১৩টি বিমানসংস্থায় তালা, ধুঁকছে দেশের বিমান পরিষেবা! বেহাল দশার কথা খুবই চিন্তার

Last Updated:

গত দুই দশকে ভারতের ১৩টি বিমান সংস্থায় তালা ঝুলেছে।

দেশের বিমান পরিষেবা
দেশের বিমান পরিষেবা
#নয়াদিল্লি: ভারতের বিমান পরিবহণ শিল্পের (Aviation Industry) বাজারের বিকাশ দ্রুতই ঘটছে। আর আগামী ২০ বছরের মধ্যে এই ক্ষেত্রে দ্রুততম উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় স্থান পাবে আমাদের দেশ। এমনটাই মনে করে বোয়িং (Boeing)। তাদের মতে, আসলে এখানে নতুন নতুন বিমানবন্দর (Airport) খোলার পাশাপাশি মানুষের আর্থিক অবস্থানের স্তরেও পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। কারণ মানুষ ধীরে ধীরে মধ্যবিত্ত এবং উচ্চমধ্যবিত্ত হয়ে উঠছে। শুধু তা-ই নয়, আবার ও-দিকে ভারতীয় রেলের পরিকাঠামো অনেকটাই পুরনো হয়ে গিয়েছে। ফলে এই সব কারণেই ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলি লাভের মুখ দেখতে চলেছে।
বোয়িংয়ের এই মত থাকলেও বাস্তব কিন্তু এর সম্পূর্ণ উল্টো। আমরা কম-বেশি প্রায় সকলেই জানি যে, গত দুই দশকে ভারতের ১৩টি বিমান সংস্থায় তালা ঝুলেছে। এই তালিকায় রয়েছে জেট এয়ারওয়েজ (Jet Airways) এবং কিংফিশার এয়ারলাইন (Kingfisher Airlines)-এর মতো বড়সড় বিমান সংস্থা। শুধু তা-ই নয়, বন্ধ হয়েছে এয়ার কার্নিভ্যাল (Air Carnival) এবং এয়ার পেগাসাস (Air Pegasus) ইত্যাদির মতো ছোটখাটো এয়ারলাইনসও। তবে এই তালিকা আরও লম্বা হবে যদি তাতে বন্ধ হয়ে যাওয়া কার্গো বিমান সংস্থাগুলিকেও ধরা হয়।
advertisement
আরও পড়ুন: পাখির চোখ পঞ্চায়েত, আজ নেতাজি ইন্ডোরে মেগা সমাবেশ! নজর বিরোধীদেরও
আবার ২০২০ সালের গোড়ার দিকে শুরু হয় করোনা মহামারী তাণ্ডব। প্রায় দুই বছর ধরে চলা করোনা পরিস্থিতিতে অনেক বিমান সংস্থা (Airlines) টিকে গিয়েছে। তবে ক্ষতিও হয়েছে যথেচ্ছ। যেমন ধরা যাক ট্রুজেট (TruJet)-এর কথা। ওই সংস্থা বারবার ঘোষণা করেছিল যে, তারা তাদের পরিষেবা আবার শুরু করতে চলেছে। কিন্তু তা বাস্তবে আর ফলেনি। এখানেই শেষ নয়, গো ফার্স্ট (Go FIRST)-এর আইপিও অতিমারীর সময় থেকেই বাজার থেকে উধাও হয়ে গিয়েছে। এ-ছাড়াও করোনা কালে প্রতি ত্রৈমাসিকেই স্পাইসজেট (SpiceJet) বিমান সংস্থার মধ্যে অস্থিরতা দেখা যায়।
advertisement
advertisement
আরও পড়ুন: এক ডায়েরির সূত্রেই উঠে আসে মলয়ের নাম, মারাত্মক অভিযোগ তুলল সিবিআই
ফলে বোঝাই যাচ্ছে যে, অনুমান বা ভবিষ্যদ্বাণী এবং বাস্তবের মধ্যে ফারাক বিস্তর। কিন্তু কেন ভারতে বিমানসংস্থাগুলির সমাধি ঘটছে।
বাজারের অবস্থা খারাপ, খরচ চালাতে হিমশিম দশা:
ভারতে এখন লো-কস্ট ক্যারিয়ার (LCC) এবং ফুল সার্ভিস ক্যারিয়ার (FSC)-এর বিভাজনের অনুপাত ৮০:২০। সারা বিশ্বে আনুষঙ্গিক বিমানবন্দরগুলিতে কম খরচে যাতায়াত করে এলসিসি-গুলি। আর এ-ভাবেই টাকা আয় করে তারা। গ্লোবাল ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম বা জিডিএস (GDS)-এ অথবা ট্রাভেল এজেন্টের মাধ্যমে বিক্রি এড়িয়েই চলে তারা। বরং তারা নিজেদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সরাসরি টিকিট বিক্রি করে। কিন্তু ভারতে বিমান পরিবহণ শিল্পের বাজার দেখলেই বোঝা যাবে যে, বাজারের পরিস্থিতি কতটা আলাদা। গোটা দেশের কোনও শহরেই দ্বিতীয় কোনও বিমানবন্দর নেই। ফলে মুখ্য এবং গৌণ স্টেটাসের তো প্রশ্নই ওঠে না। আর এর অর্থ হল, সমস্ত এয়ারলাইনসের খরচ একই।
advertisement
ভারতে এখনও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ট্রাভেল এজেন্ট এবং ওটিএ (OTA) বা অনলাইন ট্রাভেল এজেন্ট (Online Travel Agents)-এর মাধ্যমে টিকিট বুকিং হয়ে থাকে। অথচ বিমান সংস্থাগুলি বরাবরই চেষ্টা করছে, যাতে যাত্রীরা এয়ারলাইন ওয়েবসাইট এবং মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমেই বুকিং করেন। গৌণ কোনও চ্যানেলের মাধ্যমে প্রতি বার বুকিং করার ক্ষেত্রে একটা কমিশন দিতে হয়। আর এর ফলে বিমান সংস্থার খুবই অল্প লাভের রাস্তাই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
advertisement
কম ব্যবহার
আহমেদাবাদ এবং মুম্বই রুটে চলাচলকারী উড়ান রওনা হওয়ার আগের দিনই মাত্র ১ হাজারের কিছু বেশি টাকায় বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। সরকার এবং বিমানবন্দর অপারেটরদের হাতে যে চার্জটা চলে যাচ্ছে, সেটা বাদ দিয়ে যে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা থাকছে, সেটাই শুধুমাত্র লাভ করতে পারে বিমান সংস্থাগুলি। এমনকী অন্যান্য সেক্টরের ক্ষেত্রেও এই গল্পটা একই রকম। আবার অন্য দিকে, একচেটিয়া রুটগুলির ভাড়া কিন্তু দ্রুতই বাড়ছে। যার ফলে ওই সব রুটের যাত্রীরা যাতায়াতের অন্য মাধ্যম বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছেন। যার অর্থ হল, ভারসাম্যটাই পুরোপুরি নষ্ট হচ্ছে।
advertisement
খরচ চালাতে লিজ দেওয়া:
দুর্দান্ত ব্যালেন্স শিটের অনুপস্থিতিতে, ভারতের বেশির ভাগ বিমান সংস্থাই সরাসরি ক্রয়ের পরিবর্তে সম্পত্তি ইজারা দেওয়ার বিকল্প বেছে নিয়েছে। আসলে তাদের হাতে উভয় বিকল্পেরই সুবিধা রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, জেট এয়ারওয়েজ নিজেদের মালিকানাধীন বিমান কিছু সময়ের জন্য লিজ দিয়েছিল। কারণ তাদের নিজেদের টিকিয়ে রাখার জন্য অর্থের প্রয়োজন ছিল।
advertisement
২০০৬ সালে যখন ইন্ডিগো নিজেদের অপারেশন শুরু করেছিল, তখন তাদের এক ডলার কেনার জন্য ৪৫.৬ টাকা খরচ করতে হত। কিন্তু ১৬ বছর পরে সেই এক ডলারেরই দাম হয়ে দাঁড়িয়েছে ৭৯.৮৪ টাকা। আর এর জন্য তাদের ভাড়া বাড়ানো উচিত ছিল, কিন্তু গত দশকের শেষ দিক থেকে তারা এই বিষয়ে তেমন কোনও পদক্ষেপ করেনি।
অ্যাক্সেস টু ফান্ডিং:
কিংফিশার এয়ারলাইনস এবং জেট এয়ারওয়েজের থেকে অভিজ্ঞতা থেকে বোঝা যায় যে, অ্যাক্সেস টু ফান্ডিং বিমান সংস্থাগুলির জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যাত্রী সংখ্যার দিক থেকে দেখতে গেলে দেখা যাবে যে, এই ইন্ডাস্ট্রির বিকাশ ক্রমবর্ধমান। কিন্তু লাভের দিক থেকে দেখতে গেলে বিষয়টা ততটাও ইতিবাচক হবে না। কারণ সে-দিক থেকে দেখলে বোঝা যাবে যে, মুনাফা তেমন হয়নি।
আশা:
এর মধ্যেও কিছুটা হলেও আশার আলো দেখিয়েছে কয়েকটা বিষয়। যার মধ্যে অন্যতম হল গত দশকে ফ্লাইট ট্রেনিং অর্গানাইজেশন গড়ে তোলা, জিআইএফটি (GIFT) সিটিতে লিজিং সেট-আপ, বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ এবং আরসিএস-ইউডিএএন রুটের জন্য ভর্তুকি প্রদানকারী বিমান সংস্থা ইত্যাদি-সহ নানা সিদ্ধান্ত।
view comments
বাংলা খবর/ খবর/ব্যবসা-বাণিজ্য/
১৩টি বিমানসংস্থায় তালা, ধুঁকছে দেশের বিমান পরিষেবা! বেহাল দশার কথা খুবই চিন্তার
Next Article
advertisement
Rhino rescue: বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
  • ১৩ দিনের অপারেশন রাইনোতে ১০টি গন্ডার উদ্ধার করেছেন বনকর্মীরা

  • বিপর্যয়ের সময় জলদাপাড়া থেকে ভেসে গিয়েছিল বেশ কয়েকটি গন্ডার

  • অক্লান্ত পরিশ্রমের পর বনকর্মীরা গন্ডারগুলোকে জঙ্গলে ফেরাতে সক্ষম হন

VIEW MORE
advertisement
advertisement