#কলকাতা : কলকাতা কখনও হার না মানার দলে। করোনা যুদ্ধ তা সে যতই কঠিন হোক। কলকাতাকে জিততে হবে। কলকাতাকে জেতাতেই হবে। তাই করোনার সঙ্গে যুদ্ধের ময়দান থেকে পিছিয়ে আসা নয়, যুদ্ধের ময়দানে একেবারে কোমর বেঁধে নেমে পড়া। একেবারে সামনে থেকে। ঠিক যেমনটা লড়াই চালাচ্ছেন কলকাতার তিনজন নার্স।
তবে শুধুমাত্র এই তিনজনই নয়। করোনা যুদ্ধে তাঁদের মতো আরও অনেকেরই গলায় আজ একটাই কথা ' আমরা করব জয় নিশ্চয়'। যুদ্ধ জয়ের শপথের সুর । আজ, মঙ্গলবার। আন্তর্জাতিক নার্সেস দিবসে নিউজ এইট্টিন বাংলার বিশেষ প্রতিবেদন।গোটা বিশ্বের পাশাপাশি কলকাতাতেও চোখ রাঙাচ্ছে করোনা। হু হু করে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। বাড়ছে মৃত্যুর হারও। তবে সুস্থও হচ্ছেন অনেকে। রীতিমত আতঙ্কের আবহ গ্রাস করেছে সকলকে। তবে এমন কিছু মানুষজন আছেন যাঁরা আতঙ্ক, ভয়কে নিজেদের জীবন থেকে দূরে, অনেক দূরে সরিয়ে রেখে প্রতিমুহূর্তে জীবনকে কার্যত বাজি রেখে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। যে লড়াই বেঁচে থাকার লড়াই। মানুষকে নতুন জীবন দেওয়ার লড়াইয়ে সামিল কলকাতার এমনই তিন যোদ্ধা। দীর্ঘদিন ধরে যাদের পেশা মানুষের সেবা করা। অসুস্থ রোগীদের দেখভালের মাধ্যমে সুস্থ করে তোলা।
আজ সেই পেশা নেশায় পরিণত হয়েছে ওঁদের। কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালের নার্সিং সুপারিনটেনডেন্ট সোমা রায় , রুপালি ঘোষ কিম্বা সল্টলেকের আরও একটি বেসরকারি হাসপাতালের নার্সিং বিভাগের প্রধান শর্মিষ্ঠা চৌধুরী। এঁরা প্রত্যেকেই দিনরাত এক করে চিকিৎসকদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁতে দাঁত চিপে রোগীদের সুস্থ করে তোলার কাজে ব্রতী হয়েছেন। আজ 'নার্স দিবসে' সেই সমস্ত নার্সদের কুর্নিশ। যাঁরা এই মুহূর্তে ঘর বাড়ি ভুলে করোনা যোদ্ধা হিসেবে মানুষকে সুস্থ করে তুলছেন। প্রতি পদে পদে রয়েছে বিপদ, ঝুঁকি জেনেও হাসিমুখে পরিবারের একজন সদস্য হিসেবেই রোগীদের সেবা-শুশ্রূষা করে চলেছেন। অনবরত।
কেউ দশ বছর, কেউ কুড়ি বছর, আবার কেউবা তারও বেশি সময় ধরে। তবে করোনা যুদ্ধ কঠিন হলেও লড়াইয়ের ময়দান ছাড়তে রাজি নন তাঁরা। তাঁদেরই অন্যতম বিজয়গড়ের বাসিন্দা সোমা রায় বললেন , 'যে যুদ্ধের ময়দানে নেমেছি সেখান থেকে পিছিয়ে আসার প্রশ্নই ওঠে না। এই পেশায় যখন এসেছি তখন মানুষের পাশে থেকে সেবা করাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। আমরা সবাই মিলে কে করোনায় আক্রান্ত, আর কে নন, তা না ভেবে এক পরিবারের মত হাসপাতালে রয়েছি'। করোনা রোগীদের মানসিকভাবেও শক্তি জোগাচ্ছেন নার্সরা। করোনার আতঙ্কের আবহেও যুদ্ধজয়ের শপথ নিয়েছেন বাঘাযতীনের বাসিন্দা রুপালি ঘোষ। বললেন ,একদিন ঝড় থেমে যাবে । পৃথিবী আবার শান্ত হবে। মারণ ভাইরাসের বিরুদ্ধে আমাদের সবার লড়াই বিফল হবে না'।
লেকটাউনের বাসিন্দা শর্মিষ্ঠা চৌধুরীর কথায়, পরিবার ভুলে এখন আমাদের সব সময় মন পড়ে আছে হাসপাতালে। হাসপাতালের কথা ভেবে মাঝেমধ্যেই রাতে ঘুম ভেঙে যাচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পরিবারের সহযোগিতাও বাড়তি মনের শক্তি বাড়াচ্ছে। যে শক্তি যুদ্ধজয়ের শক্তি'। চিকিত্সা পরিষেবায় সেবিকাদের নিরলস ও গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা সুবিদিত। আজ ১২ মে। আন্তর্জাতিক নার্সেস ডে বর্তমান সময়ে সেবিকাদের ভূমিকা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। চিকিত্সা পরিষেবার মেরুদণ্ড হলেন নার্সরা। যে কোনও প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ভয়াবহ বিপদের মুখোমুখি হয়েও মুমূর্ষুর সেবায় তাঁরা এখন অটল। চিকিৎসা ব্যবস্থার সম্পদ। সেই সমস্ত যোদ্ধাদের নিউজ এইট্টিন বাংলার সেলাম। আজ নার্সেস দিবসে তাঁরা প্রত্যয়ী। বললেন, করোনাকে ভয় না করে সতর্ক থাকুন। সাবধান থাকুন। সরকারি নিয়ম মেনে চলুন। অচেনা অজানা শত্রুর সঙ্গে আমরা এই যুদ্ধে জয়ী হবই হব'।
VENKATESWAR LAHIRI
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Corona Virus, Corona warriors, Coronavirus