#নয়াদিল্লি: দরকারি জিনিস তো বটেই। ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড বা চার্জ কার্ড আদতে তার চেয়েও বেশি কিছু। মানিব্যাগ বা ওয়ালেটে টাকা না থাকলে শেষ ভরসা এই কার্ডই। অথচ অনেকেই জানেন না ব্যাগে থাকা ওই কার্ডটা আসলে কী? ক্রেডিট, ডেবিট না কি চার্জ কার্ড? এখানে এই তিন ধরনের কার্ডের সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে আলোচনা করা হল। পাশাপাশি গ্রাহকের ব্যবহারের জন্য কোন কার্ডটা সঠিক তাও তুলে ধরা হল।
ক্রেডিট কার্ড: ধারে জিনিস কেনার আধুনিকতম রূপ ক্রেডিট কার্ড। ব্যবহারকারীকে ব্যাঙ্কের থেকে ক্রেডিট লিমিট দেওয়া হয় কেনাকাটা করার জন্য। তাই কিছু কিনলে ক্রেতার হয়ে ব্যাঙ্ক টাকা মেটায়। ক্রেতাকে ২০ থেকে ৫০ দিনের ভেতর ব্যাঙ্ককে টাকা মিটিয়ে দিতে হয়। সময়মতো সেই টাকা না মেটালে চড়া সুদ দিতে হয়।
ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা-অসুবিধা: নগদ টাকার অভাব থাকলে বা লোনের দরকার পড়লে ক্রেডিট কার্ড কাজে আসে। অনেকে ভাবেন ক্রেডিট কার্ড নেওয়া মানেই হচ্ছে চার্জ বা ফি দেওয়া বাধ্যতামূলক। কিন্তু বিষয়টি আসলে সেরকম নয়। নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ক্রেডিট কার্ড বিনাসুদেই ব্যবহার করা যায়। আর তারপর থেকে, নির্দিষ্ট পরিমাণ চার্জ দিয়ে ব্যবহার করতে হয়। পরিশোধের ক্ষেত্রেও এরকম কিছু নিয়ম আছে। দ্রুত পরিশোধ করলে কম চার্জ দিতে হবে বা ডিসকাউন্ট মেলে। এছাড়া ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে পেমেন্ট করলে বা কোথাও সাবস্ক্রিপশন করলে, বিভিন্ন ছাড় বা রিওয়ার্ড পয়েন্ট উপার্জন করা যায়। এরকম ভাবেই, মোট টাকার উপর ছাড় বা ক্যাশ ব্যাকও পাওয়ার সুবিধা থাকে।
ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের ফলে, গ্রাহকের অপ্রয়োজনীয় খরচের উপর ঝোঁক বেড়ে যায়। মাসিক বা বার্ষিক সুদ বা চার্জ দিতে হয় এবং আসল পরিশোধেরও একটি চাপ থাকে। তাছাড়া বিল দেরিতে পরিশোধ করলে, মাসিক, অর্ধবার্ষিক বা বার্ষিক হারে সুদ বা চার্জ প্রদান করতে হয়, যেটা বোঝা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
ডেবিট কার্ড: যে কার্ডে নিজের টাকা দিয়ে কেনাকাটা করা হয় সেটাই ডেবিট কার্ড। সাধারণত ব্যক্তিগত সেভিংস বা কারেন্ট অ্যাকাউন্টে এই কার্ড দেওয়া হয়। ডেবিট কার্ড দিয়ে কেনাকাটা করলে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে সঙ্গে সঙ্গেই টাকা কেটে নেওয়া হয়। তাছাড়া ডেবিট কার্ডে কেনাকাটার পাশাপাশি এটিএম থেকে টাকাও তোলা যায়।
ডেবিট কার্ডের সুবিধা-অসুবিধা: ডেবিট কার্ড ব্যবহারে কখনও ঋণের ঝামেলায় পড়তে হয় না। কারণ অ্যাকাউন্টে যত টাকা আছে তার বেশি খরচ করাই যাবে না। ফলে অতিরিক্ত ব্যয় থেকে বাঁচা যায়।
কিন্তু অসুবিধা হল, সব সময় নিজের অ্যাকাউন্টের উপর শ্যেন দৃষ্টি রাখতে হয়। নাহলে গ্রাহক নিজেই নিজের অ্যাকাউন্টে ওভারড্রাফট করে ফেলতে পারেন। আর একটা অসুবিধা হল, খুব কম ডেবিট কার্ডেই রিওয়ার্ড পয়েন্টের সুবিধা পাওয়া যায়।
চার্জ কার্ড: অনেকেই ক্রেডিট কার্ডের সঙ্গে চার্জ কার্ডকে গুলিয়ে ফেলেন। কারণ এক্সার্জ কার্ডেও ধার পাওয়া যায় যা মাসের শেষে পরিশোধ করতে হয়। কিছু চার্জ কার্ডে বার্ষিক সদস্য ফি-ও থাকে। চার্জ কার্ড সাধারণত আমেরিকান এক্সপ্রেসের সঙ্গে যুক্ত। অনেক বিপণন সংস্থা নিজেদের চার্জ কার্ড ইস্যু করে যা কেবল তাদের দোকানেই ব্যবহার করা যায়।
চার্জ কার্ডের সুবিধা-অসুবিধা: চার্জ কার্ডে কেনাকাটার জন্য নগদের দরকার নেই। ঘাড়ের উপর বিশাল অঙ্কের সুদের বোঝাও থাকে না। চার্জ কার্ডে দুর্দান্ত ক্যাশব্যাক অফার থাকে। যা ক্রেডিট কার্ডের থেকে অনেক বেশি। সঙ্গে পাওয়া যায় ফ্রি পরিষেবার সুবিধা। যেমন বিমানবন্দরে বিনামূল্যে খাবার।
কিছু চার্জ কার্ডে বার্ষিক ফি-র হার খুব বেশি। ফলে সুযোগসুবিধাগুলি নগণ্য মনে হতে পারে। তবে সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হল, চার্জ কার্ডে বিশাল অঙ্কের ঋণ হয়ে যেতে পারে, যা শোধ করা মুশকিল হতে পারে।
কোন কার্ড ব্যবহার সুবিধাজনক: অধিকাংশ মানুষই ঋণের কারণে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করতে চান না। এক্ষেত্রে ডেবিট কার্ডই সেরা পছন্দ। তবে বিশেষজ্ঞরা বলেন, প্রত্যেকের অন্তত একটা ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করা উচিত। এতে ইতিবাচক ক্রেডিট রিপোর্ট তৈরির সুযোগ থাকে। তাছাড়া ক্যাশব্যাক এবং রিওয়ার্ড পয়েন্টের সুবিধাও থাকে। আর যদি ক্রেডিট কার্ডের বিল শোধে কারও অসাধারণ রেকর্ড থাকে তাহলে তাঁর জন্য চার্জ কার্ড সবচেয়ে ভাল। তবে যদি কার্ড ব্যবহারের অভিজ্ঞতা না থাকে তাহলে ভাল ক্রেডিট রেকর্ড তৈরির জন্য ডেবিট কার্ড ব্যবহারই বুদ্ধিমানের কাজ।
Keywords:
Original Link: https://www.zdnet.com/article/personal-finance-101-charge-card-vs-credit-card-vs-debit-card/
Written By: Koushik Bhattacharya
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Credit Card, Debit Card