সার্থক পণ্ডিত, কোচবিহার: ইতিমধ্যেই শীত প্রায় যাওয়ার পথে। এবং সরস্বতী পুজো শেষ হয়েছে। তাই বাজারে আসতে শুরু করেছে কুল এবং কামরাঙা। তবে এই দুই ফল সাধারণ ভাবে যেমন খাওয়া যায়, ঠিক তেমনই মেখেও খাওয়া যায়। তবে সাধারণের চাইতে মেখে খেলে পরে এর স্বাদ আরও কয়েকগুণ বেড়ে ওঠে। অনেকেই চলতি পথে কিংবা দুপুরের হালকা রোদের মধ্যে এই মাখা খেতে খুব পছন্দ করে থাকেন। কোচবিহারের বিভিন্ন এলাকায় এই ধরনের ফলের মাখার দোকান দেখতে পাওয়া যায়। তবে কোচবিহার ভবানীগঞ্জ বাজারের দাস ব্রাদার্স চৌপথি এলাকায় যে দোকানটি বসে, তা ইতিমধ্যেই সকলের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কুল এবং কামরাঙা মাখার যে স্বাদ, তা পেতে অনেকেই ভিড় করছেন এই দোকানে।
বাজারের একদম কাছেই এই দোকান থাকার কারণে। অনেকেই বাজার শেষে বা বাজার করার আগে এই ফল মাখার দোকানে ভিড় জমান। সকলে সাধ্যের মধ্যে মাত্র ১০ টাকা এবং ২০ টাকা প্রতি প্লেট দামে বিক্রি করা হয় এই মাখা। তবে সম্পূর্ণ পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা মেনে এই মাখা তৈরি করে বিক্রি করে থাকেন এই দোকানের মালিক। দোকানের মালিক বাচ্চু হক্ জানাচ্ছেন সকাল ১০টা থেকে তিনি এই দোকান শুরু করেন। রাত ৯টা পর্যন্ত তাঁর এই দোকানের কর্মকাণ্ড চলে। সারাদিন প্রচুর মানুষ ভিড় জমান এই মাখা ফল খাওয়ার জন্য তাঁর দোকানে। অনেকে ১০ টাকার প্লেট নিয়ে থাকেন। আবার অনেকে ২০ টাকার প্লেট নেন। তবে এই ফল খেতে সকলের দারুন পছন্দ করেন।"
কুলের কিছু উপকারিতা:
১) কুল কিংবা বরইয়ে মধ্যে ভিটামিন-A, ভিটামিন-C, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট-সহ আরও অনেক উপকারী উপাদান থাকে। যা আমাদের রোগ প্রতিরোধে যেমন ভূমিকা রাখে, অন্যদিকে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতাও বাড়িয়ে দেয়।
আরও পড়ুন : ১০ বছরের প্রেম ফেসবুকে, ভারতে এসে প্রেমিককে বিয়ে করলেন সুইডেনের তরুণী
২) কুল কিংবা বরই এর মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট উপাদান টিউমারের উপর সাইটোটক্সিক প্রভাব বিস্তার করে। যার ফলে শরীরে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।
৩) কুল কিংবা বরই কোষ্ঠকাঠিন্য-সহ অন্যান্য হজমজনিত সমস্যার সমাধান করে। ক্ষুধাবর্ধক হিসেবেও কাজ করে।
৪) কুল কিংবা বরই একই সঙ্গে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও আয়রন সমৃদ্ধ হওয়ার কারণে হাড় গঠনে এবং দাঁতের সুরক্ষায় গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। যা হাড় শক্ত ও মজবুত করতে সাহায্য করে।
কামরাঙার কিছু উপকারিতা:
১) কামরাঙায় প্রচুর পরিমাণে প্রদাহ প্রতিরোধী উপাদান ও অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট উপাদান রয়েছে যা ত্বকের নানা সমস্যা প্রতিরোধে কাজ করে। এছাড়াও এতে থাকা ভিটামিন সি শরীর থেকে বিষাক্ত উপাদান বের করে দিয়ে দেহ সুস্থ রাখে।
২) এই ফল শরীরে ক্ষতিকর কোলেস্টরলের মাত্রা কমায়। ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। এছাড়াও এতে কিছু পরিমাণে পটাশিয়াম ও সোডিয়াম থাকে যা উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
৩) এতে ক্যালোরির পরিমাণ কম থাকে। বিকেলে ক্ষুধা নিবারণের জন্য কামরাঙা ভাল খাবার হতে পারে। এছাড়াও এর আঁশ উপাদানের জন্য খাবার দ্রুত হজমে সাহায্য করে। যা ওজন কমানোর প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে।
আরও পড়ুন : কর্পোরেট চাকরি ছেড়ে দম্পতি আজ পুরোপুরি কৃষক, তাঁদের চাষ করা কয়েকশো টন সব্জি পাড়ি দিচ্ছে বিদেশে
৪) ডায়াবেটিস রোগীরা নিয়মিত কামরাঙা খেতে পারেন। এতে শরীরে ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এবং অনেকটাই উপকার দেবে ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রনে আনার জন্য।
এই ফল সাধারণভাবে খান অথবা মেখে খান-দু'ভাবেই এই ফলের মধ্যে যে উপকারিতা রয়েছে তা পাওয়া সম্ভব। তবে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাওয়ায় উচিত। অন্যথায় বিরূপ প্রতিক্রিয়া হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Jujube, Star Fruit