প্রতিনিয়ত নিশ্চিত রোগীদের সংখ্যা তীব্র ভাবে বৃদ্ধির মাধ্যমে এই মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউ টি দেশকে কঠোরভাবে আঘাত করেছে, যা নাগরিকদের মধ্যে ভয় ও আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে এবং অনেক রাজ্যকে মহামারীর বিস্তার নিয়ন্ত্রণ করতে এবং সংক্রমণের শৃঙ্খল ভাঙতে বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপ করতে বাধ্য করেছে।
২২ এপ্রিল ২০২১ পর্যন্ত, সারা ভারতবর্ষে ৩,১৫,৭৩৫ টি নতুন নিশ্চিত কেস (Covid-19 এর ২২,৮৪,৪১১ টি সক্রিয় কেস) রেকর্ড করা হয়েছে এবং সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্য হলো মহারাষ্ট্র। বিশেষজ্ঞদের দাবি Covid-19 মিউট্যান্ট স্ট্রেনটি আরও গুরুতর ও সংক্রামক এবং তা উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে তুলেছে। বিশেষজ্ঞ এবং ভাইরাসবিদরা নতুন স্ট্রেনটি বিশ্লেষণ করে গবেষণা চালিয়ে যাওয়ার সময়ে, আমাদের নিজেদের রক্ষা করতে এবং এর বিস্তার রোধ করতে এর উপসর্গ এবং ঝুঁকিগুলি বোঝা গুরুত্বপূর্ণ। ৬০ বছরের বেশি বয়সী মানুষ এবং সহ-অসুস্থতা যুক্তব্যক্তিদের গুরুতর অসুস্থতা হওয়ার ঝুঁকি বেশি। তবে, যে কেউই Covid-19 এর দ্বারা সংক্রামিত হতে পারে এবং গুরুতর অসুস্থ হতে পারে বা বয়স নির্বিশেষে এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে।
COVID-19 এর সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণগুলি হলো জ্বর, শুষ্ক কাশি এবং ক্লান্তি। কিন্তু অন্যান্য লক্ষণ যা কিছু রোগীর ক্ষেত্রে দেখা গেছে সেগুলি হলো শ্বাসকষ্ট, স্বাদ বা গন্ধ হ্রাস, বুকে ব্যথা, বদ্ধ নাক, কনজাংটিভাইটিস, গলা ব্যথা, মাথাব্যথা, পেশী বা গাঁটে ব্যথা, ত্বকের ফুসকুড়ি, বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া, ডায়রিয়া, ঠান্ডা লাগা বা মাথা ঘোরা। এই জাতীয় উপসর্গযুক্ত ব্যক্তিদের অবিলম্বে পরীক্ষা করা উচিত এবং সময়মতো চিকিৎসা সেবা নেওয়া উচিত। অজ্ঞাত অ্যাসিম্পটোমেটিক কেস অর্থাৎ সংক্রামিত ব্যক্তি যাদের কোনো উপসর্গ নেই তারা একটি প্রধান উদ্বেগের কারণ তারা অজান্তেই অন্যদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়ে দিতে পারে।
সরকার এবং স্বাস্থ্যসেবা বিশেষজ্ঞরা ধারাবাহিকভাবে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা, মাস্ক পরা, ঘরগুলিতে ভালভাবে বায়ুচলাচলের ব্যবস্থা রাখা, ভিড় স্থান বা অন্যদের সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ এড়ানো এবং ভাল স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখার মতো COVID-উপযুক্ত আচরণের উপর বার্তা পাঠাচ্ছেন। ভাল স্বাস্থ্যবিধির মধ্যে রয়েছে ভালোভাবে হাত ঘষে হ্যান্ডওয়াশ বা সাবান এবং জল দিয়ে ভালো ভাবে হাত পরিষ্কার করা, চোখ, নাক এবং মুখ স্পর্শ করা এড়ানো, কাশি বা হাঁচি দেওয়ার সময় কনুই বা টিস্যু দিয়ে মুখ এবং নাক ঢেকে রাখা এবং ঘন ঘন স্পর্শ করা পৃষ্ঠগুলি পরিষ্কার/জীবাণুমুক্ত করে রাখা। যদি আপনার শরীরে COVID-19 এর কোনও লক্ষণ/উপসর্গ দেখা যায় বা আপনি যদি COVID-19 এর উপসর্গ থাকা যুক্ত কোনো ব্যাক্তির সংস্পর্শে আসেন তাহলে পরীক্ষা করে নেওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ।
বর্তমানে, সরকারী কেন্দ্রগুলিতে বিনামূল্যে RT-PCR পরীক্ষা প্রদানকারী COVID পরীক্ষার সুবিধার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে, অন্যদিকে বেসরকারী ল্যাবগুলি টাকার বিনিময়ে আপনার বাড়ি থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাটি করে। প্রতিদিন করা পরীক্ষার সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে, ক্ষতিকারক প্রমাণিত হওয়া নিশ্চিত রিপোর্টগুলি পেতে আরও বিলম্ব হয়। সুতরাং, যদি কেউ COVID এর উপসর্গগুলি অনুভব করে তাহলে পরীক্ষার ফলাফল না পাওয়া পর্যন্ত বাড়িতে স্ব-বিচ্ছিন্ন থাকা উচিত। তাড়াতাড়ি পরীক্ষা, সময়োপযোগী চিকিৎসা, COVID-উপযুক্ত আচরণ এবং টিকাকরণ মৃত্যুহার এবং দ্রুত বিস্তার রোধ করবে।
যদি কারও COVID-19 এর লক্ষণ বা উপসর্গ থাকে, তিনি বাড়িতে বা COVID পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষাটি করতে পারেন। ফলাফল ইতিবাচক হিসাবে চিহ্নিত হলে, ব্যক্তিটির প্রথমে তাদের এলাকার COVID-19 হেল্পলাইনে এবং হাসপাতালে সরাসরি যোগাযোগ করা উচিত কারণ হাসপাতালে ভর্তি নেওয়া বা বেড প্রদান করা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে উপলব্ধতার উপর ভিত্তি করে করা হয়।
- ডাঃ মুকেশ মহাদে এবং ডাঃ শৈলেশ ওয়াগল United Way Mumbai NGO-এর সহকর্মী
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Coronavirus, COVID-19, Sanjeevani