হোম /খবর /জ্যোতিষকাহন /
রাধার পিতৃগৃহে যাত্রা থেকে পার্বতীর স্বামীসঙ্গ, শ্রাবণ তৃতীয়ার পুণ্যকথা জানুন

Hariyali Teej 2021: রাধার পিতৃগৃহে যাত্রা থেকে পার্বতীর স্বামীসঙ্গ, শ্রাবণ তৃতীয়ার পুণ্যকথা আপ্লুত করবে

বাদলধারা যেহেতু পরিবেশে শ্যামলিমা সঞ্চার করে, সেই অনুষঙ্গে উৎসবটি পেয়েছে হরিয়ালি তীজ নাম!

  • Share this:

Hariyali Teej 2021: তীজ শব্দটি এসেছে সংস্কৃত তৃতীয়া থেকে। তৃতীয়া তিথিতে উদযাপিত হয় যে উৎসব, তাকেই বলা হয় তীজ। এই পরিভাষাটি রাজস্থানি, পঞ্জাবে একেই বলা হয় তিয়ান। মনোমত স্বামীলাভের জন্য অবিবাহিতারা যেমন এই ব্রত পালন করে থাকেন, তেমনই আবার বিবাহিতারাও এই ব্রত পালন করেন স্বামীর দীর্ঘায়ু এবং সার্বিক মঙ্গলকামনায়। বছরে বেশ কয়েকবার এই ব্রত পালন করা হয়ে থাকে, তার মধ্যে শ্রাবণ মাসের শুক্লপক্ষের তীজ সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ।

শ্রাবণ মাসের তাৎপর্যে এই উৎসবকে শ্রাবণ তীজ নামেও অভিহিত করা হয়ে থাকে। গ্রীষ্মের তপ্ত আবহাওয়ার পরে বর্ষার জলধারা পৃথিবী এবং তার অধিবাসীদের কাছে যেন মধুর মতোই রমণীয়, এই দিক থেকে উৎসবটি মধুস্রবা তীজ নামেও সুপরিচিত। আবার সৌভাগ্যের লক্ষণ হিসাবে এই দিনে বিবাহিতারা ষোলটি শৃঙ্গারের সাজধারণ করেন, সেই কথা মাথায় রেখে একে শৃঙ্গার তীজ নামেও ডাকা হয়ে থাকে। বাদলধারা যেহেতু পরিবেশে শ্যামলিমা সঞ্চার করে, সেই অনুষঙ্গে উৎসবটি পেয়েছে হরিয়ালি তীজ নাম!

চলতি বছরে হরিয়ালি তীজ উদযাপিত হবে ১১ অগাস্ট তারিখে। এছাড়াও কাজরি তীজও গুরুত্বপূর্ণ, যা চলতি বছরের ২৫ অগাস্ট উদযাপিত হবে। হরিয়ালি তীজ, অর্থাৎ ১১ অগাস্ট সূর্যোদয় হবে সকাল ৬টা ০৫ মিনিটে, সূর্য অস্ত যাবে সন্ধ্যা ৬টা ৫৮ মিনিটে। যদিও তৃতীয়া তিথি শুরু হয়ে যাচ্ছে ১০ অগাস্ট সন্ধ্যা ৬টা ০৬ মিনিট থেকে, থাকবে ১১ অগাস্ট বিকেল ৪টে ৫৪ মিনিট পর্যন্ত। তবে চাঁদ উঠলে তাকে দেখে তবেই উপবাস তথা ব্রত ভঙ্গ করা যাবে।

বলা হয়, এই হরিয়ালি তীজ তিথিতেই সালঙ্কারা পার্বতীকে বধূরূপে স্বাগত জানিয়েছিলেন ভগবান শিব, সার্থক হয়েছিল তাঁর দেবাদিদেবকে পতিরূপে লাভ করার তপস্যা। এই কারণেই বিবাহিতা এবং অবিবাহিতা রমণীরা হরিয়ালি তীজ ব্রত পালন করেন। সালঙ্কারা দেবীর মতো সৌভাগ্যলাভের বাসনায় বিবাহিতারা ষোল শৃঙ্গারে সাজিয়ে তোলেন নিজেদের। এই দিন তাঁরা বিশেষ ভাবে পূজা দেন তীজ মাতার, তিথির আনুষঙ্গে এই নামে রাজস্থানে পরিচিতি পান দেবী পার্বতী। হরগৌরীর বিয়ের গানে, পূজায় আনন্দমুখর রূপধারণ করে হরিয়ালি তীজ।

আবার, হরিয়ালি তীজের সঙ্গে যুক্ত হয়ে গিয়েছে রাধারও নাম। শ্রাবণ মাসে বিবাহিতাদের পিতৃগৃহে যাত্রার রেওয়াজ আছে। বলা হয়, এই সময়ে আয়ান ঘোষের স্ত্রীও বরসনায় তাঁর পিতা বৃষভানু রাজার প্রাসাদে কয়েকটা দিন কাটিয়ে আসতেন। স্বামী, শাশুড়ি, ননদের দৃষ্টি এড়িয়ে যাতে তিনি কৃষ্ণের সঙ্গে কয়েকটা দিন নির্বিঘ্নে কাটাতে পারেন, তার জন্য বাড়ির বাগানে সখীরা দোলনা বেঁধে দিতেন। রাধা-কৃষ্ণের এই অভিসার থেকেই শ্রাবণের শুক্লপক্ষের তৃতীয়া তিথিতে উদযাপিত হয় ঝুলন উৎসব। এর সাযুজ্যে আজও বটবৃক্ষের ডালে দোলনা বাঁধেন বিবাহিতারা, বটবৃক্ষের পূজাদানে সার্থক হয় তাঁদের নির্জলা উপবাসের হরিয়ালি তীজ তিথি।

করবা চৌথের মতো হরিয়ালি তীজেও সারা দিন থাকতে হয় নির্জলা উপবাসে, সন্ধ্যার পর ষোল শৃঙ্গারে সেজে চাঁদ দেখে ব্রত ভঙ্গ করা হয়। এই ষোল শৃঙ্গারের মধ্যে বর্ষাজাত শ্যামলিমার অনুষঙ্গে হাতে এবং পায়ে মেহন্দির সাজধারণ অবশ্য পালনীয়। বলা হয়, যে নারীর স্বামীসৌভাগ্য যত বেশি, তাঁর মেহন্দির রঙও তত গাঢ় হয়ে ধরা দেয় হরিয়ালি তীজের তিথিতে।

Published by:Ananya Chakraborty
First published:

Tags: Hariyali Teej