জীবনানন্দ দাশের জীবন নিয়ে ছবি তৈরি করছেন পরিচালক সায়ন্তন মুখোপাধ্যায়। ছবির নাম ঝরা পালক। সেই ছবিতে কবির চরিত্রে অভিনয় করছেন নাট্যকার, নির্দেশক, অভিনেতা ব্রাত্য বসু। ছবিতে কবিপত্নীর ভূমিকায় রয়েছেন জয়া এহসান। কবির কম বয়সের চরিত্রে অভিনয় করছেন রাহুল। তাই নিয়ে নিউট ১৮ বাংলার একান্ত সাক্ষাৎকারে মুখোমুখি ব্রাত্য বসু।
কবি জীবন, অর্থাৎ জীবনানন্দ দাশের জীবন ও আপনার শৈল্পিক জীবনে মিল পেয়েছেন?
ব্রাত্য - জীবনানন্দ যে নির্জন জীবন যাপন করেছেন, তা আমার পক্ষে অগম্য। তা আমার কল্পনার বাইরে। আমার মনে হয় যে ওটা ভাবতে গেলে ভয় লাগে। উনি যে জীবন কাটিয়েছেন। পরে এই জীবন নিয়ে রেলিস করার জন্য ঠিক আছে। চোখে জল আনার জন্য ঠিক আছে। কবিরাও চোখে জল আনে। যেন, "কী কষ্টই না পেয়েছেন, আহারে!" কিন্তু ওটা যে কাটাতে হয়, সেটা একটা ভয়ঙ্কর ব্যপার। আমি ওটা কল্পনাও করতে পারি না।
নির্জনতার যে জীবন কাটাতে হয়, আপনার শৈল্পিক জীবনে তেমনটা কখনও ঘটেছে? ওই নির্জনতার মুখোমুখি দাঁড়িয়েছেন?
ব্রাত্য - আমি সেটা পাবলিকলি বলব কেন!
না মানে, আপনার ব্যক্তিগত জীবনের কথা বলছি না, শিল্পী জীবনের কথা বলছি!
ব্রাত্য - হ্যাঁ, হ্যাঁ, আমিও সেটাই বলছি। এটা বোঝে কে! কেন বুঝবে! সবাই যেমন বেলাশুরু, বেলাশেষে করছে করুক না। সেগুলো নিয়ে থাকুক। তার মধ্যে আমি অবেলার কথা বলে আমি কী করব, কালবেলার কথা বলেই বা কী করব।
আপনার মনে হয়, জীবনানন্দকে বুঝতে পারার বোধ বাঙালির মধ্যে কখনও এসেছে?
ব্রাত্য - এই বঙ্গসমাজই জীবনানন্দ তৈরি করতে পারে। ভারতবর্ষের আর কোনও সমাজ জীবনানন্দকে তৈরি করতে পারবে না। একমাত্র বঙ্গসমাজ তৈরি করতে পারবে। আর কোনও জাতির মধ্যে জীবনানন্দ হবে না। কেবল মাত্র বাঙালি সমাজ পেরেছে তৈরি করতে। যাঁরা শৈল্পিক সংখ্যালঘুত্ব নিয়ে বেঁচেছেন।
কী ভাবে পড়লেন জীবননান্দ দাশকে, কী ভাবে চিনলেন তাঁর ব্যক্তিগত জীবন?
ব্রাত্য - আমাকে শাহাদুজ্জামানের লেখা একজন কমলালেবু বইটি বিশেষ সাহায্য করেছে এই চরিত্রায়নের ক্ষেত্রে। আসলে ওঁর পরিবারের মধ্যে সম্পর্ক কেমন ছিল, স্ত্রী লাবন্যপ্রভাব সঙ্গে সম্পর্ক কেমন ছিল, সেটা বুঝতে সাহায্য করেছে এই পাঠ। জীবনানন্দের মৃত্যুর বিষয়টি নিয়েও আমার কাছে একটা নতুন দিক উন্মোচন করেছে এই বই। সেদিক থেকে এই বইটি গুরুত্বপূর্ণ।
মৃত্যু! মানে ট্রামের ঘটনাটি।
ব্রাত্য - হ্যাঁ। মানে আমি বুঝলাম জীবননান্দের মৃত্যু কোনও দুর্ঘটনা নয়, ওটা আসলে আত্মহত্যা। এই সমাজ, ব্যবস্থা, তাঁকে মৃত্যুর দিকে নিক্ষেপ করেছিল। এই ছবি করতে গিয়ে, জীবননান্দের স্ত্রী লাবন্যপ্রভাবে চিনতে গিয়ে, জীবননান্দের জীবনকে বুঝতে গিয়ে আমি বুঝতে পারলাম এই সত্যির কথা। ওঁর স্ত্রীকে কিন্তু ওরকম করে দেখার কিছু নেই। জীবননান্দকে তিনি আগলে রেখেছিলেন আজীবন। তাঁকে বাহবা দিতেই হয়।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Bratya Basu