Bankura: বাঁকুড়ার হ্যামেলিনের বাঁশিওয়ালার জাদুতে মেতেছে শহরবাসী
- Published by:Soumabrata Ghosh
Last Updated:
অন্ধ কানাই পথের ধারে গান শুনিয়ে ভিক্ষে করে তবে তিনি গান গান না তিনি বাঁশির সুরে মজিয়ে রাখেন সকলকে। ছোটোবেলায় হ্যামেলিনের বাঁশিওয়ালার গল্প পড়েননি এমন মানুষের সংখ্যা খুবই কম।
#বাঁকুড়া : অন্ধ কানাই পথের ধারে গান শুনিয়ে ভিক্ষে করে তবে তিনি গান গান না তিনি বাঁশির সুরে মজিয়ে রাখেন সকলকে। ছোটোবেলায় হ্যামেলিনের বাঁশিওয়ালার গল্প পড়েননি এমন মানুষের সংখ্যা খুবই কম। তবে আজকের বাঁশিওয়ালা সম্পূর্ণ এক আলাদা চরিত্র। তার কাছে পৃথিবীর রঙ কালো অন্ধকারে অন্ধকারাচ্ছন্ন। তিনি কখনও দেখেননি নিজের সহধর্মিনী এবং তার সন্তানদের মুখ। কারণ জন্ম থেকেই যে তিনি অন্ধ৷ তবে ছোট থেকেই হার না মেনে বিভিন্ন প্রতিকূলতাকে জয় করে প্রতিদিন জীবন যুদ্ধের লড়াই করে চলেছেন অবিরাম। বাঁকুড়া-২ ব্লকের নন্দাডিহি গ্রামের বাসিন্দা বিপ্লব পাত্র। তার বাঁশি যেনো তাকে তার অন্ধকার জগৎ থেকে আরেক অন্য জগতের পথ দেখিয়েছে। শুধু গ্রাম নয় শহরবাসীর কাছেও বাঁশিওয়ালা নামেই পরিচিত হয়েছেন তিনি। অন্যের দয়ার পাত্র হয়ে বেঁচে থাকা তার পক্ষে সম্ভব নয় তাই হাতে তুলে নিয়েছেন বাঁশি আর সেই বাঁশির জাদুতেই মাতিয়েছেন শহরবাসীকে।
প্রথমে রেডিওতে রাষ্ট্রীয় প্রসারন অনুষ্ঠান শুনতে থাকেন প্রায় দু বছর ধরে। তারপর কলকাতা সহ বিভিন্ন জায়গায় শেখেন সুর। তারপর এক বন্ধুর সাহায্যে প্রথম ছাতার বাটের তৈরি করেন বাশি। ধীরে ধীরে বাঁকুড়ায় হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা হয়ে উঠেছেন তিনি৷ কখনও ছাত্রদের বাড়িতে গিয়ে বাঁশি শেখান, আবার কখনও শহরের ব্যস্ততম মোড়গুলিতে দাঁড়িয়ে তার সমস্ত দুঃখ-কষ্ট বেদনা ফুটিয়ে তুলেন বাঁশির জাদুতে। ঝড় তোলেন সূরের মূর্চ্ছনার৷ এভাবেই বাঁশিকে আশ্রয় করে দৈনন্দিন সংসার খরচ চালিয়ে এক ছেলে ও দুই মেয়েকে পড়াশুনা করাচ্ছেন৷
advertisement
আরও পড়ুনঃ মল্লভূমের মাটিতে গড়াল রথের চাকা
advertisement
তার এক মেয়ে পড়ে দ্বাদশ শ্রেণীতে , আরেক মেয়ে দশম শ্রেণীতে এবং ছেলে পড়ে চতুর্থ শ্রেণীতে। বড় মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন অন্যত্র। তবে এখন রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে কিছু ভাতা সাহায্য পান তিনি। ১৮২৪ সালের জার্মানির লোয়ার স্যাক্সনির হ্যামিলন শহরের ‘দুষ্টু’ ওই বাঁশিওয়ালার সঙ্গে সুর ছাড়া আর কোন মিলই খুঁজে পাবেন না বিপ্লব পাত্রের। কারণ, বিপ্লব ‘দুষ্টু’ লোক নন৷ তাই জন্মান্ধ এই মানুষটির বাঁশির সুরের মূচ্ছর্নার টানে মজেছে সকলেই।
advertisement
আরও পড়ুনঃ মর্মান্তিক ঘটনা! বিদ্যুৎ দপ্তরের উদাসীনতায় বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে প্রাণ গেল দুই গ্রামবাসীর
তাই প্রতিদিন সকালেই জীবন জীবিকার স্বার্থে বাড়ি থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে সখের বাঁশি হাতে বাঁকুড়া শহরে পৌঁছে যান তিনি। বেলা যত গড়ায় তার সুর শুনতে মানুষের ভিড়ও ততই বাড়ে মোড়ে মোড়ে৷ যে যার মতো করে সাহায্য করে যান তাকে। তবে সকলের দেওয়া প্রাপ্য তিনি হাসি মুখে গ্রহণ করে আবার বাঁশি বাজাতে চলে যান অন্যত্র।
advertisement
Joyjiban Goswami
Location :
First Published :
July 02, 2022 6:35 PM IST