Madhyamik Examination: চোখের জ্যোতি নেই, কিন্তু স্বপ্ন অনেক, হাত না থেকেও মাধ্যমিকে সফল জগন্নাথ পড়তে চান বাংলা নিয়ে
- Published by:Debalina Datta
- hyperlocal
- Reported by:Souvik Roy
Last Updated:
Birbhum News: জন্ম থেকে নেই দুটি হাত। তাই মা, বাবা নাম দিয়েছিল জগন্নাথ। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ক্ষীণ হয়েছে দৃষ্টিও। শত বাধা কাটিয়ে এবছর মাধ্যমিকে স্কুলের মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর পেল বীরভূমের জগন্নাথ।
বীরভূম: ইচ্ছাশক্তি থাকলেই সব অসম্ভবকে সম্ভব করা যায়। তার জলজ্যান্ত প্রমাণ বীরভূমের এই ছেলেটি। প্রতিবন্ধকতা একটি শব্দ মাত্র।জন্ম থেকেই নেই দুটি হাত।তাই তার মা বাবা ভালোবেসে নাম রেখেছিল জগন্নাথ। ‘মড়ার ওপর খাড়ার ঘা’ কথাটাকে সত্যি করে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার দৃষ্টি শক্তিও ক্ষীণ হতে থাকে। স্বাভাবিকভাবেই সকালের খাবার খাওয়া থেকে শুরু করে নৈশ আহার পর্যন্ত সবকিছুতে নির্ভরশীল থাকতে হয় তার মায়ের ওপর। সে এবছর সব প্রতিকূলতাকে না দেখার ভান করে দিয়েছিল মাধ্যমিক পরীক্ষা।
তার ফল প্রকাশ হতেই খুশির হাওয়া তার পরিবার ও প্রতিবেশীদের মধ্যে।পরীক্ষায় এত প্রতিকূলতাকে জয় করে ৩৪৩ পেয়েছে বিশেষ ভাবে সক্ষম জগন্নাথ। শুধু তাই নয় সুরেন ব্যানার্জি স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয় এর এই ছাত্র সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে ছিনিয়ে নিয়েছে স্কুলের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকারীর তকমা।তাতে স্বভাবতই খুশি স্কুল কর্তৃপক্ষ। সারাদিনই জগন্নাথ নিজের পড়াশোনা নিয়েই থাকত বলে জানান স্কুলের শিক্ষকেরা।
advertisement
advertisement
জগন্নাথের মা ঝর্ণা দলুই বলেন ” স্কুলের পরিবেশ কেমন হয় তা জানেন না তিনি বা তার স্বামী। কারণ কোনও দিন স্কুলমুখো হননি তারা।তাই সহ্য করেছেন অনেক লাঞ্ছনা।ইচ্ছা ছিল সন্তানদের শিক্ষিত করে তোলার।এর আগে পরিবার থেকে মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হয়েছিল মেয়েও।কিন্তু অভাব অনটনের জেরে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও তাদের মেয়েকে তারা উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করতে পারেননি।ছেলে জগন্নাথই এখন শেষ সম্বল।তাকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করতে চাইলেও শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কারণে আদৌ তাকে পড়ানো যাবে কী না তা নিয়ে চিন্তিত ছিলাম আমরা।তবে তাঁর বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উৎসাহে ভর করেই ছেলের পড়াশোনা চালিয়েছি । এতদিনে তার ফলও মিলল ।”
advertisement
শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে জগন্নাথ বলে, “আমি কোনও দিনও ভাবিনি যে আমি মাধ্যমিক পাস করব।কিন্তু আমার স্যার ম্যাডামরা না থাকলে আমার পক্ষে পরীক্ষায় পাস করা সম্ভব ছিল না।বই থেকে পড়া শোনানো থেকে শুরু করে আমার পরীক্ষার জন্য অনুলেখক জোগাড় করে দেওয়া পর্যন্ত সব কিছু তারাই আমার জন্য করেছেন।অন্যদিকে আমার বাড়িতে আমাকে সবরকম সাহায্য করেছে আমার মা।এরা না থাকলে আমার স্বপ্ন পূরণ হত না।”
advertisement
জগন্নাথের বাবা পেশায় রাজমিস্ত্রী। মা পরিচারিকার কাজ করেন৷ তাই আগামী দিনে যদি সরকারি বা বেসরকারি কোনও সহযোগিতা মেলে তবে বাংলা বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করার ইচ্ছা রয়েছে জগন্নাথের। তার এই অদম্য ইচ্ছা শক্তিকে কুর্নিশ জানাচ্ছে এলাকার বাসিন্দারা।
Souvik Roy
view commentsLocation :
Kolkata,West Bengal
First Published :
May 06, 2024 2:45 PM IST
