#বর্ধমানঃ মহামারি আগেও দেখেছে বর্ধমান। তবে তা দেড়শ বছর আগে। উজার হয়ে গিয়েছিল গ্রামের পর গ্রাম, শহর। মৃত্যু হয়েছিল অসংখ্য মানুষের। নিস্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল লোকালয়। শুনশান রাস্তা। অনেকটা যেন আজকের মত পরিস্থিতি। সেই মহামারির কথা ইতিহাস হয়ে এখনও মুখে মুখে ফেরে। ইতিহাসের পাতায় মহামারি হিসেবে পাকাপাকিভাবে ঠাঁই করে নিয়েছে সেই কুখ্যাত বর্ধমান ফিভার। অনেকের মতে, সেই জ্বর আসলে ছিল ম্যালেরিয়া। অনেকে আবার বলেন কালাজ্বর।
করোনার মতই সেই জ্বর ছড়িয়ে পড়েছিল বহু দূরে। অনেকে বলছেন, করোনার উৎপত্তি চিনে। ক্রমে তা ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বজুড়ে। তেমনই বর্ধমান জ্বরের উৎপত্তি বাংলাদেশে। রাস্তা তৈরির কাজে যুক্ত শ্রমিকদের থেকে তা ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ে। চব্বিশ পরগনা, হুগলি হয়ে তা ঢুকেছিল বর্ধমানে। দশ বছরেরও বেশি সময় সেই জ্বর স্থায়ী হয় বর্ধমানে। মৃত্যু মিছিল দেখেছিল তৎকালীন বর্ধমান। অসংখ্য মানুষের মৃত্যুর কারণেই সেই জ্বরের নাম হয় বর্ধমান ফিভার।
ইতিহাস বলে, বর্ধমান ফিভারের আগে বর্ধমান ছিল স্বাস্থ্যকর স্থান। স্বাস্থ্য উদ্ধারে আসতেন অনেকেই। কিন্তু বর্ধমান ফিভার পেরিয়ে যাওয়ার পরেও বর্ধমান যাওয়ার কথা ভাবলেই বুক কাঁপতো অনেকের। বর্ধমানে জিটি রোডের ধার বরাবর ছিল ইংরেজ সাহেবদের বাড়ি। থাকতেন নীলকর সাহেবরা। কাছেপিঠে ছিল অনেক নীলকুঠি। বর্ধমান জ্বরের হাত থেকে পরিত্রাণ পেতে ঘর ছেড়ে পালিয়ে বাঁচেন ইংরেজ শাসকরা। বন্ধ হয় নীল চাষ। চিকিৎসা না পেয়ে মৃত্যু হয় অগুণতি মানুষের। সেই পরিনাম দেখেই পরবর্তী কালে বেশ কয়েকটি হাসপাতাল স্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়েছিল বর্ধমান রাজ পরিবার। আজকের বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল যেখানে সেখানেই মহামারির পর হাসপাতাল গড়েছিলেন বর্ধমানের মহারাজ।
মহামারির হাত ধরেই আসে মন্বন্তর। বর্ধমান জ্বরের কারণে ভেঙে পড়েছিল এলাকার তৎকালীন অর্থনৈতিক কাঠামো। তবে সেসময় প্রজাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল বর্ধমানের রাজ পরিবার। খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করে প্রজাদের বাঁচিয়েছিলেন তাঁরা। তাই অত বড় মহামারির পরও দুর্ভিক্ষ সেভাবে প্রভাব ফেলতে পারেনি বর্ধিষ্ণু শহরে।
Saradindu Ghosh
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: 150 years, Bardwan fever, Epidemic