#কলকাতা: ‘আমি লোভি নই, এই বাড়িটাকে ভালোবাসি, এটাই আমার প্রেমিকা...!’ ৭৮ বছরের থুরথুরে বুড়ো ৷ পাকা দাড়ির মধ্যে দিয়ে মুখের চামড়া ঝুলে পড়েছে গলা পর্যন্ত৷ চশমার কাচ ঝাপসা ৷ আধা পরিষ্কার পোশাক ৷ ভাঙা এক বাড়ির থুরি হভেলির মাঝে খাটিয়ায় শুয়ে শুয়ে দিনরাত কাটানো ৷ উঠোনে ঘোরাফেরা ভাড়াটে লোকজন আর কয়েক জোড়া ছাগলের মাঝে, এই বুড়োর দুটিই স্বপ্ন ৷ তাঁর ফতিমা বেগম যত শীঘ্রই পরলোকে গমন করবে, ততই দ্রুত বাড়ি তাঁর নামে হবে ৷ আরেকটি স্বপ্ন তাঁর এই বাড়ি থেকে দূর হোক ভাড়াটে, বিশেষ করে নচ্ছার বাঁকে রস্তোগি ! নাছোড় ভাড়াটে বাঁকে হলেন আয়ুষ্মান খুরানা ৷ আর এই থুরথুরে বুড়ো মির্জা হলেন অমিতাভ বচ্চন ৷ এই দুই অভিনেতারা এখানে স্টার নয়, বরং চরিত্রকে গুলে খেয়ে লখনউয়ের সাধারণ পরিবারের দুটো মানুষ৷ যারা লড়ছেন জীবন বাঁচার লড়াই৷ বাড়ি নিয়ে লড়াই ৷ অস্তিত্বের লড়াই ৷ আপাত দৃষ্টিতে এক লোভি বুড়ো আর এক চালাক ভাড়াটের গল্প বলে গুলাবো সিতাবো ! তবে হ্যাঁ, এ সবই ওপর ওপর ৷ কারণ গল্পের মোচড়, ছবি যতো এগোতে থাকে...
সুজিত সরকারের ‘গুলাবো সিতাবো’ বলিউডের এমন প্রথম বিগস্টার ছবি যা অ্যামাজনের মতো ওটিটি প্ল্যাটফর্মে প্রিমিয়ার হলো ৷ করোনার প্রকোপের মাঝে, লকডাউনের কারণে, মূলত বাধ্য হয়েই ছবির টিমের সিদ্ধান্তে এই মুক্তি পাওয়া ৷ হ্যাঁ, বড় পর্দায় এই ছবি না দেখার অভিজ্ঞতা সত্যিই বড় মিস ৷ কারণ, সিনেম্যাটোগ্রাফার অভিক মুখোপাধ্যায়ের ক্যামেরায় লখনউ, সত্যিই ম্যাজিক্যাল ! তবে মোবাইল বন্দি হয়েও এই ছবি থেকে প্রাপ্তি প্রচুর ৷ ছবি শুরু হয়, মির্জার টাকা রোজগারের জন্য বাড়ির থেকে খুলে নেওয়া বাল্ব, সাইকেলের ঘণ্টা সস্তায় দোকানে বিক্রি করার দৃশ্য থেকে ৷ আর তারপরেই গল্প বহু সংলাপের মধ্যে দিয়ে এগোতে থাকে বাড়ির ভাড়াটে তাড়ানো, মির্জার বাড়ির মালিক হওয়ার শত চেষ্টার মধ্যে দিয়ে ৷ তবে এই চেষ্টা চলে দুই উপায়ে ৷ ভাঙা বাড়ির নিচে আসলে সুজিত সরকার দুটো গল্পকে একসঙ্গে এগিয়ে নিয়ে চলেন ৷ একদিকে বাঁকে রস্তোগি অর্থাৎ আয়ুষ্মানের অস্তিত্বের সংকট, আরেক দিকে বুড়ো মির্জার ‘লোভ’ ! এই দুটো গল্পকে আকার দেওয়ার জন্যই সুজিত গল্পে নিয়ে আসেন আর্কিওলজিস্ট ও আইনজীবীর চরিত্র ৷ প্রথমে মির্জা ও বাঁকের গল্পে সংঘাত লাগলেও ৷ পরে দুটো গল্প যেন এক লাইনেই এসে দাঁড়ায় ৷