Explained: আসতে পারে সেনাবাহিনীতে! বিস্ফোরক নিয়ে উপরে ভাসবে, নির্দেশ পেলেই হামলা চালাতে পারে এই ড্রোন!
- Published by:Arpita Roy Chowdhury
Last Updated:
Armed Drone: ভারত সফলভাবে লাদাখে তিন ধরনের 'মেড ইন ইন্ডিয়া' (Make In India) অ্যান্টি-আরমার লয়টার অ্যামুনিশনের পরীক্ষা চালিয়েছে।
#নয়াদিল্লি: ভারতীয় সেনাবাহিনী (Indian Army) তার মেকানাইজড ইনফ্যান্ট্রি ইউনিটের জন্য ক্যানিস্টার লঞ্চড অ্যান্টি-আরমার লয়টার অ্যামুনিশন (Cannister Launched Anti-Armour Loiter Ammunition) বা বিস্ফোরক-বোঝাই ড্রোন কেনার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। এর জন্য বিভিন্ন সংস্থার তারা তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছে বা রিকুয়েস্ট ফর ইনফরমেশন (RFI) জারি করেছে। এর সাহায্যে পশ্চিম ভারতের সমভূমি ও মরুভূমির পাশাপাশি উত্তর ভারত সীমান্তের পাহাড়ি অঞ্চলে শত্রু ট্যাঙ্ক এবং অন্যান্য লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করা যেতে পারে।
সম্প্রতি, ভারত সফলভাবে লাদাখে তিন ধরনের 'মেড ইন ইন্ডিয়া' (Make In India) অ্যান্টি-আরমার লয়টার অ্যামুনিশনের পরীক্ষা চালিয়েছে। ২১-২৩ মার্চের মধ্যে লাদাখের নুব্রা ভ্যালি এলাকায় উন্নত অ্যান্টি-আরমার লয়টার অ্যামুনিশন-LM0, LM1 এবং Hexacopter-র পরীক্ষা করা হয়েছিল। জানা গিয়েছে, এই ম্যান পোর্টেবল এই যুদ্ধাস্ত্র ৪ কেজি ওয়ারহেড বা বিস্ফোরক নিয়ে এক ঘণ্টার জন্য উড়তে পারে এবং নির্ভুল ভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে। নাগপুর-ভিত্তিক সোলার ইন্ডাস্ট্রিজ এবং বেঙ্গালুরুর জেডমোশন অটোনোমাস সিস্টেম প্রাইভেট লিমিটেডের কোম্পানির সহযোগী ইকোনমিক্স এক্সপ্লোসিভস যৌথভাবে এই অস্ত্র তৈরি করেছে। এই অস্ত্র তৈরির উদ্দেশ্য হল ভারতকে অস্ত্রের বাজারে স্বয়ংসম্পূর্ণ করা।
advertisement
এই সিস্টেম ঠিক কী?
ক্যানিস্টার লঞ্চড অ্যান্টি-আরমার লয়টার অ্যামুনিশন সিস্টেম হল একটি লয়টার অ্যামুনিশন বা ড্রোন সহ একটি প্রি-লোডেড ক্যানিস্টার, যা একবার ছোড়া হলে সেটি অপারেশনের এলাকায় কিছু সময়ের জন্য উপরে ভেসে থাকতে পারে। যখন লক্ষ্যবস্তুর দিকে নির্দেশ করা হয়, তখন এটি নিচে নেমে বিস্ফোরক দিয়ে লক্ষ্যবস্তুকে ধ্বংস করে দেয়। সাধারণত, লয়টার একটি ক্যামেরা বহন করে যা ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরতে পারে। কোনও এলাকা দেখতে এবং লক্ষ্যবস্তু নির্বাচন করতে এটির ব্যবহার করা যেতে পারে। একটি মিসাইল যখন একবার নিক্ষেপ করা হয়, সাধারণত কয়েক মিনিটের ফ্লাইটের পরে সরাসরি তার লক্ষ্যবস্তুতে গিয়ে আঘাত করে। আর লয়টার অ্যামুনিশন ড্রোনের মতোই ছোড়া করা হয় এবং তারা দীর্ঘ সময়ের জন্য উঁচুতে উড়তে থাকে, এরপর একটি নির্দিষ্ট এলাকা জরিপ করে এবং লক্ষ্যগুলির সন্ধান করে। একবার একটি টার্গেট সনাক্ত হয়ে গেলে তারা সেটি ধ্বংস করার জন্য মিসাইল হিসাবে কাজ করে। এই অস্ত্রের বিশেষ সংস্করণ রয়েছে, যা পুনরুদ্ধার করে আবারও ব্যবহার করা যেতে পারে। এই অস্ত্রের প্রধান উপাদান হল একটি ওয়ারহেড সহ একটি মানবহীন প্ল্যাটফর্ম। সহজ কথায় বলতে গেলে, এটি একটি সারফেস টু সারফেস মিসাইল এবং একটি ড্রোনের মিশ্রণ।
advertisement
advertisement
আরও পড়ুন : ব্রেস্ট ক্যানসারের এই ভয়ঙ্কর ধরনকে প্রতিহত করতে জাদুর মতো কাজ করে আপনার রান্নাঘরের এই মশলা
রিকুয়েস্ট ফর ইনফরমেশন কী? এটি কখন জারি করা হয়?
৮ এপ্রিল সেনাবাহিনী ক্যানিস্টার লঞ্চড অ্যান্টি-আরমার লয়টার অ্যামুনিশন (CALM) সিস্টেমের জন্য একটি আরএফআই জারি করেছে। সেনাবাহিনী নির্দিষ্ট করেছে যে এটি এমন ১৫০টি সিস্টেম কিনতে চায়, যা মেকানাইজড ইনফ্যান্ট্রি ইউনিটের বিএমপি ফাইটিং যান থেকে লঞ্চ করা যাবে। আর এই সিস্টেমগুলি 'মেক ইন ইন্ডিয়া' এবং 'আত্মনির্ভর ভারত' (Atmanirbhar Bharat) কর্মসূচির অধীনে কেনা হবে।
advertisement
আরও পড়ুন : এই তীব্র গরমে কী করে ভাল রাখবেন পরিবারের প্রবীণদের? মনে রাখুন এই সহজ নিয়মগুলি
এই সরঞ্জামের কী কী ব্যবহার উল্লেখ করা হয়েছে?
আরএফআই-তে বলা হয়েছে যে এই সিস্টেমগুলি দেশের পশ্চিম অংশের সমভূমি এবং মরুভূমির পাশাপাশি উত্তরে ৫ হাজার মিটার উঁচু অঞ্চলে ব্যবহার করা হবে। সমভূমি এবং মরুভূমিতে এই সিস্টেমটি শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার মধ্যে, আর উঁচু এলাকায় মাইনাস ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার মধ্যে কাজ করতে সক্ষম হওয়া উচিত। সিস্টেমটি এমন হতে হবে, যাতে এটি দিনে এবং রাতে দৃষ্টিসীমার বাইরে শত্রুপক্ষের ট্যাঙ্ক, বাঙ্কার, সাঁজোয়া যান, অস্ত্রের ডিপো বা সামরিক বাহিনীর উপরে নজরদারি ও হামলা চালানোর জন্য ব্যবহার করা যায়।
advertisement
আরও পড়ুন : গরমে দেদার আম খাওয়ার আগে জানুন এর অগাধ গুণাগুণ
এই ধরনের সিস্টেম যুদ্ধে ব্যবহার করা হয়েছে?
২০২১ সালে আর্মেনিয়া-আজারবাইজান যুদ্ধে ক্যানিস্টার লঞ্চড অ্যান্টি-আরমার লয়টার অ্যামুনিশন খুব কার্যকরভাবে ব্যবহৃত হয়েছিল। আর্মেনিয়ান ট্যাঙ্ক, রাডার সিস্টেম, যোগাযোগ কেন্দ্র এবং অন্যান্য সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানোর জন্য ইজরায়েলের তৈরি এই সিস্টেমের ব্যবহার করেছিল আজারবাইজান বাহিনী। রাশিয়ার সামরিক বাহিনী ইউক্রেনে তাদের ZALA KYB লয়টার অ্যামুনিশন ব্যবহার করছে। এছাডা়ও জানা গিয়েছে যে রাশিয়াকে পাল্টা জবাব দেওয়ার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের সুইচব্লেড লয়টার মিউনিশন ইউক্রেনকে সরবরাহ করেছে। এই অস্ত্র দিয়ে ১০ কিলোমিটার দূর থেকেই হামলা চালাতে পারবে ইউক্রেনের সেনা।
advertisement
ভারত ইতিমধ্যেই ইজরায়েলের তৈরি হারোপ লয়টারিং মিউনিশন (Harop Loitering Munition) ব্যবহার করছে। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ১০০টি বিস্ফোরক-বোঝাই 'স্কাইস্ট্রাইকার' অর্ডার করেছে, এর রেঞ্জ আরও বেশি। ইজরায়েলের এলবিট সিকিউরিটি সিস্টেমের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বেঙ্গালুরুর আলফা ডিজাইন এই সিস্টেম ভারতেই উৎপাদন করছে।
Location :
First Published :
April 19, 2022 2:24 PM IST