অসুস্থ স্ত্রী, পঙ্গু ছেলেকে নিয়ে আত্মহত্যা বৃদ্ধের !
- Published by:Siddhartha Sarkar
- news18 bangla
Last Updated:
পুলিশ এসে মঙ্গলবার তিনটি দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।
#কলকাতা: শহরে আবার সপরিবারে আত্মহত্যার ঘটনা! পঙ্গু ছেলেকে নিয়ে আত্মঘাতী বৃদ্ধ-বৃদ্ধা। অভিমানে আত্মঘাতী? দায়িত্বভার সামলানোর ভয় ? জীবন সায়াহ্নে পৌঁছে বৃদ্ধ সিদ্ধান্ত নেয় ,সবাইকে মুক্তি দেওয়ার এবং মুক্তি নেওয়ার। পুলিশ এসে মঙ্গলবার তিনটি দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।
মানসিক যন্ত্রণার বহিঃপ্রকাশ পাওয়া গিয়েছে আত্মহত্যার ধরন এবং সুইসাইড নোট দেখে। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ কলকাতার শহরতলীর ঠাকুরপুকুর থানা এলাকার,সত্যনারায়ণ পল্লীতে। গোবিন্দ কর্মকার (৮০) আদি বাসিন্দা ওই এলাকার। আগে মেটাল বক্সে চাকরি করতেন। অবসরের পর বাড়িতে টুকটাক ঘড়ি সারানো কিংবা কখনও কোনও লেদ মেশিনে কাজ করতেন। বয়সের ভারে ইদানিংকালে তেমন কিছু করতে পারতেন না। স্ত্রী রানু কর্মকার(৭০), হাতের কাজ করে কিছু উপার্জন করতেন তাতেই কোনওপ্রকারে সংসার চলত।
advertisement
বাড়িতে ৪৭ বছরের ছেলে দেবাশীস। জন্মের পর থেকেই পঙ্গু। কোমরের নিচের অংশ তাঁর প্যারালাইসিস হয়ে যায়। তার সমস্ত কিছুই অন্য কাউকে করিয়ে দিতে হয়। আর সেটা করতেন মা রানু নিজেই। মাসখানেক আগে রানুর সেরিব্রাল স্ট্রোক হয়। আর্থিক অনটনের কারণে গোবিন্দবাবু রানু দেবীর বাপের বাড়ি হুগলীর একটি হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করান। সেখান থেকে রানু এবং ছেলেকে নিয়ে রবিবার সকালে বাড়িতে ফেরেন গোবিন্দবাবু। সেই দিন ,পাড়ায় বেরিয়ে মাথা ঘুরে পড়ে যান তিনি। প্রতিবেশীরা ধরে বাড়িতে নিয়ে আসেন। তারপর আবার বাড়ি থেকে বের হতে গিয়ে পড়ে যান। দু’দিন না খাওয়ার ফলে বৃদ্ধ গোবিন্দবাবুর শরীর আর দিচ্ছিল না। তারপর স্থানীয়রা ঠাকুরপুকুর থানায় ফোন করে। পুলিশ এসে বাড়ির ওই তিনজনকে বিদ্যাসাগর হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে যাওয়ার পর ডাক্তাররা জানান গোবিন্দবাবুর গায়ের তাপমাত্রা বেশি রয়েছে। তাকে ওখান থেকে বাঙ্গুর হাসপাতাল নিয়ে যান, সেখান থেকে মেডিকেল হাসপাতাল, নীলরতন সরকার হাসপাতাল, ভর্তি তো দূরের কথা!কোথাও ভর্তি না করতে পেরে,অ্যাম্বুলেন্স গোবিন্দবাবুকে পুলিশ সমেত বাড়ির সামনে নামিয়ে দিয়ে যায় ।
advertisement
advertisement
গোবিন্দ কর্মকারের আত্মহত্যার চিঠিটি দেখে মনে হয়েছে, তিনি না থাকলে ওই দু’জনের মর্মান্তিক পরিস্থিতি হবে। তিনি বাঁচাতে চেয়েছিলেন স্ত্রী এবং পুত্রকে। রবিবারে হাসপাতাল থেকে হাসপাতাল ঘুরে বেড়ানোর অভিজ্ঞতা হয়তো তাঁকে আরও জেদি করে তুলেছিল। আর সেই জেদের পরিণতি সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে পৃথিবী ছেড়ে চলে যাওয়া। স্থানীয় কেউ মানতে পারছেন না বিষয়টি। সবাই বলছেন যদি হাসপাতালে ভর্তি নিত তাহলে হয়তো এই ঘটনা ঘটাত না। দেবাশীস ও তার মা মশারি টাঙানো অবস্থায় খাটে মৃত অবস্থায় পড়েছিল। গোবিন্দবাবু দরজার দিকে মাথা করে মেঝেতে পড়ে ছিলেন। আর মাথার দিকে সিমেন্টের মেঝেতে লেখা ছিল 'আমরা তিনজনেই মৃত।'ঘরে একটি কাপ পাওয়া গেছে, যার গায়ে কাগজ সাঁটা ছিল। আর সেই কাগজে লেখা ছিল ' কাপে কেউ হাত দেবেন না, বিষ আছে।'
advertisement
Shanku Santra
Location :
First Published :
June 09, 2020 11:22 PM IST