Success Story: মা দিনমজুর, পিতৃহীন শৈশবে জঙ্গিদলে যোগ দেওয়ার চিন্তা...সেদিনের 12th Fail আজ ব্যস্ত IAS অফিসার
- Published by:Arpita Roy Chowdhury
- news18 bangla
- Written by:Bangla Digital Desk
Last Updated:
Success Story: সামান্য উপার্জনে সংসার চালানো ছিল অত্যন্ত কঠিন৷ ওই পরিস্থিতিতে পড়াশোনা চালিয়ে নিয়ে যাওয়াই ছিল কঠিন
দেশ জুড়ে দর্শকদের মনে 12 th Fail ছবি ঘিরে মুগ্ধতার রেশ যেন কাটতেই চাইছে না৷ তার মাঝেই উঠে আসছে ব্যর্থতার রেশ ঝেড়ে ফেলে ফিনিক্স পাখি হয়ে ওঠার নিত্যনতুন কাহিনি৷ এ বার সেই তালিকায় যোগ হল অসমের দ্বাদশ অনুত্তীর্ণ এক আইএএস আধিকারিকের জীবনসংগ্রাম৷ তিনি, আইএএস নারায়ণ কোনওয়ার৷ বর্তমানে অসমের সচিবালয়ে কর্মরত সচিব হিসেবে৷
অসমের মোরিগাঁও জেলার প্রত্যন্ত এক গ্রামে জন্ম নারায়ণের৷ শৈশবে এতটাই অভাব ও সংগ্রামে বেড়ে উঠেছেন, যেখানে দু’বেলা দু’মুঠো খাবার যোগাড়ই ছিল বিলাসিতা৷ তাঁর বাবা ছিলেন প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক৷ সামান্য উপার্জনে সংসার চালানো ছিল অত্যন্ত কঠিন৷ ওই পরিস্থিতিতে পড়াশোনা চালিয়ে নিয়ে যাওয়াই ছিল কঠিন৷ তার উপর অল্প বয়সেই বাবা মারা যাওয়াতে আরও শোচনীয় হয়ে ওঠে পরিস্থিতি৷
advertisement
নারায়ণের বাবা মারা যাওয়ার পর তাঁর মা দিনমজুর হিসেবে কাজ শুরু করেন৷ বাজারে গিয়ে আনাজপাতিও বিক্রি করতেন৷ সংসারের হাল ধরতে নারায়ণ চেষ্টা করলেন তাঁর মায়ের পাশে দাঁড়াতে৷ প্রতিকূলতার মধ্যেই চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন পড়াশোনাও৷ তবু শেষরক্ষা হল না৷ দ্বাদশ শ্রেণীর চূড়ান্ত পরীক্ষায় ব্যর্থ হলেন৷ পাশ করতে পারলেন না৷ দারিদ্র বাধা হয়ে দাঁড়াল৷
advertisement
advertisement
আরও পড়ুন : আজ মকর সংক্রান্তিতে এই কাজগুলি করলেই রসাতলে যাবে ভাগ্য! এখনই জানুন, সতর্ক হোন
শৈশবের কথা মনে করে নারায়ণ বলেন, ‘‘আমাদের আর্থিক অবস্থা ছিল শোচনীয়৷ খিদে মেটানোর সামর্থ্যটুকু ছিল না৷ বাবার মৃত্যুর পর আমাদের পরিবারের পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়৷ আমাকে বড় করার জন্য মাকে কঠিন সংগ্রাম করতে হয়৷ আমি যখন কলেজে ভর্তি হই, তখন মা ফুটপাতে সবজি বিক্রি করতেন৷’’
advertisement
নারায়ণ নিজেও যথাসাধ্য মায়ের পাশে দাঁড়িয়েছেন৷ অভাবের সামনে হার না মেনে ঠিক করলেন লেখাপড়া ও উপার্জন চালিয়ে যাবেন একইসঙ্গে, সমানতালে৷ রাস্তায় ঘুরে ঘুরে পাঁপড়, ঘটিগরম বিক্রি করতেন৷ পাশাপাশি চলত পড়াশোনাও৷ অবশেষে দ্বিতীয় বারের প্রচেষ্টায় পাশ করলেন ক্লাস টুয়েলভের পরীক্ষায়৷
তার মাঝেই দেখেছেন গ্রামে জঙ্গিদের আসা যাওয়া৷ জানিয়েছেন, আলফা গোষ্ঠীর জঙ্গিরা ঘোরাফেরা করত তাঁদের গ্রামে৷ অনেক সময়েই মনে হত, অভাবের তাড়নায় লেখাপড়া ছেড়ে দিয়ে জঙ্গিদের দলে নাম লেখাবেন৷ কিন্তু শেষ পর্যন্ত পারেননি৷ সাফল্যের শীর্ষে বসে বলছেন, ‘‘আমার যেখানে বড় হওয়া, সেটা আলফা জঙ্গিদের অন্যতম ঘাঁটি৷ প্রতিদিন আমরা দেখতাম জঙ্গিরা সশস্ত্র হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে৷ আমিও ভেবেছিলাম তাদের দলে যোগ দিই৷ আসলে আমার এক সহপাঠী সত্যি যোগ দিয়েছিল৷’’
advertisement
আরও পড়ুন : দুই হাতে দু’টো বন্দুক, আর এক হাতে একটা টর্চ নিয়ে রেকর্ড ভাঙা চুম্বনে হৃদয়হরণ দীপক চ্যাটার্জির, থুড়ি আবীরের!
কিন্তু ভাগ্য তাঁর জন্য অন্য চিত্রনাট্য ভেবে রেখেছিল৷ পরবর্তীতে স্থানীয় কলেজ থেকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে তিনি স্নাতক হন৷ পরে গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম শ্রেণীতে স্নাতকোত্তর সম্পূর্ণ করেন৷ পোস্ট গ্র্যাজুয়েশনের পর এডিপি কলেজে যোগ দেন লেকচারার হিসেবে৷ সে সময় থেকেই সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি শুরু করেন৷ একাধিক প্রচেষ্টার পর অবশেষে সাফল্য পান ২০১০ সালে৷ ইউপিএসসি পরীক্ষায় সারা দেশের মেধাতালিকায় তাঁর স্থান ছিল ১১৯ নম্বরে৷
advertisement
মনোজ শর্মার মতো নারায়ণ কোনওয়ার-ও প্রচেষ্টা ও প্রয়াসের আর এক নাম৷ যাঁরা দেখিয়ে দিয়েছেন ইচ্ছেশক্তির কাছে ভেঙে যায় প্রতিকূলতার কঠিন থেকে কঠিনতম বেড়াজাল৷
Location :
Kolkata,West Bengal
First Published :
January 15, 2024 3:59 PM IST