ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হয়েও অসম বিধানসভা নির্বাচনে কেন গুরুত্বপূর্ণ বৈষ্ণব সত্রগুলো?

Last Updated:

গত মাসে এই সত্রকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা নেয় BJP। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah) ১৮৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করেন এই মঠের সৌন্দর্যায়ণে।

#গুয়াহাটি: বিধানসভা নির্বাচনের দামামা বেজে গিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ, কেরালা, পুদুচেরি, তামিলনাড়ুর পাশাপাশি বিধানসভা নির্বাচন অসমে। এখানে ইতিমধ্যেই প্রচার শুরু করেছে শাসকদল BJP ও বিরোধী শিবির কংগ্রেস। বাদ যাচ্ছে না অন্যান্য দলও। এই প্রচারের মাঝে অন্যতম কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে নগাঁওয়ের শ্রীমন্ত শংকরদেবের সত্র বা মঠ। যা রাজনৈতিক মেরুকরণের একটা অঙ্গ হিসেবে তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন ওয়াকিবহল মহল।
গত মাসে এই সত্রকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা নেয় BJP। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah) ১৮৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করেন এই মঠের সৌন্দর্যায়ণে। এর কয়েক সপ্তাহ আগেই "অসম বাঁচাই আসো" অভিযানের অঙ্গ হিসেবে কংগ্রেসের তরফে একটি বাস যাত্রার আয়োজন করা হয় এই মঠে। শুধু এই নগাঁওয়ের মঠই নয়, অসমে বিভিন্ন সত্রতে বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক নেতাদের আশীর্বাদ নিতে যেতে দেখা যাচ্ছে। এমনকী কংগ্রেসের প্রিয়াঙ্কা গান্ধি  (Priyanka Gandhi Vadra) গত সপ্তাহে অসমের লখিমপুরে একটি সত্রতে যান। সেখানে আশেপাশ ঘুরে দেখেন তিনি। আশীর্বাদও নেন।
advertisement
যে সত্র রাজনীতির অংশে পরিণত হচ্ছে, সেই সত্র আদতে কী জেনে নেওয়া যাক-
ষোড়শ শতাব্দীর নব্য-বৈষ্ণব সংস্কারবাদী আন্দোলনের অংশ হিসেবে বৈষ্ণব সংস্কারক শ্রীমন্ত শংকরদেব এই সত্রর সূচনা করেছিলেন। যাকে চলতি বাংলায় মঠও বলা যেতে পারে। গোটা অসম ঘুরে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ধর্ম প্রচারের সময় তিনি এই সত্রগুলি তৈরি করেন। যা আজও শিক্ষার অন্যতম পীঠস্থান। আজ গোটা অসম জুড়ে একাধিক সত্র রয়েছে। গান, নাচ ও থিয়েটারের মাধ্যমে তিনি উপাসনা করতেন।
advertisement
advertisement
প্রত্যেকটি সত্রে একটি করে প্রার্থনাঘর আছে। যাতে অহমিয়া ভাষায় নামঘর বলা হয়। এবং প্রত্যেকটি সত্রে একজন করে প্রধান রয়েছেন। যাঁকে সত্রাধিকার বলা হয়। সত্রের সন্ন্যাসীরা বা ভক্তরা খুব ছোটবেলা থেকেই এখানে থাকা ও পড়াশোনা শুরু করেন। ধিং কলেজের অধ্যাপক বিমান হাজারিকা জানান, বর্তমানে অসমে ৯০০-রও বেশি সত্র আছে। যার মূল অফিস রয়েছে নগাঁও, মাজুলি ও বরপেটায়। এই প্রতিষ্ঠানগুলি অহমিয়া শিল্প ও সংস্কৃতি অন্যতম ধারক।
advertisement
শংকরদেবের দর্শন কী ছিল?
এক শরণ নাম ধর্ম, এই প্রবাদ তিনি প্রচলন করেছিলেন। সেই সময়ে দাঁড়িয়ে তিনি জাতিবৈষম্য, ব্রাহ্মণদের গোঁড়ামির বদলে স্বাধীন পরিবেশের প্রচার করেছিলেন। মানুষকে স্বাধীনভাবে বাঁচতে শিখিয়েছিলেন।
কিন্তু তাঁর মৃত্যুর পর তাঁরই ভক্তরা বা অনুগামীরা ভিন্ন মতে আলাদা হয়ে যান এবং তাঁরই বক্তব্য উল্লেখ করে নানা ভাগে ভাগ হয়ে যান। ফলে এর যে মূল লক্ষ্য ছিল, তা থেকে এঁরা সরে যান।
advertisement
এই সত্রগুলির সঙ্গে রাজ্যের কী সম্পর্ক?
রাজ্য শাসনের সময় এই সত্রগুলি প্রচুর অর্থ সাহায্য পায় এবং অনেকেই বলছেন, সে সময়ে এই সত্রগুলি রাজনীতি থেকে দূরে ছিল। কিন্তু বর্তমানে সেই চিত্রে পরিবর্তন এসেছে। এই বিষয়ে এক অধ্যাপক বলেন, মন্দিরের মতো সত্রগুলি ছিল না। এরা নিজের পায়ে নিজেই দাঁড়িয়ে ছিল। ফলে বাইরের সাহায্য সে ভাবে লাগত না। তাই কারও সমর্থন সে ভাবে তারা কখনও নেয়নি।
advertisement
তা হলে সত্যিই সত্রগুলি নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে?
অসমে সত্রর গুরুত্ব অবশ্যই রয়েছে। বিশেষ করে সত্র অধ্যুষিত এলাকা নগাঁও, কালিয়াবর, বরপেটা ও বর্তদাদর্ভ-তে মানুষকে আকর্ষণ করতে এই সত্রয় রাজনৈতিক নেতাদের যাওয়ারও একটা আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। এই বিষয়ে এক অধ্যাপক জানান, এই কারণেই BJP থেকে কংগ্রেস, নেতারা মাঝেমধ্যেই সত্রতে আশীর্বাদ নিতে পৌঁছে যাচ্ছেন।
advertisement
সত্রকে কী ভাবে কাজে লাগাচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলি?
সত্রর জমি পরিযায়ী মানুষের দ্বারা দখল হচ্ছে এবং তার ফলে সত্রর অনেকটা অংশ এদের দখলে চলে যাচ্ছে। যা থেকে সত্রকে বাঁচাতে হবে, এমন প্রতিশ্রুতি নিয়েই নির্বাচনী প্রচারে নেমেছে BJP ।নির্দিষ্ট কোনও বিষয় না থাকলেও ভোটের ময়দানে সত্রকে নিয়ে এক অংশ জমিও ছাড়তে চাইছে না কংগ্রেসও৷
view comments
বাংলা খবর/ খবর/Explained/
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হয়েও অসম বিধানসভা নির্বাচনে কেন গুরুত্বপূর্ণ বৈষ্ণব সত্রগুলো?
Next Article
advertisement
Purba Bardhaman News: 'ছায়াশত্রু' কারা? বিতর্কিত মন্তব্যের পর তৃণমূলে ঝড়, ব্যাখ্যা দিলেন জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ
'ছায়াশত্রু' কারা? বিতর্কিত মন্তব্যে তৃণমূলে ঝড়, ব্যাখ্যা দিলেন জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ
  • এবার 'ছায়া' শত্রুর নাম সামনে আনলেন পূর্ব বর্ধমান জেলার তৃণমূলে কংগ্রেসের  সভাপতি  রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। বর্ধমানে দলের বিজয়া সম্মেলনে তিনি বলেছিলেন, 'এখন লড়াই বাম আমলের থেকেও কঠিন। এখন ছায়ার সঙ্গে যুদ্ধ করতে হচ্ছে।'

VIEW MORE
advertisement
advertisement