মুম্বই: রানি মুখোপাধ্যায় এবং অনির্বাণ ভট্টাচার্যের ‘মিসেস চ্যাটার্জি ভার্সেস নরওয়ে’-র ঘটনা আসলে এক বাঙালি মায়ের জীবনকাহিনি থেকে উদ্বুদ্ধ। বিরাটির সাগরিকা চট্টোপাধ্যায়। অনুরূপ এবং সাগরিকা ভট্টাচার্য নরওয়েতে থাকতেন। তাঁদের দুই সন্তান ছিল। ২০১১ সালে তিন বছরের ছেলে অভিজ্ঞান এবং এক বছরের মেয়ে ঐশ্বর্যকে এভাবেই কেড়ে নিয়েছিল নরওয়ে প্রশাসন। দাবি করেছিল, তাঁদের সন্তান পালনের পদ্ধতি সঠিক নয়। বাবা-মায়ের কাছ থেকে সন্তানদের হেফাজত কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। সেই গল্পই সিনেমার চিত্রনাট্যে তুলে এনেছেন পরিচালক অসীমা চিব্বর।
সেই ছবির ট্রেলার দেখে আসল ‘মিসেস চ্যাটার্জি’র কী প্রতিক্রিয়া জানেন? সদ্য এক সংবাদমাধ্যমকে সাগরিকা জানান, তিনি কেঁদে ফেলেছিলেন ট্রেলার দেখে। তাঁর মনে হচ্ছিল, তিনি যেন আবার সেই লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। সমস্ত স্মৃতি আবার টাটকা হয়ে ওঠে।
আরও পড়ুন: পর্দার অনির্বাণ-রানির মতো বাস্তবে এদের দুধের শিশুকে কেড়েছিল নরওয়ে, চোখে জল আসবে ঘটনা শুনলে
সাগরিকার কথায়, ‘‘আমার গল্প বলা হচ্ছে পর্দায়। এই অনুভূতিটা ভাষায় প্রকাশ করা খুব কঠিন। ট্রেলার দেখে মনে হল, আমি যেন আবার সেই লড়াইটায় বাঁচছি। আমার মতে, সকলের জানা উচিত, অভিবাসী বাবা-মায়েদের সঙ্গে কীরকম ব্যবহার করা হয়। আজও! জার্মানিতেও যেটা ঘটল। আরিহা শাহের মা ধারার পাশে আছি আমি। যাঁর ছোট্ট মেয়েটাকে নিয়ে গিয়েছে ওখানকার প্রশাসন। আমি রানি মুখোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানাতে চাই। তিনি নিজেও একজন মা। নিজের সন্তানদের ফিরে পাওয়ার যে লড়াইটা আমি করেছি, সেটা পর্দায় ফুটিয়ে তুলেছেন তিনি। ট্রেলার দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম।’’
ট্রেলার মুক্তির পর থেকেই নরওয়ের প্রশাসন নিয়ে নানা ধরনের প্রশ্ন উঠতে থাকে চারদিকে। মানুষ অবগত হন বিদেশের মাটিতে এক মায়ের সঙ্গে কী ভয়ানক ঘটনা ঘটতে পারে! নরওয়ের শিশু সুরক্ষা পরিষেবার তরফে সাগরিকা ও অনুরূপের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, তাঁরা বাচ্চাদের জোর করে খাবার খাওয়ান। ছেলেকে ভিন্ন ঘর না দিয়ে নিজেদের সঙ্গে ঘুম পাড়ান। হাত দিয়ে মেখে খাবার খাওয়ান মা। বাচ্চাদের ভাল জামাকাপড় আর খেলনা কিনে দেন না, ইত্যাদি।
View this post on Instagram
কূটনৈতিক এবং আইনি ঝামেলার পর নরওয়ের কর্তৃপক্ষ শিশুদের হেফাজত দেওয়া হয় তাঁদের কাকাকে। তাঁকে সন্তানদের নিয়ে ভারতে ফেরার অনুমতি দেওয়া হয়। এই দীর্ঘ লড়াইয়ের মধ্যেই অনুরূপ ও সাগরিকার বিচ্ছেদ হয়ে যায়। সাগরিকা সন্তানদের হেফাজত ফিরে পাওয়ার লড়াইয়ে নামেন একাই। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর সাগরিকা তাঁর সন্তানদের বাড়িতে নিয়ে যেতে পেরেছিলেন। ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে কলকাতা হাইকোর্ট তাঁর ছেলে-মেয়ের হেফাজত মঞ্জুর করে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Anirban bhattacharya, Mrs Chatterjee Vs Norway, Rani Mukerji