#কলকাতা: কিছু কিছু ছবি হয়, যার ট্রেলারে কোনওরকম সাসেপেন্স রাখেন না পরিচালক ৷ কিছু কিছু ছবি হয়, যা কিনা প্রচন্ড রকমের প্রেডিক্টেবল হয়েও, চোখ ফেরানো যায় না ছবির শক্ত করে বাঁধা প্লট থেকে ৷ রানি মুখোপাধ্যায়ের সো কল্ড কামব্যাক ছবি ‘হিচকি’কে যদি অল্প কথায় কিংবা সহজ কথায় বর্ণনা করতে হয়, তাহলে ‘হিচকি’ একেবারেই এই ঘরানার ছবি ৷ যার গল্প অতি চেনা, ক্লাইম্যাক্স অতি পরিচিত ৷ তবুও আপনি ছবি পুরোটা দেখবেন ! কেন? পারফরম্যান্স ! আর যা দিয়েই ছবি আড়াই ঘণ্টা অবধি টেনে দেওয়া যায় ৷ ঠিক এরকমটিই করলেন রানি মুখোপাধ্যায় ৷ পুরো ছবির কৃতিত্বকে নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে ফেললেন, আর সহ অভিনেতারা শুধুমাত্র সঙ্গ দিলেন রানির সঙ্গে !
২০১৪ সালে মুক্তি পেয়েছিল রানি-র মর্দানি ৷ তখনও শোরগোল পড়ে গিয়েছিল, এটা রানির একেবারে জবরদস্ত বলিউডে রি-এন্ট্রি ৷ তবে সেই ছবিতে রানি প্রশংসিত হলেও, বক্স অফিসে খুব একটা সফলতা পায়নি সেই ছবি ৷ এরপর চার বছর ৷ ঘরে ছোটো মেয়ে আদিরা, কিছুটা হলেও যশরাজ প্রোডাকশনের কাজে সাহায্য করা ৷ দিব্য ছিলেন তিনি ৷ তবে অভিনেত্রী রানি বেরিয়ে আসার জন্য যেন সুযোগ খুঁজছিল ৷ সেটাই ‘হিচকি’র প্রতিটা ফ্রেমে ধরা পড়ছিল বার বার ৷ রানির অভিনয় দেখে মনেই হয়নি, বিরতি নিয়ে ছিলেন তিনি বা প্রচলিত শব্দ কামব্যাক !
টরেট সিন্ড্রোমে আক্রান্ত ছবির নয়না ওরফে রানি ৷ এই সিন্ড্রোমের কারণে মুখ থেকে চ..চ...চ এর মতো উদ্ভব আওয়াজ বার করতে থাকে সে ৷ এর কারণেই, প্রায় ১২টা স্কুল থেকে বার করে দেওয়া হয়েছে তাঁকে ৷ কিন্তু ১৩ নম্বর স্কুলে শেষপর্যন্ত নয়নার সুযোগ ঘটে৷ আর সেই ১৩ নম্বর স্কুলেই পড়ানোর সুযোগ আসে রানির ৷ তাও, ‘রাইট ফর এডুকেশন’ ক্যাটেগরিতে বস্তির ছেলেমেয়েদের ! যাদের কিনা আবর্জ্জনা হিসেবেই দেখতেন স্কুলের অন্য মাস্টারমশাইরা ৷ মোটামুটি এখান থেকেই গল্প শুরু ৷ এরপর যা ঘটে, তা গল্পকে শেষ পর্যন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ৷ এমনকী, এই গল্প এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ছক, অতি চেনা মানে প্রেডিক্টেবল হলেও আপনি বসে থাকবেন ৷ বসে থাকবেন শুধুই রানি ম্যাজিকে মুগ্ধ হয়ে ৷
গোটা বিশ্বে এর আগেও মাস্টারমশাই ও পড়ুয়াদের সম্পর্ক নিয়ে ছবি হয়েছে ৷ জনপ্রিয় ছবি গুলির প্রত্যেকটিতেই কোনও না কোনও শারীরিক, দৈহিক ‘অক্ষমতা’কে তুলে ধরা হয়েছে ৷ যেমন, তারে জমিন পর, ব্ল্যাক, টু স্যার উইথ লাভ, গুড উইল হান্টিং ৷ হিচকি ছবিটিও ব্র্যাড কোহেনের লেখা একটি ইংরেজি সাহিত্য তথা সেই সাহিত্য থেকে তৈরি হওয়া হলিউড ছবি ‘ফ্রন্ট অফ দ্য ক্লাস: হাও টরেট সিনড্রম মেড মি টিচার আই নেভার হ্যাড ’ থেকে অনুপ্রাণিত ৷ প্রত্যেকটি ছবির ক্ষেত্রেই প্রায় একই ফমুর্লা ব্যবহার হয়েছে ৷ একজনের হাত ধরে আরেকজনের উত্তরণ ৷ হিচকি সেদিক থেকে আলাদা নয়, চিত্রনাট্যে কোনওরকম ঝুঁকি নিতে চাননি পরিচালক সিদ্ধার্থ পি মালহোত্রা ৷ শুধু সহজ-সরল ভাবে গল্প বলে গিয়েছেন ৷ সঙ্গে বিনোদনের মশলা দিতে দিতে ৷ আর রানিকে যেন গোটা চিত্রনাট্য তুলে দিয়েছেন ‘সঠিক কামব্যাক’-এর জন্য ৷
হিচকি ছবি দেখে মনেই হতে পারে, আদিত্য চোপড়া তাঁর অভিনেত্রী বউকে একটা গোটা সিনেমা উপহার দিয়েছেন ৷ যেখানে রানিই সব৷ তবে সঙ্গে এটাও বলতে হয়, রানি সেই উপহারের মর্যাদা রেখেছেন৷ বক্স অফিসে ঝড় তোলার মতো ছবি নয় হিচকি ৷ তবে অভিনেত্রী রানি-র জন্য এ ছবি মনে থাকতে পারে বহুদিন৷ ৷ অন্তত, রানিকে ফের দেখার ইচ্ছে তো জাগাবেই ৷ বাকিটা হল থেকে বেরিয়ে চ...চ.. চ.. আপনার বদ অভ্যাস না হয়ে যায় !
হিচকিপরিচালক: সিদ্ধার্থ মালহোত্রারানি মুখোপাধ্যায়, সুপ্রিয় পিলগাঁওকর, নীরজ কবি, হর্ষ মায়ার, বিক্রান্ত সোনি ৷
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Bollywood, Hichki Review, Movie, Rani Mukherjee, Review