New visa rules in UAE: Explained: যান প্রচুর ভারতীয়, এই জায়গার ভিসার নিয়মে বিরাট বদল! না জানলে পড়তে হবে বড় সমস্যায়
- Published by:Suman Biswas
Last Updated:
New visa rules in UAE: বদলিয়েছে শর্তাবলী; দুবাই কিংবা আরব আমিরশাহি যেতে হলে এখনই জেনে নেওয়া প্রয়োজন নতুন ভিসার নিয়ম!
#নয়াদিল্লি: সম্প্রতি দুবাইয়ের শাসক তথা আরব আমিরশাহির রাষ্ট্রপতি শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মখতুমের (Sheikh Mohammed bin Rashid Al Maktoum) নেতৃত্বে সংযুক্ত আরব আমিরশাহী মন্ত্রিসভা বিদেশিদের প্রবেশ ও বাসস্থান সম্পর্কিত ফেডারেল ডিক্রি-আইনের আওতায় নতুন ভিসা নিয়ম চালু করেছে, যা দুবাইসহ সাতটি প্রদেশে লাগু হয়েছে। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক নতুন ভিসা নিয়মে ঠিক কী বলা হয়েছে।
এন্ট্রি (ENTRY) অর্থাৎ প্রবেশের ক্ষেত্রে ভিসার জন্য নতুন নিয়ম:
নতুন এই নিয়মে কোনও প্রকার হোস্ট বা স্পনসর ছাড়াই বিভিন্ন ধরনের ভিসা চালু করা হয়েছে আমিরশাহি সরকারের পক্ষ থেকে। জানানো হয়েছে পর্যটন ব্যবসা বৃদ্ধি এবং বিদেশ থেকে আগত দর্শনার্থীদের চাহিদা মেটানোর লক্ষ্যের পাশাপাশি তাঁদের সফরের উদ্দেশ্য পূরণ করাই আমিরশাহি সরকারের প্রধান লক্ষ্য। এক্ষেত্রে ভিসা একক বা একাধিক প্রবেশের জন্য উপলব্ধ এবং একই সময়ের জন্য রিনিউ করা যেতে পারে এবং কিন্তু বৈধ ভিসার মেয়াদ হতে হবে মাত্র দু'মাস অর্থাৎ ৬০ দিন।
advertisement
কাজ বা জব (JOB)এক্সপ্লোরেশন:
জানা গিয়েছে আমিরশাহিতে তরুণ প্রতিভা এবং দক্ষ পেশাদারদের আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে এই ভিসাটি চালু করা হয়েছে। আমিরশাহির মাটিতে চাকরির উদ্দেশ্যে এই ভিসা নিয়ে কেউ প্রবেশ করলে তিনি কাজের সম্পূর্ণ সুযোগ পাবেন। এই ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনও স্পনসর বা হোস্টের প্রয়োজন নেই। এ বিষয়ে আমিরশাহী সরকারের বক্তব্য- মানবসম্পদ ও সে দেশের প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় দক্ষতা স্তরে শ্রেণীবদ্ধ এবং বিশ্বের সেরা ৫০০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন স্নাতক এবং সেই সমতুল্য শিক্ষার্থীদের জন্য এই ভিসা দেওয়া হবে পুরোমাত্রায়।
advertisement
advertisement
বিজনেস (BUSINESS) বা ব্যবসায়িক ভিসা:
মূলত গোটা বিশ্বের শিল্পপতি, বিনিয়োগকারী এবং উদ্যোক্তাদের সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে ব্যবসা ও নতুন কোনও শিল্প খুলতে আগ্রহীদের সুবিধা প্রদান করতে এই ভিসা চালু করা হয়েছে। এই ভিসা পেতে হলে সেই সমস্ত ব্যক্তিদের কোনও স্পনসর বা হোস্টের প্রয়োজন নেই।
advertisement
পর্যটন (TOURIST) ভিসা:
এই ক্ষেত্রে বহুকাল আগে থেকেই ভিসার সরলীকরণের পথে হেঁটে ছিল আরব আমিরশাহি সরকার। কারণ তাদের লক্ষ্য একটাই, যে কোনও প্রকারে দেশের পর্যটন শিল্পের হাল ফেরানো। এই কারনে পর্যটন ভিসার ক্ষেত্রে সংযুক্ত আরব আমিরশাহি পর্যটন প্রতিষ্ঠান দ্বারা স্পনসর করা নিয়মিত ট্যুরিস্ট ভিসার পাশাপাশি পাঁচ বছরের মাল্টি-এন্ট্রি ট্যুরিস্ট ভিসা চালু করা হয়েছিল। এই ধরনের ভিসা পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কোনও স্পনসরের প্রয়োজন হয় না এবং ওই ভিসা নিয়ে আমিরশাহিতে প্রবেশ করলে ওই ব্যক্তি সহজেই একটানা ৯০ দিন পর্যন্ত থাকতে পারতেন সে দেশের মাটিতে। তবে ওই ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে পর্যটককে একটি শর্ত অবশ্যই মেনে চলতে হত। সেটি হল, ওই ব্যক্তির দুবাই কিংবা আরব আমিরশাহিতে থাকার দিনের সংখ্যা কখনই যেন ১৮০ দিন পার না হয়। তাহলেই বিপদে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে ওই পর্যটকের। এমনকী ওই ভিসাটি পাওয়ার ক্ষেত্রে মাত্র ৪ হাজার ডলার মূল্য কিংবা সেই সমতুল্য টাকা পৃথিবীর যে কোনও ব্যাঙ্কে গচ্ছিত থাকলেই ওই ব্যক্তি সহজেই যেতে পারতেন আমিরশাহিতে।
advertisement
আত্মীয় পরিজন বা বন্ধুদের সাথে দেখা করার জন্য প্রবেশের অনুমতির ক্ষেত্রে :
ভিসার নতুন নিয়মে বর্তমান সংশোধনী অনুসারে একজন দর্শনার্থী আমিরশাহিতে প্রবেশের অনুমতির জন্য আবেদন করতে পারেন, যদি তিনি সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে বসবাসকারী নাগরিক বা বাসিন্দার আত্মীয় কিংবা বন্ধু হন। এই ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনও স্পনসর বা হোস্ট প্রয়োজন হয় না।
advertisement
অস্থায়ী কাজ বা মিশনের জন্য প্রবেশের অনুমতি ক্ষেত্রে:
এই ভিসাটি শুধুমাত্র তাঁদের দেওয়া হয় যাঁরা অস্থায়ী কাজের অ্যাসাইনমেন্ট যেমন প্রবেশন টেস্টিং বা প্রকল্প-ভিত্তিক মিশনের উদ্দেশ্যে আমিরশাহিতে প্রবেশ করতে চাইছেন। তবে এই ভিসার ক্ষেত্রে অবশ্যই স্পনসর প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে ওই ব্যক্তি যে সংস্থার হাত ধরে আমিরশাহিতে যেতে চাইছেন সেই সংস্থাকেই ওই ব্যক্তির স্পনসর হিসাবে নাম নথিভুক্ত করাতে হয়। পাশাপাশি প্রবেশের সময় উল্লিখিত ব্যক্তির একটি হেলথ সার্টিফিকেট জমা করতে হয় ভিসা অফিসে। এমনকী ওই ব্যক্তি কী কাজের জন্য আমিরশাহিতে যেতে চাইছেন তার যাবতীয় নথিপত্র জমা করতে হয় ভিসা অফিসে।
advertisement
অধ্যয়ন এবং প্রশিক্ষণের জন্য প্রবেশের অনুমতির ক্ষেত্রে :
এই ভিসার ক্ষেত্রে আমিরশাহি সরকার প্রশিক্ষণ এবং অধ্যয়নমূলক কোর্সে যোগদানকারী অথবা ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রামে অংশগ্রহণকারীদের জন্য সুযোগ দিয়েছে পুরোমাত্রায়। বিশ্বের যে কোনও নামজাদা ও স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষা বা গবেষণা প্রতিষ্ঠান বা সরকারি বা বেসরকারি সংস্থা থেকে ওই ব্যক্তি বা শিক্ষার্থীকে সার্টিফিকেট নিয়ে জমা করতে হবে ভিসা অফিসে। এমনকী ওই ব্যক্তি কী বিষয়ে অধ্যয়ন করবেন বা প্রশিক্ষণ নেবেন তার যাবতীয় নথিপত্র ভিসার আবেদন পত্রের সঙ্গে জমা করতে হয় উল্লিখিত ব্যক্তিকে।
এই সব ভিসা নিয়মের পাশাপাশি ওই দেশে বসবাসকারী স্থায়ী নাগরিক এবং অভিবাসী এবং কর্ম, ব্যবসা, এমনকী উচ্চতর শিক্ষার জন্য আমিরশাহির মাটিতে থেকে বিদেশিদের জন্য সে দেশে একাধিক নিয়ম তৈরি করেছে আমিরশাহি সরকার; যেমন গোল্ডেন রেসিডেন্স এবং গ্রিন রেসিডেন্স সিস্টেম।
গোল্ডেন রেসিডেন্স
আমিরশাহিতে বসবাসকারী মানুষের যোগ্যতার মাপকাঠি সে দেশের বাসিন্দাদের মূলত শ্রেণিবিন্যাস করতেই এই গোল্ডেন রেসিডেন্স পদ্ধতি চালু করা হয়েছিল। বর্তমানে এই বিষয়েও একাধিক সংশোধনী এনেছে আমিরশাহী সরকার। সে দেশের নিয়ম অনুযায়ী গোল্ডেন রেসিডেন্স সুবিধা মূলত ১০ বছর বা তার বেশি সময় ধরে আমিরশাহির মাটিতে বসবাসকারী, যেমন কোনও বিনিয়োগকারী, উদ্যোক্তা, ব্যতিক্রমী প্রতিভা, বিজ্ঞানী এবং পেশাদার, অসামান্য মেধাবী ছাত্র এবং স্নাতক, হিউম্যান ফ্রন্টলাইনার বা সমাজের সর্বস্তরের স্বনামধন্য ব্যক্তিদের দেওয়ার রেওয়াজ রয়েছে। তবে নতুন নিয়মে এই গোল্ডেন রেসিডেন্সের সুবিধা তার ধারককে এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের স্পনসর করার অনুমতি দেওয়ার সুবিধা দেওয়া হয়েছে। মৃত্যু পর্যন্ত ওই ব্যক্তি এবং তাঁর পরিবার বিশেষ করে ওই ব্যক্তির পত্নী এবং সন্তান এই সুবিধা পাবেন বলে জানানো হয়েছে।
গোল্ডেন রেসিডেন্স মূলত সে দেশের বিজ্ঞানী থেকে শুরু করে যে কোনও বিষয়ে পেশাদার কিংবা কৃতিদের তালিকায় যাঁর নাম রয়েছে, ব্যতিক্রমী অত্যন্ত মেধাবী ব্যক্তি ছাড়াও দেশের রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় বিনিয়োগকারী এবং দেশের শিল্পপতিদের দিয়ে থাকে আরব আমিরশাহি সরকার।
বিজ্ঞানীদের জন্য গোল্ডেন রেসিডেন্স
এ ক্ষেত্রে দেশের মাটিতে গবেষণারত এবং ওই দেশে আসা বিদেশি কোনও বিজ্ঞানী যে কোনও সৃজনশীল বিষয়ে গবেষণারত হলে ওই ব্যক্তি গোল্ডেন রেসিডেন্সের সুবিধা পেয়ে থাকেন। এছাড়াও কোনও বিষয়ে অত্যন্ত দক্ষ প্রযুক্তি ও কারিগরি বিদ্যায় পারদর্শী ব্যক্তিদের এই সুবিধা প্রদান করা হয়।
উদ্যোক্তাদের জন্য গোল্ডেন রেসিডেন্স
এ ক্ষেত্রে ওই আমিরশাহির মাটিতে বসবাসকারী কোনও শিল্পপতির আয় যদি বার্ষিক ১০ লক্ষ টাকার বেশি হয় তবে ওই ব্যক্তিকে গোল্ডেন রেসিডেন্সের সুবিধা দেওয়া হতে পারে। এমনকী দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পেও ওই ব্যক্তির অংশীদারিত্ব অবশ্যই থাকতে হবে। এছাড়াও, একটি অফিসিয়াল বিজনেস ইনকিউবেটর বা অর্থনীতি মন্ত্রণালয় বা উপযুক্ত স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে একটি স্টার্টআপ ধারণার জন্য অনুমোদন পাওয়া এই বিভাগে গোল্ডেন রেসিডেন্স পাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত।
মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য এবং স্নাতকদের জন্য গোল্ডেন রেসিডেন্স
এই বিষয়ে ওই দেশের মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের এই বাসভবনের সুবিধা প্রদান করা হয়। এ ক্ষেত্রে গোটা বিশ্বের সেরা ১০০টি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোনও ছাত্র-ছাত্রী যদি স্নাতক পাশ করে থাকেন তাহলেই ওই মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীকে তার পুরস্কারস্বরূপ আমিরশাহি সরকার এই সুবিধা প্রদান করে থাকে। মূলত দেশের প্রধান উন্নতির লক্ষ্যে নতুন প্রতিভা, দক্ষ পেশাদার, ফ্রিলান্সার, বিনিয়োগকারী এবং উদ্যোক্তাদের আকৃষ্ট করার জন্য এই সুবিধা দেওয়া হয়।
এ ছাড়াও গোল্ডেন রেসিডেন্সের পাশাপাশি সে দেশে চালু রয়েছে গ্রিন রেসিডেন্স বা বসবাস প্রদানের মতো সুবিধা। সাম্প্রতিক ভিসা নিয়মের বদলের পাশাপাশি দুবাই সহ আরব আমিরশাহি শাসিত সাতটি প্রদেশের ক্ষেত্রে এই নতুন নিয়ম কার্যকরী করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তবে নতুন এই নিয়মে সমস্ত বিষয়ের সরলীকরণ করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে আরব আমিরশাহি সরকারের পক্ষ থেকে। নতুন এই নিয়মে সে দেশের প্রতি পর্যটক ও ব্যবসায়ীদের আকর্ষণ বৃদ্ধি পাবে বলেই মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
Location :
First Published :
April 20, 2022 5:07 PM IST