Election Results 2022: গুজরাতেও খাতা খুলল আপ, বিরোধী মুখ কেজরীওয়াল? তৃণমূলই বিকল্প, দাবি কুণালের
- Published by:Debamoy Ghosh
- Reported by:ABIR GHOSHAL
Last Updated:
সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে নিজেদের প্রভাব বিস্তার করতে গিয়েও বার বার ব্য়র্থ হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। গোয়ার মতো রাজ্য়ে ভোটে লড়েও সাফল্য় পায়নি পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল।
#কলকাতা: ২০২৪-এ বিজেপি-র মোকাবিলায় বিরোধীদের ঐক্য়বদ্ধ হওয়া নিয়ে আলোচনা দীর্ঘ দিন ধরেই চলছে। মূলত পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য়মন্ত্রী এবং তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ই এ নিয়ে উদ্য়োগী হয়েছিলেন। কিন্তু কিছুতেই দানা বাঁধেনি বিরোধী ঐক্য়। এই অবস্থায় বিরোধীরা কতটা একজোট হতে পারবে, তা নিয়েই চর্চা শুরু হয়। কারণ বিরোধী জোটের নেতৃত্ব কে দেবে, সেই প্রশ্নেরই উত্তর পাওয়া যায়নি।
এই পরিস্থিতিতে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে আম আদমি পার্টি ক্রমশ যেভাবে নিজেদের পায়ের তলার মাটি শক্ত করছে এবং প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে, তাতে অরবিন্দ কেজরীওয়ালের দলই কংগ্রেসের বিকল্প হয়ে উঠছে কি না, সে বিষয়ে চর্চা ক্রমশ জোরালো হচ্ছে। হিমাচলে কংগ্রেস জয়ের মুখে দাঁড়িয়ে থাকলেও সেখানে পাঁচ বছর অন্তর সরকার বদলে যাওয়াটাই রীতি। কিন্তু সবারই নজর ছিল মোদি-শাহের রাজ্য় গুজরাত। কারণ প্রধানমন্ত্রীর নিজের রাজ্য়ে বিজেপি-কে ধাক্কা দিতে পারলে তা ২০২৪-এর আগে বিরোধীদের আত্মবিশ্বাস অনেকটাই বাড়ত।
advertisement
advertisement
কিন্তু ফল বেরনোর পর দেখা যাচ্ছে, ২০২৪-এর আগে বরং নিজেদের রাজ্য়ে ঐতিহাসিক জয় পেয়ে বরং অমিত শাহ- নরেন্দ্র মোদিরা নিজেদের আত্মবিশ্বাসই অনেকটা বাড়িয়ে নিলেন। কংগ্রেসের ঝুলিতে ঢুকল আরও একটা শোচনীয় পরাজয়। বরং প্রাপ্তির ঝুলি বাড়ল আম আদমি পার্টির। কারণ দিল্লি, পঞ্জাবে সরকার গড়ার পর এবার গুজরাত বিধানসভাতেও পা রাখল আপ। অন্তত পাঁচটি আসনে আম আদমি পার্টির জয় নিশ্চিত।
advertisement
এর আগে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে নিজেদের প্রভাব বিস্তার করতে গিয়েও বার বার ব্য়র্থ হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। গোয়ার মতো রাজ্য়ে ভোটে লড়েও সাফল্য় পায়নি পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল। এমন কি, প্রতিবেশী ত্রিপুরাতেও বার বার নির্বাচনী লড়াইয়ে নেমেও ব্য়র্থ হয়েছে তৃণমূল। সেখানে ২০২৩-এর বিধানসভা নির্বাচন তৃণমূলের কাছে বড় পরীক্ষা। যে কারণে বারবারই সর্বভারতীয় তকমা নিয়ে তৃণমূলকে কটাক্ষ করেছে বিরোধীরা।
advertisement
এ
মনিতে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের সঙ্গে অরবিন্দ কেজরীওয়ালের সম্পর্ক যথেষ্ট ভাল। কিন্তু দিল্লিতে গিয়ে তৃণমূলনেত্রী বিরোধীদের নিয়ে বৈঠক ডাকলেও সেখানে আপ-এর পক্ষ থেকে সেভাবে সাড়া মেলেনি। কারণ কংগ্রেসকে নিয়ে আপত্তি রয়েছে কেজরীওয়ালের দলের।
এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে আপ স্বতন্ত্র ভাবে এবং একক শক্তি হিসেবে যেভাবে বিজেপি-র মোকাবিলায় সর্বভারতীয় স্তরে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে, সেই সাফল্য়কে তৃণমূল সহ অন্য়ান্য বিরোধী দলগুলি স্বীকৃতি দেয় কি না, তা সময়ই বলবে।
advertisement
তৃণমূল অবশ্য় এখনও পর্যন্ত আপ-এর এই শক্তি বৃদ্ধি নিয়ে ধীরে চলো নীতি গ্রহণ করেছে। এ দিনও গুজরাত এবং হিমাচলের ভোটের ফল নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বিজেপি এবং কংগ্রেসকে নিয়েই ব্য়স্ত থেকেছেন। আপ-কে নিয়ে শব্দ ব্য়য় করেননি তৃণমূলের রাজ্য় সাধারণ সম্পাদক। বরং গুজরাতে বিজেপি-র বিপুল সাফল্য় এবং কংগ্রেসের ব্য়র্থতার মধ্য়েও তৃণমূলের প্রাসঙ্গিকতা খুঁজে পেয়েছেন কুণাল।
advertisement
তৃণমূল মুখপাত্রের কথায়, 'কংগ্রেসের আত্মসমালোচনা প্রয়োজন। কেন হিমাচলে পড়ল, গুজরাতে পারল না। গুজরাতে তো লড়াই ছিল বিজেপি বনাম কংগ্রেস। গুজরাতে তো ফাঁকা মাঠ সামনে ছিল, নরেন্দ্র মোদির রাজ্য়ে কীভাবে জয়রথ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। সেটা কংগ্রেসের সামনে দেখানোর সুযোগ ছিল। কিন্তু সেটাই যখন পারল না। কিছু বললেই গায়ে লেগে যায়। ভারত জোড়ো যাত্রা করেও কংগ্রেস গুজরাত জুড়তে পারল না। যারা গুজরাতে ব্যর্থ হল। তারা একক ভাবে দিল্লি সামলাতে পারবে না। অবিজেপি বিকল্পের ক্ষেত্রে তৃণমূলের প্রাসঙ্গিকতা, প্রয়োজনীয়া ও গুরুত্ব আজও প্রমাণিত হল। নরেন্দ্র মোদির বিকল্প মুখ মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় এবং তাঁর উন্নয়নের মডেল।' কুণাল অবশ্য় এ দিনও দাবি করেছেন, বিরোধী জোটের মুখ নিয়ে তৃণমূল ভাবিত নয়।
advertisement
বুধবারই দিল্লি পুরসভার নির্বাচনে বড় জয় পায় আম আদমি পার্টি। ১৫ বছর পর বিজেপি-র হাত থেকে দিল্লি পুরনিগম ছিনিয়ে নেয় আপ। দিল্লি পুরসভার ভোটের ফল নিয়ে গতকাল বিকেলেই দিল্লিতে মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়কে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। যদিও কোনও প্রতিক্রিয়াই দেননি তিনি।
ঘটনাচক্রে এ রাজ্য়েও নিজেদের সংগঠন বিস্তারের কাজ শুরু করেছে আপ। ভবিষ্য়তে পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে তাদের পরিকল্পনা কী, তা নিয়ে এখনও সেভাবে কিছু বলতে শোনা যায়নি অরবিন্দ কেজরীওয়ালকে। পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনেরও অনেক দেরি রয়েছে। ফলে বাংলায় আপ-তৃণমূল সংঘাতের আশু সম্ভাবনা না থাকলেও সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে আপ-এর ক্রমবর্ধমান প্রাসঙ্গিকতা তৃণমূল সহ বিরোধীরা কীভাবে নেয়, সেটাই এখন রাজনৈতিক মহলের কাছে অন্য়তম কৌতূহলের বিষয়।
view commentsLocation :
First Published :
December 08, 2022 3:24 PM IST