জলের পাত্র পরিষ্কার করা।
বাইরে পড়ে থাকা খালি পাত্রে কীটনাশক প্রয়োগ।
মশার কামড় থেকে ব্যক্তিগত সুরক্ষা:
জানালার পর্দা, প্রতিষেধক, কীটনাশক সামগ্রী, কয়েলের ব্যবহার। ত্বকের সংস্পর্শে যাতে মশা কম আসতে পারে এমন পোশাক পরতে হবে।
কমিউনিটি সংযুক্তি:
মশাবাহিত রোগের ঝুঁকি সম্পর্কে বিভিন্ন সম্প্রদায়কে শিক্ষিত করা। স্বাস্থ্য ও অন্যান্য বিভাগসমূহের মধ্যে সহযোগিতা (সরকারি ও বেসরকারি)।
বাহক নিয়ন্ত্রণ:
প্রাদুর্ভাবের সময় স্প্রে হিসাবে কীটনাশক প্রয়োগ করা যেতে পারে।
নজরদারি:
মশা ডিম পাড়তে পারে এমন জায়গায় নিয়মিত নজরদারি চালাতে হবে। মশার বংশবিস্তার নিয়ন্ত্রণে নতুন নতুন সরঞ্জাম এবং উদ্ভাবনী কৌশলের ব্যবহার করতে হবে।
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ভূমিকা:
নেটওয়ার্কের মাধ্যমে প্রাদুর্ভাব নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে দেশগুলিকে সাহায্য করে।
ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে দেশগুলিকে প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং নির্দেশিকা দেয়।
দেশগুলিকে তাদের রিপোর্টিং সিস্টেম উন্নত করতে এবং রোগের প্রকৃতি বুঝতে সাহায্য করে।
দেশ এবং আঞ্চলিক পর্যায়ে ক্লিনিকাল ম্যানেজমেন্ট, ডায়াগনোসিস এবং বাহক নিয়ন্ত্রণে প্রশিক্ষণ দেয়।
ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে নতুন পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে দেশগুলিকে সহায়তা করা।
কীটনাশক পণ্য, প্রযুক্তি-সহ নতুন সরঞ্জামগুলির বিষয়ে পর্যালোচনা করা।
একশোটিরও বেশি সদস্য দেশ থেকে ডেঙ্গু সংক্রান্ত তথ্য ও রিপোর্ট সংগ্রহ করে নির্দেশিকা প্রকাশ করা।
view commentsLocation :
First Published :
September 24, 2021 5:43 PM IST