কথায় বলে, যদি প্রবল ইচ্ছে থাকে তাহলে ভগবান স্বয়ং পথ করে দেন। শুধু প্রয়োজন সত্যিকারের নিষ্ঠা এবং কঠোর পরিশ্রম। রাজস্থানে শিক্ষিত যুবকদের একাংশ এই আপ্তবাক্যকেই সত্যি প্রমাণ করেছেন। প্রত্যেকেই উচ্চশিক্ষিত, মোটা বেতনের চাকরি করতে পারতেন অনায়াসে। কিন্তু সে সব ছেড়ে তাঁরা বেছে নিয়েছেন আধুনিক কৃষিকাজ। নিজের ভাগ্য লিখছেন নিজেরাই। সম্পদ এবং খ্যাতির পাশাপাশি পুরস্কারও মিলছে।
রাজস্থানের এই যুবকদের কাহিনী দেশের প্রত্যেক যুবকের কাছেই অনুপ্রেরণা। নিষ্ঠা এবং কঠোর পরিশ্রম তাঁদের পৌঁছে দিয়েছে সাফল্যের চূড়োয়। অন্যদের কাছে তাঁরাই এখন উদাহরণ। এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন এই তরুণ কৃষকরা।
আরও পড়ুন: পেরিয়ে গেল ১৮৪ দিন! পথেই কাটছে দিন, পরিবেশ রক্ষা করতে চমকপ্রদ উদ্যোগ যুবকের!
কোটার এমবিএ কৃষকের বার্ষিক টার্নওভার ১৫ লাখ: কোটার কপিল জৈন উচ্চশিক্ষার পর শুরু করেন গোলাপের চাষ। তাঁর কেরিয়ারও ফুটে ওঠে গোলাপের মতোই। কপিলের বয়স ৩৯ বছর। পুণে থেকে এমবিএ করেন। বহুজাতিক কোম্পানিতে বার্ষিক ১৭ লাখ টাকা বেতনের চাকরিও পেয়েছিলেন। কিন্তু বছর পাঁচেক আগে মায়ানগরী মুম্বইয়ের মায়া কাটিয়ে ফিরে আসেন গ্রামের বাড়ি বানিয়ানিতে। বাবার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে শুরু করেন প্রথাগত চাষাবাদ।
আরও পড়ুন: এমন দৃশ্য কমই দেখা যায়! চাঁদের পাশে অদ্ভূত নক্ষত্র, বিরল যোগ? কী বলছেন জ্যোতিষরা
কিন্তু কয়েকদিনের মধ্যেই বুঝতে পারেন, চাষে ফসল নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই এমন কিছু শুরু করতে চাইলেন যাতে ঝুঁকি কম কিন্তু ব্যবসা ভাল হয়। এরপর তিনি শুরু করেন গোলাপজল ও গোলাপ ফুল চাষ।
৩টি সরকারি চাকরি ছেড়ে চাষ: আজকের যুগে সরকারি চাকরিই যাঁদের ধ্যান জ্ঞান তাঁরা বারান জেলার ধনরাজ লাভবংশীর গল্পটা শুনতে পারেন। অনেকেই অবাক হবেন ধনরাজ ৩টি সরকারি চাকরি ছেড়ে কৃষিকাজ করছেন। আধুনিক ইজরায়েলি প্রযুক্তিতে তিনি সয়াবিন চাষ করে ৩৮ লাখ টাকা লাভ করেছেন।
ধারের টাকায় চাষ করে আয় ৪০ লাখ: সিকারের বেরি গ্রামের সন্তোষ দেবীর মূল মন্ত্র হল, যারা কঠোর পরিশ্রম করে তারা কখনই পরাজিত হয় না। ন্যাশনাল হর্টিকালচার ডেভেলপমেন্ট স্কিম এবং কঠোর পরিশ্রম ও নিষ্ঠা সন্তোষের পরিবারের ভাগ্য ঘুরিয়ে দিয়েছে। সিন্দুরি ডালিমের গাছের হাত ধরেই নতুন রূপকথা লিখেছেন তিনি। চারা রোপণ ও ড্রিপ সেচের জন্য ৪৫ হাজার টাকা প্রয়োজন। ৩৫ হাজার টাকায় মহিষ বিক্রি করেন। বাকিটা আত্মীয়ের কাছে ধার নেন। তারপর ৫ বিঘা জমিতে লাগান ডালিম ও অন্যান্য ফলের গাছ। বছরের পর বছর পরিশ্রমের পর এখন এই জমি থেকে বছরে ৪০ লাখ টাকা আয় হচ্ছে। শুধু তাই নয়, এই দম্পতি অন্যান্য কৃষকদেরও জৈব চাষের প্রশিক্ষণও দিচ্ছেন।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।