Exclusive | Education | 4 year honours Course: শিক্ষা দফতরের বিরাট সিদ্ধান্ত! এই শিক্ষাবর্ষ থেকেই শুরু ৪ বছরের স্নাতক কোর্স, ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়েও বড় ঘোষণা
- Published by:Satabdi Adhikary
- news18 bangla
- Written by:SOMRAJ BANDOPADHYAY
Last Updated:
নয়া জাতীয় শিক্ষানীতি অনুযায়ী, দেশের বাকি রাজ্যে স্নাতক স্তরের পড়াশোনা ৩ বছর থেকে বাড়িয়ে চার বছর করা হয়েছে। বদল আনা হয়েছে আরও নানা ক্ষেত্রেও। এতদিন এই শিক্ষানীতিকে তুঘলকি বলে সমালোচনা করতে দেখা গিয়েছিল রাজ্য সরকারকে। কিন্তু, তারপরে ক্রমে কেন্দ্রের শিক্ষানীতির বহু অংশই মেনে নেয় রাজ্য।
কলকাতা: অবশেষে সমস্ত জল্পনার অবসান৷ চলতি শিক্ষা বর্ষ থেকেই চার বছরের স্নাতক প্রক্রিয়া শুরু করার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্যের। সেই মতোই হবে ভর্তি প্রক্রিয়া৷ ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকেই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে চলেছে উচ্চ শিক্ষা দফতর।
এর পাশাপাশি, কেন্দ্রীয়ভাবে অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়া থেকেও পিছিয়ে এল রাজ্য। এবছরে কেন্দ্রীয়ভাবে অনলাইনে ভর্তির প্রক্রিয়া নয়৷ গত বছরের মতোই ভর্তি প্রক্রিয়া শিক্ষা হবে প্রতিষ্ঠান ভিত্তিক। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি অনলাইনেই ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে। এমনই নির্দেশিকা জারি হচ্ছে উচ্চশিক্ষা দফতরের তরফে। আগে অবশ্য কেন্দ্রীয়ভাবে অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়ার কথা জানিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
advertisement
এদিন উচ্চশিক্ষা দফতরের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, কমিটির সুপারিশ মেনেই স্নাতক স্তরে চার বছরের পাঠক্রম চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ ৪ বছরের ডিগ্রি কোর্স চালু না করলে আমাদের ৭ লক্ষ ছাত্রছাত্রীরা সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতায় অংশই নিতে পারতো না। এক্ষেত্রে তাদের বাইরের রাজ্যে গিয়ে পড়ার প্রবণতা বড়ে যেতো। যারা আর্থিক ভাবে অস্বচ্ছল, তারা বিপদে পড়তো। এই সমস্ত কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
advertisement
advertisement
রাজ্যের উচ্চশিক্ষায় কী পাঠক্রম হবে? কেন্দ্রীয় শিক্ষানীতি মেনে স্নাতকের চার বছরের পাঠক্রম হবে নাকি তিন বছরের? গোটা বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসার আগে রাজ্য তৈরি করেছিল ৬ সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটি। বিশেষজ্ঞ কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাসকে। বিশেষজ্ঞ কমিটিতে বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দেবনারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ওমপ্রকাশ মিশ্র, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নির্মাল্যনারায়ণ চক্রবর্তী ছিলেন৷ উচ্চ শিক্ষা সংসদের ভাইস চেয়ারম্যান কৌশিকী দাশগুপ্ত ও উচ্চশিক্ষা সংসদের যুগ্ম সচিব মৌমিতা ভট্টাচার্য এই কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে কাজ করছিলেন। উচ্চশিক্ষা দফতরের তরফে এই কমিটিকে চার সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছিল।
advertisement
রাজ্য উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বিশেষত রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে কীভাবে নতুন পাঠক্রম ও রূপরেখা তৈরি করা যায়, তারই দায়িত্ব দেওয়া হয় এই ছয় সদস্যের কমিটিকে। এর পাশাপাশি চার বছর ধরে স্নাতকের পাঠক্রম চালু করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলির পরিকাঠামো সমানভাবে রয়েছে নাকি তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছিল। প্রসঙ্গত, রাজ্যে একাধিক নয়া বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। সেই বিশ্ববিদ্যালয় গুলিতে কীভাবে ৪ বছরে স্নাতকের পাঠক্রম চালু করা যেতে পারে, তা নিয়েও আলোচনা চাইছিলেন উচ্চশিক্ষা দফতরের আধিকারিকরা।
advertisement
যদিও সম্প্রতি মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে একটি বৈঠকে উপস্থিত থেকে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য জানিয়েছিলেন, জাতীয় শিক্ষানীতির বিভিন্ন সুপারিশ উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে কার্যকর করা না গেলে আগামিদিনে রাজ্যে ছাত্রছাত্রীরা সমস্যায় পড়তে পারে। যদিও গত ১৭ মার্চ উচ্চ শিক্ষা দফতরের তরফে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্টারকে চিঠি পাঠিয়ে ইউজিসি-র দেওয়া চিঠি যুক্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
advertisement
নয়া জাতীয় শিক্ষানীতি অনুযায়ী, দেশের বাকি রাজ্যে স্নাতক স্তরের পড়াশোনা ৩ বছর থেকে বাড়িয়ে চার বছর করা হয়েছে। বদল আনা হয়েছে আরও নানা ক্ষেত্রেও। এতদিন এই শিক্ষানীতিকে তুঘলকি বলে সমালোচনা করতে দেখা গিয়েছিল রাজ্য সরকারকে। এই বিবৃতি প্রকাশের পরে অবশ্য জানানো হয়েছে, কেন্দ্রীয় শিক্ষআনীতিকে সম্পূর্ণভাবে মেনে নেয়নি রাজ্য৷ বদলে, রাজ্য সরকার একটি সম্পূর্ণ পৃথক স্টেট এডুকেশন পলিসি তৈরি করেছে, যেখানে সমস্ত ‘বেস্ট প্র্যাকটিসেস’ বা ভাল ব্যবস্থাগুলিকে নেওয়া হয়েছে।
advertisement
ইতিমধ্যেই UGC-র নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে। ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকেই নয়া নিয়ম কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল রাজ্যের তরফে। শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা যায়, জাতীয় শিক্ষানীতির একাধিক নিয়ম মানতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে। মূলত, নতুন জাতীয় শিক্ষানীতির ক্রেডিট বেসড সিস্টেম প্রয়োগের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে নির্দেশ দেয় রাজ্য শিক্ষা দফতর।
২০২০ সালে সংসদে কোনও আলোচনা ছাড়াই নয়া শিক্ষানীতি পাশ করে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। যার অন্যতম বিষয় ছিল স্নাতক স্তরের পাঠ্যক্রম তিন বছরের বদলে চার বছর করে ফেলার। গত বছর ডিসেম্বর মাসেই এই স্তরের পাঠক্রম চূড়ান্ত করেছিল ইউজিসি। তারপরেই সব রাজ্যকে তা বাস্তবায়নের জন্য অনুরোধ পাঠায়। শিক্ষা দফতরের নির্দেশের সঙ্গে ইউজিসির সেই মূল সুপারিশপত্রটিও দেওয়া হয় রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে।
আগামী জুলাই মাস থেকে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হচ্ছে। সূত্রের খবর, এই শিক্ষাবর্ষ থেকেই চার বছর স্নাতকের নতুন পাঠ্যক্রম শুরু করতে চাইছে রাজ্য। ইউজিসি অবশ্য অনেক আগেই এই বিষয়ে চিঠি পাঠিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে। এবার রাজ্যের তরফেও সেই বার্তা গেল। সূত্রের খবর, উচ্চ শিক্ষা দফতরের পক্ষ থেকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নতুন পাঠ্যক্রম তৈরি করার জন্য। প্রসঙ্গত, স্নাতক স্তরের পড়াশোনা ৩ বছর থেকে বেড়ে ৪ বছর হওয়ার পাশাপাশি, স্নাতকোত্তর স্তরের পড়াশোনা ২ বছর থেকে কমে ১ বছর করা হয়েছে নতুন শিক্ষানীতিতে। আন্ডারগ্র্যাজুয়েট স্তরে পড়াশোনায় ভোকেশনাল ট্রেনিং, স্কিল ডেভেলপমেন্ট, ইন্টার্নশিপ ইত্যাদিও যুক্ত করা হচ্ছে।
Location :
West Bengal
First Published :
May 31, 2023 12:00 PM IST