রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ‘অতিরিক্ত বৈঠক’ নিয়ে জোর জল্পনা! এর উদ্দেশ্য ঠিক কী? জানুন পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর!

Last Updated:

বর্তমান অবস্থায় বিনিয়োগকারীরা বিভ্রান্ত। কারণ সবার মনেই প্রশ্ন জাগছে, কী এমন হল, যাতে নির্ধারিত সময়সীমার আগেই হঠাৎ এই বৈঠক ডাকতে হল?

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি
আগামী ৩ নভেম্বর অর্থাৎ বৃহস্পতিবার একটি অতিরিক্ত বৈঠকের আয়োজন করেছে মুদ্রা নীতি কমিটি। এই খবর জানানো হয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া বা আরবিআই-এর তরফে। মূল ঘোষণা অনুযায়ী, মুদ্রা নীতি কমিটির পরবর্তী বৈঠক আগামী ৫ থেকে ৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। তা-হলে হঠাৎ কী উদ্দেশ্যে নভেম্বরে এই বৈঠক ডাকা হল, তাই নিয়ে এখন জল্পনা তুঙ্গে!
স্টক মার্কেটে যাঁরা বিনিয়োগ করেন, তাঁরা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রতিটা পদক্ষেপের উপর কড়া নজর রাখেন। সেই অনুযায়ী পরবর্তী বিনিয়োগের ঘুঁটি সাজান বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু বর্তমান অবস্থায় বিনিয়োগকারীরা বিভ্রান্ত। কারণ সবার মনেই প্রশ্ন জাগছে, কী এমন হল, যাতে নির্ধারিত সময়সীমার আগেই হঠাৎ এই বৈঠক ডাকতে হল? মানিকন্ট্রোল এই প্রশ্নের ৫টি সম্ভাব্য উত্তর ব্যাখ্যা করেছে। এখন জেনে নেওয়া যাক সেই ৫টি মূল প্রশ্ন এবং তার উত্তর।
advertisement
কেন এই বৈঠক?
advertisement
গত ১২ অক্টোবর কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স (সিপিআই)-এর ডেটা প্রকাশিত হওয়ার পরে মুদ্রা নীতি কমিটির এই বৈঠক অত্যন্ত প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে। এই পরিসংখ্যান থেকে এটা স্পষ্ট যে, আরবিআই প্রথম বার মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে পুরোপুরি ব্যর্থ। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরে খুচরো মূল্যস্ফীতি (মূল্যস্ফীতির হার) বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭.৪১ শতাংশ। ফলে এই তথ্য থেকে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, গড় মূল্যস্ফীতি টানা তিন ত্রৈমাসিকে ২-৬ শতাংশের সীমার বাইরে রয়েছে। জানুয়ারি-মার্চ মাসে গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ৬.৩ শতাংশ, এপ্রিল-জুন মাসে ৭.৩ শতাংশ এবং জুলাই-সেপ্টেম্বর মাসে ৭ শতাংশ।
advertisement
কোর অ্যানালিটিক্যাল গ্রুপ, ইন্ডিয়া রেটিং অ্যান্ড রিসার্চের ডিরেক্টর সৌম্যজিৎ নিয়োগী বলছেন, ‘আদেশ অনুযায়ী আরবিআই-কে সংশোধনমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। এ-ছাড়া অন্য কোনও পথ নেই। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে একটি সম্ভাব্য সময়সীমা নির্ধারণ করতে হবে। যে-হেতু পলিসি রেট মুদ্রা নীতি কমিটি স্থির করে, তাই ধারা ৪৫ জেডএন অনুযায়ী প্যানেলের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করা প্রয়োজন’।
advertisement
ধারা ৪৫ জেডএন কী?
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার আইনের ধারা ৪৫ জেডএন-এর অধীনে মুদ্রা নীতি কমিটির নির্ধারিত সূচির বাইরে সভা ঘোষণা করার অধিকার রয়েছে। ‘মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা বজায় রাখতে ব্যর্থতা’ শিরোনামে বর্ণনা করা হয়েছে, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যর্থ হলে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক তার প্রতিবেদনে কেন্দ্রীয় সরকারকে কী কী বিষয় জানাবে।
advertisement
এ-ছাড়া ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মুদ্রানীতি কমিটির রেগুলেশন ৭ এবং মুদ্রানীতি প্রক্রিয়া প্রবিধান ২০১৬ আদেশ দেয় যে, মুদ্রা নীতি কমিটির সেক্রেটারিকে আলোচনা করে একটি প্রতিবেদন তৈরি করতে হবে। যা এই বিধানগুলির অধীনে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠানো হবে। আর সেটা ঠিক করতেই আইনের ধারা ৪৫ জেডএন অনুযায়ী কমিটির একটি পৃথক সভা নির্ধারণ করা উচিত।
advertisement
রেগুলেশনে আরও বলা হয়েছে, যে সময় থেকে আরবিআই মুদ্রাস্ফীতি লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে তার এক মাসের মধ্যে ব্যর্থতার রিপোর্ট সরকারকে পাঠাতে হবে। যে-হেতু সেপ্টেম্বরের সিপিআই ডেটা ১২ অক্টোবর প্রকাশিত হয়েছিল, তাই ১২ নভেম্বরের মধ্যেই রিপোর্ট জমা দিতে হবে।
ব্যর্থতার জন্য আরবিআই কী কারণ দর্শাতে পারে?
এই রিপোর্টে সম্ভবত বেশ কয়েকটি কারণের উপর আলোকপাত করবে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। এর মধ্যে মূল কারণ হবে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, যা বন্ধ করার ক্ষমতা হয়তো কারও হাতেই নেই। এ-ছাড়া সরবরাহের ব্যাঘাত এবং চিনের জিরো কোভিড নীতিকেও কাঠগড়ায় তোলা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু মাথায় রাখতে হবে যে, ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে ইউক্রেন আর রাশিয়ার যুদ্ধের আগে থেকেই মুদ্রাস্ফীতি বাড়তে শুরু করে। কিন্তু যুদ্ধের ফলে সরবরাহ ব্যাহত হওয়ায় তা লাগামছাড়া পর্যায়ে পৌঁছে যায়।
advertisement
কী ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিতে পারে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক?
মুদ্রাস্ফীতি কেন লাগাম ছাড়া হচ্ছে, তার কারণ মোটামুটি সকলেই জানেন। কিন্তু এর সঠিক সমাধান খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এবং মুদ্রা নীতি কমিটি বারবার বৈঠকে বসলেও কাজের কাজ কিছু হয়নি। আর্থিক নীতি কঠোর করার পরেও মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। কেন্দ্রকে দেওয়া রিপোর্টে এই পদক্ষেপগুলোর কথা তুলে ধরা হতে পারে।
গত ৮ এপ্রিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অতিরিক্ত ব্যাঙ্কিং সিস্টেমকে সহজ করতে স্থায়ী আমানত সুবিধা প্রবর্তনের কথা ঘোষণা করে। আকস্মিক ঘোষণার কারণে সুদের হার রাতারাতি বেড়ে যায়। পলিসি রেপো রেট (যে হারে আরবিআই ব্যাঙ্কগুলিকে অর্থ ঋণ দেয়) ছাড়াও মুদ্রা নীতি কমিটি এখনও পর্যন্ত ১৯০ বেসিস পয়েন্ট থেকে ৫.৯ শতাংশ বাড়িয়েছে। আরবিআই কি তার রিপোর্টে ইঙ্গিত করতে পারে যে, মূল্যস্ফীতিতে লাগাম পরাতে রেপো রেট আরও বাড়াতে হবে? এটা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাবে না। তবে অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন যে, আগামী ৫-৭ ডিসেম্বরের বৈঠকে রেপো রেট বাড়তে পারে। মার্চের মধ্যে তা প্রায় ৬.৫ শতাংশে পৌঁছে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
মুদ্রাস্ফীতি কি লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে আনা যাবে?
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হল, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসবে কি না? আরবিআই কর্মকর্তারা আগেই উল্লেখ করেছেন যে, আগামী ২ বছরের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৪ শতাংশে নামিয়ে আনতে হবে। এমনকী গত ৩০ সেপ্টেম্বর সাংবাদিক সম্মেলনে গভর্নর শক্তিকান্ত দাস বলেছিলেন যে, ‘আরবিআই আশা করে যে, মুদ্রাস্ফীতি আগামী ২ বছরের মধ্যে লক্ষ্যের কাছাকাছি পৌঁছে যাবে। এটা আগেও আমাদের প্রত্যাশা ছিল এবং এখনও তা রয়েছে’। যেমন - রিপোর্ট জমা দেওয়ার ২ বছরে অর্থাৎ অর্থবর্ষ২৫-এর তৃতীয় ত্রৈমাসিকের মধ্যে মুদ্রাস্ফীতি ৪ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি থাকা উচিত। আরবিআই-এর সর্বশেষ মুদ্রাস্ফীতি সংক্রান্ত পূর্বানুমান অনুসারে, সিপিআই মুদ্রাস্ফীতি অর্থবর্ষ২৪-এ গড় ৫.২ শতাংশ হতে পারে।
view comments
বাংলা খবর/ খবর/ব্যবসা-বাণিজ্য/
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ‘অতিরিক্ত বৈঠক’ নিয়ে জোর জল্পনা! এর উদ্দেশ্য ঠিক কী? জানুন পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর!
Next Article
advertisement
Rhino rescue: বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
  • ১৩ দিনের অপারেশন রাইনোতে ১০টি গন্ডার উদ্ধার করেছেন বনকর্মীরা

  • বিপর্যয়ের সময় জলদাপাড়া থেকে ভেসে গিয়েছিল বেশ কয়েকটি গন্ডার

  • অক্লান্ত পরিশ্রমের পর বনকর্মীরা গন্ডারগুলোকে জঙ্গলে ফেরাতে সক্ষম হন

VIEW MORE
advertisement
advertisement