Professor Sengupta: মনের অন্ধকার জগতের জট খুলল পর্দায়, তারকাদের আলোর রোশনাইয়ে রঙিন হল ‘প্রফেসর সেনগুপ্ত’-র প্রিমিয়ারের সাঁঝ
- Published by:Siddhartha Sarkar
- news18 bangla
Last Updated:
পরতে পরতে রোমহর্ষক রহস্যে ভরা এই থ্রিলার ধর্মী ওয়েব সিরিজ সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে। আর ‘প্রফেসর সেনগুপ্ত’-র হাত ধরেই প্রথম বার কোনও ওয়েব সিরিজে অভিনয় করেছেন দীপান্বিতা।
কলকাতা: ছোট পর্দায় তুমুল জনপ্রিয়তা লাভ করেছেন অভিনেত্রী দীপান্বিতা রক্ষিত। সৌজন্যে ‘খুকুমণি হোম ডেলিভারি’ এবং ‘তুঁতে’। এই দুই ধারাবাহিকের হাত ধরেই যেন দর্শকদের ঘরের মেয়ে হয়ে উঠেছিলেন তিনি। তবে বেশ কিছু সময় ধরে ছোট পর্দা থেকে দূরে রয়েছেন তিনি। এবার তিনি পা রেখেছেন ওয়েব সিরিজের দুনিয়ায়। ক্লিক ওটিটি প্ল্যাটফর্মে দেখা যাচ্ছে ওয়েব সিরিজ ‘প্রফেসর সেনগুপ্ত’। পরতে পরতে রোমহর্ষক রহস্যে ভরা এই থ্রিলার ধর্মী ওয়েব সিরিজ সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে। আর ‘প্রফেসর সেনগুপ্ত’-র হাত ধরেই প্রথম বার কোনও ওয়েব সিরিজে অভিনয় করেছেন দীপান্বিতা। তাঁর পাশাপাশি এই সিরিজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখা যাবে জয় সেনগুপ্ত, জয়জিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, অনুজা রায় এবং জিৎসুন্দর চক্রবর্তীকে।

advertisement
আপাতদৃষ্টিতে দুর্ঘটনা বলে মনে হলেও ময়নাতদন্তে উঠে আসে অন্য তথ্য! সেই খুনের তদন্ত করতেই অনির্বাণের জীবনে প্রবেশ করেন অফিসার ইন চার্জ রজত। কারণ যে ছেলেটি খুন হয়েছে, সে আদতে অনির্বাণেরই প্রাক্তন ছাত্র। সেই খুনের তদন্ত করতে করতেই অনির্বাণের কাছে তিন্নির কথা জানতে পারেন রজত। এদিকে তিন্নির বাড়িতে গিয়ে চমকে ওঠেন রজত। কারণ ছোট্ট শিশুটি জানায় যে, সে না কি তার অনি আঙ্কেলের রেফ্রিজারেটরে একটা কাটা কান দেখতে পেয়েছে। জানা যায় যে, তিন্নিকে একটা পুতুল বানিয়ে দেবেন বলে অনির্বাণ সিলিকনের তৈরি হিউম্যান বডি পার্টস কিনে এনেছেন। এতে রজতের সন্দেহ আরও দৃঢ় হতে থাকে।
advertisement

সন্দেহের বশবর্তী হয়ে রজত তিন্নির পুতুলটা দেখে তার একটি কান ছিঁড়ে সেটা ফরেন্সিকে পাঠান। কারণ এর কিছু দিন আগেই পুলিশ একটি মেয়ের মৃতদেহ জলাশয় থেকে উদ্ধার করেছিল, যাঁর কান, ঠোঁট এবং হাতের আঙুল নিপুণ ভাবে কাটা ছিল। এরপর সার্চ ওয়ারেন্ট নিয়ে অনির্বাণের বাড়ি পৌঁছে যান রজত। রজত এসিপি-র কাছে জানান যে, তিনি অনির্বাণের বাড়ি সার্চ করতে চান, কারণ তিনি নিশ্চিত যে, অনির্বাণ কিছু লুকোচ্ছেন। নাহলে কেউ হিউম্যান বডি পার্টস দিয়ে বাচ্চার জন্য পুতুল কেন বানাবেন? রহস্যময় এই বাড়িতে কি লুকোনো আছে? প্রফেসর অনির্বাণ কি সত্যিই এই খুনের ব্যাপারে কিছু জানেন? এই সমস্ত প্রশ্নই ঘুরপাক খেতে থাকে। আর এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর পেতে গেলে দেখতেই হবে হাড়-হিম করা থ্রিলার ‘প্রফেসর সেনগুপ্ত’।
advertisement

অভিনেত্রী দীপান্বিতা রক্ষিত জানান, ‘‘এই প্রিমিয়ার লঞ্চ আমার জন্য একান্তই বিশেষ ছিল। বিশেষ করে আমার বাবা-মা আমার পারফরম্যান্স দেখে খুব খুশি হয়েছেন। বড় পর্দায় সিরিজটা দেখা, সেইসব মানুষদের সঙ্গে বসে, যাঁদের সঙ্গে আমি কাজ করেছি এবং অনেককেই আগে টিভি ও ওটিটিতে দেখে মুগ্ধ হয়েছি তা আমার কাছে এক দারুণ অভিজ্ঞতা ছিল। এখন তাঁদের সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করা সত্যিই একটা স্মরণীয় মুহূর্ত। জয় সেনগুপ্ত, জয়জিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো অভিজ্ঞ অভিনেতাদের থেকে অনেক কিছু শেখার সুযোগ হয়েছে। জিৎ সুন্দর চক্রবর্তীর সঙ্গেও আমার ভাল বন্ধুত্ব তৈরি হয়েছে। এই সিরিজটা শুধু বিনোদনের জন্য নয়, নারীদের সুরক্ষা নিয়েও অনেক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে বিশেষ করে আমাদের মতো মেয়েদের জন্য, যারা অনেক সময় অস্বস্তিকর প্রস্তাবকে ‘না’ বলতে গিয়ে বিপদের আশঙ্কায় ভোগেন।’’
advertisement

সিরিজের মুখ্য চরিত্র অভিনেতা জয় সেনগুপ্ত জানান, ‘‘প্রফেসর সেনগুপ্তর চরিত্রে অভিনয় করা ছিল এক কঠিন চ্যালেঞ্জ। তিনি এক জটিল, বহুস্তরীয় মানুষ – সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন, এক অন্ধকার আবেশে আচ্ছন্ন, আর মানসিক ভারসাম্যের সীমানায় দাঁড়িয়ে থাকা একজন চরিত্র। এমন চরিত্র সচরাচর পাওয়া যায় না – যার যাত্রাপথ এতটা অস্থির, তবু এতটা আকর্ষণীয়। পরিচালক রাজদীপ ঘোষ পুরো গল্পটাকে অসাধারণ সূক্ষ্মতা আর গভীরতায় গেঁথেছেন বলে আমি বিশ্বাস করি। এই গল্পটা দর্শকের সামনে কীভাবে খুলে যাবে তা দেখার জন্য আমি সত্যিই উৎসুক। এটা একেবারেই সাধারণ ধারার নয় – এই গল্প রহস্যে মোড়া, অস্থির, আর মনস্তাত্ত্বিক অন্ধকারের ছায়ায় ঢাকা। আমি চাই দর্শকরা এই সাহসী টোন আর শক্তিশালী গল্প বলার ভঙ্গিকে সাদরে গ্রহণ করুন।’’
advertisement

এই প্রসঙ্গে পরিচালক রাজদীপ ঘোষ বলেন যে, “কোনও কাজ দর্শকদের কাছ থেকে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পেলে, সেটা সবসময়ই অত্যন্ত আনন্দের ও তৃপ্তির। প্রিমিয়ার স্ক্রিনিং আমাদের গোটা টিমের দীর্ঘ দিনের পরিশ্রমকে সার্থকতা দিয়েছে। বন্ধু-বান্ধব ও মিডিয়ার সহকর্মীরাও ভীষণ উৎসাহ দিয়েছেন ও প্রশংসা করেছেন। এই প্রজেক্টটা আমার জন্য একেবারেই নতুন অভিজ্ঞতা। এর আগে আমি কখনও একজন সাইকোপ্যাথিক চরিত্রকে কেন্দ্র করে কোনও গল্প পরিচালনা করিনি। এমন এক চরম মানসিক গঠনের মানুষের মনের ভেতর ঢুকে পড়াটা ছিল দারুণ রোমাঞ্চকর। দর্শকেরা একটি তীক্ষ্ণ, টানটান উত্তেজনায় ভরা, এবং মানসিকভাবে গভীর এক সিরিজের সাক্ষাৎ পেতে চলেছেন, যা এক জটিল ও বিস্ময়কর মানসিক গঠনের ভিতরে প্রবেশ করাবে।”
advertisement

অভিনেত্রী অনুজা রায়ের কথায়, ‘‘এমন একটি প্রজেক্টের অংশ হতে পেরে আমি, আমার পরিবার ও বন্ধুরা দারুণ খুশি। সবাই ভীষণ উচ্ছ্বসিত। এই প্রজেক্টে সই করার মুহূর্ত থেকেই আমি এই দিনটির অপেক্ষায় ছিলাম। এত মেধাবী এবং আন্তরিক একটা টিমের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা সত্যিই অসাধারণ। বহুদিন পর আমার সহ-অভিনেতাদের সঙ্গে আবার দেখা হওয়াটা ছিল খুবই আবেগপূর্ণ, আর মিডিয়া জগতের সঙ্গে এই নতুন যোগাযোগ ছিল আমার জন্য এক দারুণ অভিজ্ঞতা।’’
advertisement

অভিনেতা জিৎসুন্দর চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘ এই প্রজেক্ট নিয়ে ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে ইতিমধ্যেই বেশ উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। পোস্টার এবং চমৎকার ভিজ্যুয়াল, বিশেষ করে ঘাটশিলা ও উত্তরবঙ্গের মনকাড়া লোকেশন দেখে দর্শকেরা দারুণ সাড়া দিয়েছেন। সিরিজটির শুটিং শেষ বছর হয়েছিল। প্রায় এক বছর পর আবারও কাস্ট ও ক্রুদের সঙ্গে দেখা হওয়া ছিল সত্যিই আবেগঘন। শ্যুটিং শিডিউল ছিল অত্যন্ত ক্লান্তিকর -তবুও আজ যখন শেষ ফলাফলটা দেখি, তখন মনে হয় সব কষ্ট সার্থক হয়েছে।’’

অভিনেতা জয়জিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘এই সিরিজে দর্শকদের জন্য রয়েছে এক অন্যরকম অভিজ্ঞতা – এটি একদিকে যেমন টানটান সাইকো-থ্রিলার, তেমনি আবার একজন পুলিশের চরিত্রের মাধ্যমে পাওয়া যাবে একটু খামখেয়ালি ধরনের হাস্যরসও। চিত্রনাট্যের বাইরে গিয়েও আমি কিছু ইম্প্রোভাইজ করেছিলাম, যেটা পরিচালক খুবই উপভোগ করেছেন। দর্শকরা নিশ্চয়ই সেই মজাদার সংলাপগুলো পছন্দ করবেন। এই সিরিজটি একদিকে অন্ধকার, তীক্ষ্ণ, আবার পুরোপুরি বিনোদনে ভরপুর।’’
Location :
Kolkata,West Bengal
First Published :
August 05, 2025 3:40 PM IST