#আলিপুরদুয়ার: শ্রমিক বিক্ষোভ আর নয়।এবারে নতুন পথ খুঁজে নিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে চাইছে কালচিনি চা বাগান। লক্ষ্য ধুকতে থাকা বাগানের অর্থনীতিকে মজবুত করা। যার জন্য হোয়াইট টি-র প্রোডাকশন শুরু করেছে কালচিনি চা বাগান। বক্সা ডুয়ার্স কোম্পানি টি কোম্পানির কালচিনি চা বাগান ডুয়ার্সের অন্যতম পুরোনো চা বাগান। এই বাগানটি রুগ্ন চা বাগান। শ্রমিকদের অভাব অভিযোগ সবসময় লেগে রয়েছে বাগান কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এর মাঝেও বাগানে কাজের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে ও অর্থনীতিকে মজবুত করতে শুরু হয়েছে হোয়াইট টি প্রোডাকশন।দুটি পাতা একটি কুড়ির বাগানে কুড়ি আলাদা করে তা শুকিয়ে তৈরি হচ্ছে হোয়াইট টি। যা স্বাদ ও গন্ধে অতুলনীয়।খোলা বাজারে এই চা বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ছয় থেকে সাত হাজার টাকায়।
কীভাবে তৈরি হয় হোয়াইট টি--
চায়ের বিজ্ঞানসম্মত নাম ‘ক্যামেলিয়া সাইনেনসিস’। হোয়াইট টি উৎপাদনের জন্য গাছ ছোট থাকা অবস্থায় বা বেড়ে ওঠার সময়, গাছের কুঁড়ি তুলে নেওয়া হয়। কখনও কখনও কুঁড়ির সঙ্গে কচি লম্বা পাতাও তোলা হয়। চা ফুলের কুঁড়ি ও পাতা তোলার পদ্ধতির উপরেও সাদা চায়ের গুণমান অনেকখানি নির্ভর করে বলে কিছু কিছু বিশেষজ্ঞের দাবি। কিছু কিছু চা উৎপাদক অঞ্চলে কুঁড়ি ছাড়াও শুধুই পাতা তোলা হয় সাদা চা উৎপাদনের জন্য। সাধারণত সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৫০০০-৬৫০০ ফুট উচ্চতায় সাদা চায়ের চাষ হয়। পাহাড়ি প্রদেশের কঠোর এবং শীতল বাতাস চা পাতায় স্বাদ গন্ধবৃদ্ধিকারক উপাদান ঘনীভূত করতে সাহায্য করে।
কিন্তু কালচিনি চা বাগানে পরীক্ষামুলকভাবে শুরু হয়েছে হোয়াইট টি উৎপাদন। ম্যানেজার বাংলোর পাশে একটি ঘরে চারটি সেকশন তৈরি করে শুরু হয়েছে চায়ের উৎপাদন। এই চা উৎপাদনের জন্য ঠান্ডা আবহাওয়ার দরকার হয়,যার জন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ম্যানেজার জীতু সইকিয়া জানিয়েছেন,শীতের শুরুতে উৎপাদন শুরু করেছিলাম। সাড়া ভালো পেয়েছি। দুটি পাতার থেকে কুঁড়ি বের করে তা আটচল্লিশ ঘণ্টা শুকিয়ে প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি হচ্ছে চা পাতা। হ্যান্ডরোল পদ্ধতিতে চা পাতা তৈরি করা যায়।তবে এই বাগানে এখনও সেই পদ্ধতি শুরু হয়নি।শ্রমিকরা যত্ন সহকারে চা উৎপাদনের কাজ করছে।এই দেখে ভাল লাগছে।গরমজলে খুব অল্প পরিমাণে চা পাতা দিয়ে এরপর তা ঢেকে দিতে হয়।পনেরো মিনিটি পর ঢাকনা খুললেই দেখা যাবে হরিদ্রাভ রঙের হোয়াইট টি।
হোয়াইট টি-র গুণ-
সাদা চায়ে রয়েছে পলিফেনল গোত্রের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যাটেচিন। মূলত উদ্ভিদেই মেলে এই ধরনের শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। ফলে সাদা চা পান করলে শরীর হয়ে ওঠে নীরোগ। এক স্টাডিতে দেখা গিয়েছে, হোয়াইট-এর নির্যাস কিছুটা হলেও কোলন ক্যান্সারের বৃদ্ধি প্রতিরোধ করতে পারে।শরীরে এলডিএল বা খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে পারে সাদা চা।টাইপ টু ডায়াবেটিসের দু’টি ধরন আছে। প্রথমত শরীরে যথেষ্ট মাত্রায় ইনসুলিন তৈরি হয় না। দ্বিতীয়ত, ইনসুলিন তৈরি হলেই শরীরের রেজিস্ট্যান্সের কারণে ইনসুলিন সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। কিছু সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স কমাতে পারে সাদা চা। ফলে রক্তে সুগার নিয়ন্ত্রণ সহজ হয়।
Annanya Dey
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Alipurduar news, Tea, White Tea