Birbhum News: যুবককে নৃশংস খুনের দায়ে দম্পতির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, আদালতের নজিরবিহীন পর্যবেক্ষণ
- Published by:Raima Chakraborty
- news18 bangla
Last Updated:
Birbhum News: ভবিষ্যতের কথা ভেবে স্ত্রী তার স্বামীকে নিয়ে প্রেমিককে খুনের পরিকল্পনা করেন। সফলও হয় তারা।
রামপুরহাট: বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন স্ত্রী। সন্ধেবেলা গ্রামের খেতে পরপুরুষের সঙ্গে স্ত্রীকে দেখেও ফেলেন স্বামী। আর তার পরেই স্ত্রীকে বুঝিয়ে তাকে সঙ্গে নিয়েই সেই যুবককে খুন। ভবিষ্যতের কথা ভেবে স্ত্রী তার স্বামীকে নিয়ে প্রেমিককে খুনের পরিকল্পনা করেন। সফলও হয় তারা। তবে গ্রামবাসীদের তৎপরতায় ধরাও পড়ে যায় স্বামী-স্ত্রী।
রামপুরহাটে যুবককে শ্বাসরোধ করে খুনের ঘটনায় যাবজ্জীবন হল ওই দম্পতির। মঙ্গলবার রামপুরহাট আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক গুরুদাস বিশ্বাস ওই সাজা শোনান। সাজাপ্রাপ্তদের নাম মুক্তা মাল ও তনু মাল। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রামপুরহাট থানার বড়জোল গ্রামের বাসিন্দা, বছর চব্বিশের মলয় মন্ডল পেশায় চাষি ও মিষ্টির কারিগর ছিলেন ।মলয় মণ্ডলের বাড়ির চাষের জমি দেখভাল এবং বাড়ির অন্যান্য কাজ করতেন মুক্তা ও তাঁর স্ত্রী তনু।
advertisement
আরও পড়ুন: ১০০ মিটার দূরত্বেও দেখা যাচ্ছে না কিছু, শীতের নাচন শেষে ঘন কুয়াশায় ঢেকে জলপাইগুড়ি-সহ ডুয়ার্স
সেই সূত্রে বড়জোল গ্রামে মলয়ের এক কাকার বাড়িতে মুক্তা ও তনু তাদের দুই নাবালক ছেলেমেয়েকে নিয়ে থাকতেন। বাড়িতে কাজের সূত্রে মলয়ের সঙ্গে মুক্তার গভীর বন্ধুত্ব ছিল। ২০২০ সালের ৯ মার্চ, দোলের দিন বিকেলে রামপুরহাট থানার কাষ্ঠগড়া অঞ্চলের পারকান্দি গ্রামে দোলের মেলা উপলক্ষে মিষ্টি তৈরির জন্য বাড়ি থেকে একা বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন মলয়। তার পর থেকে তাঁর খোঁজ মেলেনি। মলয়ের মা সুমিত্রা মণ্ডল ১৭ মার্চ রামপুরহাট থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন।
advertisement
advertisement
গ্রামে এই ঘটনা নিয়ে রীতিমতো চাঞ্চল্যকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়, কারণ গ্রামের ছেলে দশ দিন ধরে নিখোঁজ থাকায় গ্রামের মানুষ ১৭ মার্চ গ্রামের দুর্গামন্দিরে আলোচনায় বসে। আলোচনায় মলয়দের পরিচারক মুক্তা মালকে ডাকা হয়। মুক্তাকে চেপে ধরতেই তিনি মলয়কে খুনের ঘটনা স্বীকার করে নেন বলে পুলিশ সূত্রে জানা যায়। মুক্তা ও তাঁর স্ত্রীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশ সূত্রের খবর, জেরার মুখে ওই দম্পতি জানান, ৯ মার্চ চিতুড়ি গ্রামে একটি বিয়েবাড়ির অনুষ্ঠানে সপরিবার গিয়েছিলেন মুক্তা মাল। অনুষ্ঠানের রাতে স্ত্রীকে দেখতে না পেয়ে মুক্তার সন্দেহ হয়।
advertisement
আরও পড়ুন: পুরুলিয়া বেড়াতে গিয়ে মিস করেননি তো এই জায়গাটি? দেখুন এক ঝলক
চিতুড়ি গ্রাম ঢুকতে একটি পুকুর পাড়ে গমের খেতে স্ত্রীর সঙ্গে মলয়কে ঘনিষ্ঠ ভাবে দেখেন মুক্তা। এর পরেই মুক্তা মলয়কে প্রাণে মারার পরিকল্পনা করতে শুরু করেন। স্ত্রীকে চাপ দেন মুক্তা মলয়কে প্রাণে না মেরে ফেললে আর সংসার করবেন না তার সঙ্গে। ভবিষ্যতের কথা ভেবে মুক্তার স্ত্রী সেই খুনের পরিকল্পনায় সামিল হয়। মলয়ের গলায় নাইলনের দড়ির ফাঁস লাগিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। ১৯ মার্চ গভীর রাতে বড়জোল গ্রাম থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে চিতুড়ি ও বেনোড়া গ্রামের মাঝে হাজরাপুকুর থেকে মলয় মণ্ডলের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
advertisement
সরকারি আইনজীবী অতীন্দ্র কুমার মণ্ডল জানান, তনু মালের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কের জড়িয়ে পড়েছিলেন মৃত যুবক। ২০২০ সালের ৯ মার্চ গ্রামের একটি বিয়ে বাড়ির অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন তনু ও তার স্বামী সেখানে মলয়কে ডেকে নেয় তনু, পরে তারা লুকিয়ে ওই গ্রামের গমের খেতে গল্প করছিল স্ত্রীর খোঁজে এসে দুজনকে একসঙ্গে দেখে ফেলেন মুক্তা হাতেনাতে মলয়কে ধরে ফেলেন মুক্তা। মলয়কে খুনের সাহায্য না করলে স্ত্রীকে ঘরে ঢুকতে দেবে না বলে জানায়। এর পরে ওই যুবককে খুন করে স্বামী-স্ত্রী।
advertisement
৩০২ ধারায় খুনের দায়ে ওই দম্পতির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। পাশাপাশি ৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাস জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি ২০১ ধারায় মৃতদেহ ও প্রমাণ লোপের চেষ্টায় ৭ বছর কারাদণ্ডের এবং ৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাস জেলের নির্দেশ দেন। দু’টি সাজাই এক সঙ্গে চলবে বলে সরকারি আইনজীবী জানান। অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী আব্দুল বারি জানান, তাঁরা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হবেন।
advertisement
অক্ষয় ধীবর
view commentsLocation :
Kolkata,West Bengal
First Published :
February 01, 2023 6:23 PM IST

