হোম /খবর /বিনোদন /
Review of Aro Ek Prithibi: বিশ্বাসে মিলায় অন্বেষণ, তর্কে বহুদূর

Review of Aro Ek Prithibi: বিশ্বাসে মিলায় অন্বেষণ, তর্কে বহুদূর

আরো এক পৃথিবী

আরো এক পৃথিবী

Review of Aro Ek Prithibi: অতনু ঘোষ পরিচালিত ‘আরো এক পৃথিবী’ ছবিতে প্রতীক্ষা বা কারওর পথ চেয়ে অপেক্ষায় থাকার সেই বিশ্বাস নিজেই একটি চরিত্র৷ তাই নায়িকার নামে মিশে যায় আবহ আর প্লট৷

  • Share this:

জীবন থেকে পালিয়ে যাওয়া নয়৷ বরং জীবনকে আরও জড়িয়ে ধরতে ঘর ছেড়েছিলেন শ্রীকান্ত মুন্সী৷ উত্তর কলকাতার গরানহাটা থেকে তাঁর ঠিকানা এখন লন্ডনের প্রান্তিক এলাকায় খালে ভেসে থাকা অকেজো নৌকো৷ লন্ডনেরও যে ‘প্রান্তিক’ বলে এত কিছু থাকতে পারে, সেখানে দাঁড়িয়েই তার সাক্ষী থাকলেন প্রতীক্ষা৷ শুধু চরিত্রের নাম নয়, অতনু ঘোষ পরিচালিত ‘আরো এক পৃথিবী’ ছবিতে প্রতীক্ষা বা কারওর পথ চেয়ে অপেক্ষায় থাকার সেই বিশ্বাস নিজেই একটি চরিত্র৷ তাই নায়িকার নামে মিশে যায় আবহ আর প্লট৷ বলিষ্ঠ অভিনয়ে সেই আবহ এবং প্লটকে ছবির অন্যতম স্তম্ভ করে তুলেছেন তাসনিয়া ফারিন এবং কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়৷ তাঁরা আরো এক পৃথিবীর দুই বাসিন্দা, প্রতীক্ষা এবং শ্রীকান্ত মুন্সী৷

লন্ডনের এক সুদৃশ্য পার্কে আলুথালু বেশের বেহালাবাদক শ্রীকান্তর সঙ্গে প্রতীক্ষার দেখা হল তাঁর জীবনের বড় বেসুরো সময়ে৷ লন্ডনে নিজের স্বামীর কাছে এসেছেন নববিবাহিতা প্রতীক্ষা৷ নতুন সংসার শুরু করবেন বলে৷ এলোমেলো জীবনে নতুন একটা ঠিকানা তাঁর প্রয়োজন৷ নৈহাটির ছাপোষা সংসারে বড় হওয়া প্রতীক্ষার বাবা পেশাদার গুন্ডা৷ স্বামীর সৎপথে ফেরা অসম্ভব বুঝে মেয়ের হাত ধরে ঘর ছাড়েন প্রতীক্ষার মা৷ পারিবারিক ফোটো ফ্রেমে প্রতীক্ষার পাশে নতুন ‘বাবা’ আসতে সময় নিলেন না৷ কিন্তু দোহারা একরোখা কিশোরীর কাছে তিনি রয়ে গেলেন ‘ওই লোকটা’ হয়েই৷ তাকে, মাকে এবং দুই সৎ ভাইয়ের পরিপাটি ও ভদ্র বৃত্ত ছেড়ে কিশোরী বার বার চলে যায় ভাঙাচোরা পরিবেশে তার সমাজবিরোধী বাবার কাছে৷ মেয়ের সামনে থেকেই একদিন তার বাবাকে টানতে টানতে নিয়ে গেল পুলিশ৷ এই বিচ্ছেদ, যন্ত্রণাকে সহ্য করেই বড় সে৷

নিজের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা মনে রেখে মেয়ের জন্য সুপাত্র খুঁজেছেন প্রতীক্ষার মা৷ যে সে পাত্র নয়, অরিত্র ইঞ্জিনিয়ার, কার্মরত লন্ডনে৷ বিয়ের পর তিনি ফিরে গিয়েছেন কাজের জায়গায়৷ এ বার তাঁর নবপরিণীতার যাওয়ার পালা৷ দু’বার ভিসা বাতিল হয়ে অবশেষে যাওয়ার ছাড়পত্র পেলেন প্রতীক্ষা৷ কিন্তু লন্ডনে পৌঁছনর পরও নৈহাটির মেয়ে প্রতীক্ষার সঙ্গ ছাড়ল না অনিশ্চয়তা৷ অরিত্র যেন কর্পূরের মতো উবে গিয়েছেন৷ তাঁর ফোন সুইচড অফ৷ কোনও সূত্র দিতে পারছে না অফিস৷ প্রৌঢ়া বাড়িওয়ালি জানাচ্ছেন, একদিন হঠাৎই কিছু না জানিয়ে ঘর ছেড়ে চলে গিয়েছেন ওই কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার৷

আরও পড়ুন :  সফল হয়নি অভিনেত্রী-জীবন, ‘করীব’-এর নায়িকা নেহা এখন এক সুপারস্টারের স্ত্রী, ঘোর সংসারী

তাঁর সঙ্গে কেন এমন আচরণ করলেন অরিত্র, সেই প্রশ্নের উত্তর জানতে চান প্রতীক্ষা৷ উত্তরের অপেক্ষায় অনিশ্চয়তা সত্ত্বেও লন্ডনে থেকে যান প্রতীক্ষা৷ স্বল্প সংলাপী তরুণীর কোথাও যেন বিশ্বাস ছিল, তিনি প্রতারিত হননি৷ তাহলে অরিত্র কেন তাঁকে এড়িয়ে গেলেন-নির্দিষ্ট উত্তর চাই৷ কারণ বহু দ্বন্দ্বে পোড়খাওয়া প্রতীক্ষা ‘হয়তো’, ‘বোধহয়’, ‘কিন্তু’-র উপর ভরসা করেন না৷ তাঁর আস্থা সঠিক উত্তরে৷ অরিত্রকে অন্বেষণ পর্বে প্রতীক্ষার সঙ্গী হন সম্পূর্ণ অপরিচিত শ্রীকান্ত এবং আয়েশা৷ তাঁরা দুজনেই প্রতীক্ষাকে দেশে ফিরে যেতে বলেন৷ আবার নিজেদের জীবন বিপন্ন করে পাশেও দাঁড়ান৷

আরও পড়ুন :  সিদ্ধার্থর প্রিয় মৃত পোষ্য ধরা থাকল কিয়ারার হাতের গয়নায়, বানালেন নামী শিল্পী

শেষ পর্যন্ত কি অরিত্র চট্টোপাধ্যায়কে খুঁজে পাবেন প্রতীক্ষা? তাঁর উদ্বেগ, দুশ্চিন্তা, অন্বেষণের শরিক হতে যেতেই পারেন প্রেক্ষাগৃহে৷ এই ছবিতে তাসনিয়া আরও এক বার মুগ্ধ করেছেন৷ প্রতীক্ষা চরিত্রে নামমাত্র সংলাপ এবং যৎসামান্য প্রসাধনে তাঁর অভিনয় ও অভিব্যক্তি অপূর্ব বাঙ্ময়৷ তাঁর পাশে শ্রীকান্ত মুন্সীর ভূমিকায় কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় এই ছবির অন্যতম চুম্বক৷ আয়েশার সংলাপমুখর ভূমিকায় অনিন্দিতা বসুর অভিনয় একদিকে কন্ট্রাস্ট, অন্যদিকে যোগ্য সঙ্গত৷ অরিত্র হয়ে দর্শকের মন ছুঁয়ে যান সাহেব ভট্টাচার্য৷

 

কুশীলবদের অভিনয়ের পাশাপাশি এ ছবির সংলাপও দর্শকদের কুর্নিশ পাবে৷ দেবজ্যোতি মিশ্রের সুর এবং অনির্বাণ মুখোপাধ্যায়ের কথায় ছবির গান পরিমিত ও যথাযথ৷ প্রতীক্ষার অন্বেষণ প্রবাহ কোথায় যেন মিশে যায় নাগেশ কুকুনুরের ছবি ‘ডোর’-এর জীনাতের লড়াইয়ের সঙ্গে৷ প্রতীক্ষা ও জীনাত অনিশ্চয়তার সমার্থক নন, বরং বিশ্বাস ও আস্থার সমনামী৷

Published by:Arpita Roy Chowdhury
First published:

Tags: Aro Ek Prithibi, Movie Review