#কলকাতা: কলকাতায় অনুষ্ঠান করতে এসে প্রয়াত সঙ্গীতশিল্পী কেকে, আর তা নিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয় দেশজুড়ে। কলকাতা তথা রাজ্য জুড়ে বিতর্ক-ও কম হয়নি। সোশ্যাল মিডিয়া ছেয়ে গিয়েছিল নানা তর্ক-বিতর্ক-সমালোচনা-কটাক্ষে। জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পীর মৃত্যুর জন্য কে দায়ী? তা নিয়ে শুরু হল চুলচেরা বিশ্লেষণ। কারও মতে প্রচণ্ড গরম এবং মাত্রাতিরিক্ত দর্শক, এর সঙ্গে এসি কাজ না করায় সমস্যা বেড়ে গিয়েছিল। কারও অভিযোগ আয়োজকদের বিরুদ্ধে। তাঁদের মতে, আয়োজকরা যদি আরও একটু আগে তৎপর হতে পারতো, তাহলে এইভাবে অকালে চলে যেতে হত না শিল্পীকে। যদি একটু আগে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যেত, তাহলে হয়তো বেঁচে যেতেন কেকে।
এসএফআই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদকে। এই ঘটনার তদন্তের দাবি জানিয়েছে এসএফআই। সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য বলেন, 'আমরা সকলেই জেনেছি সঙ্গীতশিল্পী কেকে-র আকস্মিক প্রয়ান আমাদের কলকাতা শহরের ও গোটা দেশের মানুষকে মর্মাহত করেছে। কলকাতা বিশেষত সাংস্কৃতিক রাজধানী। সেখানে এসে একজন সঙ্গীতশিল্পীকে কিছু অসংবেদনশীল উদ্যোক্তার অপদার্থতা, অপরিপক্কতার জন্য ভুগতে হল এবং তাঁর শেষ সময়টা এভাবে কাটল, এটা আমরা কেউ মেনে নিতে পারছি না। গোটা দেশের কাছে আমাদের রাজ্যের তো বটেই, আমাদের কলকাতার যে ঐতিহ্য, তার যে সংস্কৃতি-সংক্রান্ত গরিমা, গোটাটাই ভুলুন্ঠিত হয়েছে। আমাদের মুখ পুড়েছে সবার কাছে। আমরা জানি না নজরুল মঞ্চের যা ধারণ-ক্ষমতা, তার চাইতে তিনগুন, চারগুন লোক ঢোকানো হল কী করে? এই বাড়তি লোক টাকা নিয়ে ঢোকানো হয়েছে কিনা আমরা জানি না। এসি বন্ধ ছিল বা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল বলে শুনতে পাচ্ছি। শুনতে পাচ্ছি, কর্মীরা সামগ্রিক অব্যাবস্থা নিয়ে মুখ খুলছে। উদ্যোক্তারা কী করছিল? যে কলেজের ফেস্ট তৃণমূল ছাত্র পরিষদ দীর্ঘদিন ধরে দখল করে রেখেছে, সেই কলেজের ছাত্র সংসদ গোটা রাজ্যের অসংখ্য ছাত্র সংসদের মতো এটাও গায়ের জোরে দখল করে রাখা। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সর্বোচ্চ নেতারা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা এই অব্যবস্থা সামাল দেওয়ার জন্য কী করলেন? অনুষ্ঠানের বেশ কিছু ভিডিও সামনে এসেছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে কেকে বারবার কপালের ঘাম মুছছেন। কখনও পিছনের এলইডি-টা বন্ধ করে দিতে বলছেন। কখনও জল খাচ্ছেন। একটা দৃশ্যত অস্বস্তির মধ্যে তাঁকে পারফর্ম করতে হচ্ছিল এটা স্পষ্ট। সেখানে দাঁড়িয়ে এই দায়িত্ব জ্ঞানহীনতার দায়িত্ব কে নেবে? পুলিশ-প্রশাসন কি এই বাড়তি ভিড়টা সম্পর্কে অবহিত ছিল না? তাঁরা কেনও কোনও কথা বললো না? যে কলেজের স্টুডেন্ট ইউনিয়ন এটা করেছে, তাঁদের দিকে কি একবারও আঙুল উঠবে না? এই শোকের আবহের মধ্যে দাঁড়িয়েও প্রয়োজনীয় প্রশ্নগুলো ওঠা জরুরি৷ কারা এই অব্যবস্থার সঙ্গে জড়িত থাকল, অবশ্যই তদন্ত হওয়া উচিত এবং তদন্তে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।"
কেকে-কে স্মরণ করে অনুষ্ঠান-এর আয়োজন করে সিপিআইএম-এর ছাত্র সংগঠন এসএফআই। সংগঠনের দক্ষিণ দমদম তিন লোকাল কমিটি একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। কেকে-র গানে শিল্পীকে স্মরণ করেন তাঁরা। সংগঠনের উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য, ঋতঙ্কর দাস জানালেন, "কেকে-র মৃত্যু দুঃখের, যন্ত্রণার। আমাদের প্রজন্মের কাছে ছোটবেলার প্রথম অনুভূতিগুলোর সঙ্গে জুড়ে থাকা সেতু ভেঙে পড়ার মত যন্ত্রণা। দীর্ঘদিন ধরে রাজ্যের বিভিন্ন কলেজে ছাত্র সংসদের নির্বাচন বন্ধ। কারণ কী? নজরুল মঞ্চে সেদিনের ব্যবস্থাপনার জন্য কারা দায়ী? কেন তাদের সামনে আনা হচ্ছে না?"
UJJAL ROYনিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: KK Death