মুম্বই : শ্যারন স্টোন, মাধুরী দীক্ষিত থেকে শুরু করে হালআমলের নার্গিস ফকরি ৷ সিনেমায় ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে অস্বস্তি নিয়ে বিভিন্ন সময়ে মুখ খুলেছেন অনেক নায়িকাই ৷ সমস্যা এড়াতে হলিউডে বেশ কিছু বছর ধরে কর্মরত ‘ইন্টিমেসি কোঅর্ডিনেটর’ (Intimacy Coordinator) বা ঘনিষ্ঠতা তত্ত্বাবধায়করা ৷ তাঁদের কাজ, অন্তরঙ্গ দৃশ্য বা শয্যামুহূর্ত যাতে ঠিকমতো ক্যামেরাবন্দি হয় ৷ এই দৃশ্যগুলি যাতে পরবর্তীতে নায়িকার উষ্মার কারণ না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখেন ইউনিটে এই কর্মীরা ৷
কিন্তু ভারতের ছবির ইউনিটে এই ধরনের কাজ এখনও অনেকটাই অচেনা ৷ এই ধরনে কাজ নিয়ে জানতেন না আস্থা খন্নাও (Aastha Khanna) ৷ একাধিক হিন্দি ছবিতে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করার পর আস্থা গুগল থেকে জানতে পারেন হলিউডে দাপটের সঙ্গে কাজ করছেন ‘ইন্টিমেসি কোঅর্ডিনেটর’-রা ৷ এর পর তিনি এই সংক্রান্ত একটি কোর্সও করেন ৷ এখন তিনি নিজে বলিউডের ‘ঘনিষ্ঠতা তত্ত্বাবধায়ক’ ৷ কাজ করার পাশাপাশি শেখাচ্ছেন বাকিদেরও ৷ ইন্ডাস্ট্রিতে ‘মি টু’ আন্দোলনের পর তাঁদের কাজের চাহিদা বেড়েছে কয়েক গুণ ৷ আস্থা জানিয়েছেন, ‘ইন্টিমেসি কোঅর্ডিনেটর’ হতে গেলে মনস্তত্ত্ব, আইন ও ছবি করানোর বিভিন্ন বিষয়ের উপর ভাল দখল থাকতে হবে ৷ তাঁদের কাজের অন্যতম অংশ হল প্রযোজনা সংস্থাকে ঘনিষ্ঠ দৃশ্য সংক্রান্ত আইনি জটিলতার হাত থেকে রক্ষা করা ৷ পাশাপাশি, সুসম্পর্ক বজায় রাখতে হয় অভিনেতা অভিনেত্রীদের সঙ্গেও ৷ যাতে তাঁরা সমস্যার কথা মন খুলে বলতে পারেন ৷ ছবিতে রূপান্তরকামী শিল্পীরা থাকলে ইন্টিমেট কোঅর্ডিনেট-দের ভূমিকা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ ৷ মনে করেন আস্থা ৷
শ্যুটিংয়ের সময় আস্থার কাছে মজুত থাকে বিশেষ টুলবক্স ৷ যেখানে গুছিয়ে রাখা থাকে বিশেষ কুশন, পাইলেটস বল-এর মতো বেশ কিছু উপকরণ ৷ ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে শ্যুটিয়ের সময় প্রয়োজনমতো এগুলি ব্যবহার করা হয় ৷ অভিজ্ঞতা থেকে এখন নিজেই জিনিস বানিয়ে নেন আস্থা ৷ সিকোয়েন্স বুঝে শ্যুটিংয়ের মুহূর্তেও তৈরি করে নিতে হয় অনেক পরিবর্তন ৷ এ ছাড়াও আস্থা তাঁর সঙ্গে সবসময় রাখেন ডিয়োডোরান্ট, ব্রেথ ফ্রেশনার, সিলিকন অন্তর্বাস, স্ট্র্যাপলেস অন্তর্বাসের মতো অতিপ্রয়োজনীয় জিনিস ৷ থাকে ত্বকের রঙের টেপও ৷ যাতে দরকারে হাতের কাছে সবকিছুই পাওয়া যায় ৷
তবে ঘনিষ্ঠ দৃশ্য মানেই কিন্তু সবসময় শয্যাদৃশ্য বা যৌনদৃশ্য নয় ৷ সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার দৃশ্যও পড়ে আস্থাদের কাজের আওতায় ৷ এছাড়াও আইটেম ডান্সের সময় পোশাক নিয়ে নায়িকাদের আপত্তি থাকলে ডাক পড়ে ইন্টিমেসি কোঅর্ডিনেটরদের ৷ অন্যান্য যে কোনও দৃশ্যে কুশীলবরা কাছাকাছি এলেই সতর্ক থাকতে হয় আস্থার মতো ইউনিট সদস্যকে ৷ বিশেষ করে শিশুশিল্পী অভিনয় করলে তার বিশেষ খেয়াল রাখতে হয় ৷
যত দিন যাচ্ছে ভারতেও ইন্টিমেসি কোঅর্ডিনেটরদের চাহিদা ও প্রয়োজনীয়তা বাড়ছে৷ এই মুহূর্তে দেশে শংসাপত্রপ্রাপ্ত ‘ঘনিষ্ঠতা তত্ত্বাবধায়ক’ একমাত্র আস্থা ৷ কাজের পাশাপাশি তিনি ব্যস্ত প্রশিক্ষণেও ৷ তরুণী চান, অভিনেতা ও কুশীলব, দু’ পক্ষের কাজের সুবিধের জন্যই ইন্টিমেট কোঅর্ডিনেটরদের পরিচিত আরও বিস্তৃত হওয়া প্রয়োজন ৷
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।